Advertisement
০৭ মে ২০২৪

হলদিয়া নিয়ে বৈঠক জেটলির, আমন্ত্রণ মমতাকে

আমদানি শুল্ক নিয়ে হলদিয়া পেট্রোকেমের চলতি সমস্যা মেটাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরামর্শে আগামী মাসে জরুরি বৈঠক ডাকলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

জয়ন্ত ঘোষাল
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৫ ০৩:২১
Share: Save:

আমদানি শুল্ক নিয়ে হলদিয়া পেট্রোকেমের চলতি সমস্যা মেটাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরামর্শে আগামী মাসে জরুরি বৈঠক ডাকলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে খবর, জেটলি ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছেন।

সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে ২১ জুলাই। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে গত চার বছরে প্রতিবারই অধিবেশন চলাকালীন এক বার দিল্লি আসেন মমতা। সংসদের সেন্ট্রাল হলে কিছু ক্ষণ সময় কাটান। এ বারও অগস্টের গোড়ায় তিনি দিল্লি আসতে পারেন। জেটলির প্রস্তাব, মমতা দিল্লি এলে তখনই বৈঠক করা যেতে পারে। বৈঠকে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, কেন্দ্রীয় অর্থসচিব রাজীব মিশ্র, বৈদেশিক বাণিজ্য অধিকর্তা (ডিজিএফটি), রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের প্রধান এবং হলদিয়া পেট্রোকেমের প্রতিনিধিরা থাকবেন।

রফতানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না-পারায় হলদিয়া পেট্রোকেমের কাছ থেকে ২৭০০ কোটি টাকা আমদানি শুল্ক দাবি করেছে কলকাতা কাস্টমস। বৈদেশিক বাণিজ্য উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে নির্দিষ্ট পরিমাণ উৎপাদিত পণ্য রফতানির আশ্বাসের ভিত্তিতে বিনা শুল্কে কাঁচামাল আমদানি করা যায়। হলদিয়া পেট্রোকেম তেমনই আশ্বাস দিয়ে বিদেশ থেকে ন্যাপথা আমদানি করেছিল। কিন্তু সংস্থার বেহাল আর্থিক অবস্থা এবং বাজারে চাহিদার অভাবের কারণে ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে পলিমার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি তারা। আর তার জেরেই আমদানি শুল্ক ও জরিমানা মিলিয়ে প্রায় ২৭০০ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট কমিটি কর ছাড়ের আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পরে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।

শেয়ার হস্তান্তর নিয়ে রাজ্যে সরকারের সঙ্গে পূর্ণেন্দু চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর সমঝোতার পরে চলতি বছরের গোড়া থেকে ক্রমশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে হলদিয়া পেট্রোকেম। ফের পুরোমাত্রায় পলিমার উৎপাদন শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় আমদানি শুল্কের বিপুল আর্থিক দায় ঘাড়ে চাপলে সংস্থার অস্তিত্বের সঙ্কট তৈরি হবে। তা ছাড়া, নতুন করে ব্যাঙ্ক ঋণ পাওয়ার বিষয়টিও এর সঙ্গে জড়িত। কারণ, শেয়ার হস্তান্তরের পরেই ঋণ পাওয়া যাবে। আর শুল্ক সংক্রান্তসমস্যা না-মেটা পর্যন্ত শেয়ার হস্তান্তর সম্ভব নয়।

শুল্ক সংক্রান্ত সমস্যার দায় কার, তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম এবং চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকারের অভিযোগ, হলদিয়া কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে বকেয়া মেটায়নি। তাই এই সঙ্কট। তবে এই অভিযোগ সত্ত্বেও চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়ে সমস্যা সমাধানে আগ্রহী রাজ্য সরকার। তাদের মতে, পাওনাগণ্ডা নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছনোর জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনায় বসা দরকার। পেট্রোকেম কর্তৃপক্ষ চাইছেন, ২৭০০ কোটি টাকা বকেয়ার মধ্যে ১৩০০ কোটি টাকা জরিমানা মকুব হোক। পাশাপাশি বাকি টাকা শোধ করার সময়সীমা বৃদ্ধি করা হোক।

হলদিয়া পেট্রোকেমের সমস্যা সমাধানের জন্য মমতা আগেও জেটলিকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আজ বলেন, ‘‘গোটা পশ্চিমবঙ্গের জন্য হলদিয়ার প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ। হলদিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হলে রাজ্যের উন্নয়নে বাধা পড়বে। দেশের পক্ষেও সেটা ভাল নয়। তাই আমরাও চাই এই বিষয়টির সমাধান হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE