কোচবিহারে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে হামলার প্রসঙ্গ টেনে বাংলায় আইন-শৃঙ্খলা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে অভিযোগে সরব হলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। রাজ্য পুলিশের উপস্থিতিতে তৃণমূলের দুষ্কৃতী বাহিনী এমন হামলা চালিয়েছে, সেটা আরও উদ্বেগজনক। এতেই বোঝা যাচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে বাংলায় আইনশৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়েছে। শুধু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির উপরে হামলা নয়, এই ঘটনা গণতন্ত্রের উপরে আক্রমণ।’’ অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা ধারাবাহিক ভাবে প্ররোচনা দিচ্ছেন। তাতেই কিছু মানুষ উত্তেজিত হয়ে ছিলেন। তার পরে ওদের লোকেদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়েছে। বিজেপির লোকেরাই গাড়ি ভেঙে নাটক করছে।’’ যদিও এ দিনই হামলায় অভিযুক্তের তালিকায় নাম দেওয়া নিয়ে এক বিজেপি নেতাকে ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছেতৃণমূলের বিরুদ্ধে।
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে, দলীয় কর্মসূচিতে বাংলায় আসা নড্ডার কনভয়েও হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সে প্রেক্ষিতে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই অরাজকতা এবং রাজনৈতিক হিংসার সংস্কৃতিকে লালন-পালন করার দায় মমতাকেই নিতে হবে।’’ কুণাল পাল্টা বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় প্রচারে গিয়ে বার বার বিজেপির হাতে আক্রান্ত হয়েছে তৃণমূল। অভিষেকের উপরেও হামলার চেষ্টা হয়েছে। নড্ডা তখন কোথায় ছিলেন?’’ শুভেন্দুর উপরে হামলার ঘটনার তদন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলকে দিয়ে করানো ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে তথ্যসন্ধানী দলকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠানোর জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য।
সমাজমাধ্যমে এ দিন একটি ‘অডিয়ো ক্লিপ’ দেন শুভেন্দু। বিজেপির দাবি, কনভয়ে হামলায় ঘটনায় ৪১ জনের নামে অভিযোগ করা হয়েছে। কেন তাঁর নাম ওই তালিকায় দেওয়া হয়েছে, সেই আক্রোশে বুধবার রাতে কোচবিহারের ঘোকসাডাঙার তৃণমূল নেতা ধরণীকান্ত বর্মণ ফোনে বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত বর্মণকে হুমকি দিয়েছেন। ‘অডিয়ো ক্লিপ’টিতে (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) দু’জনের কথোপকথন রয়েছে। প্রশান্ত পুলিশে অভিযোগ করেছেন। ধরণীকান্তের দাবি, ‘মিথ্যা’ অভিযোগে বিজেপি তাঁকে ফাঁসাতে চাইছে।
গত ৫ অগস্ট খাগড়াবাড়িতে শুভেন্দুুর কনভয়ে হামলা হয়। দু’টি গাড়ি ভাঙা হয়। বিজেপির তরফে দায়ের করা অভিযোগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ-সহ ৪১ জনের নাম রয়েছে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ বর্মণ বলেন, “হুমকি দেওয়া তৃণমূলের সংস্কৃতি। প্রশান্ত বর্মণের পাশে রয়েছি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের পাল্টা, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জমানায় গলার স্বর নকল করা যায়। শুভেন্দু অধিকারীর পোস্ট নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।” কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণগোপাল মিনা বলেন, “সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)