২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভোলবদল বীরভূম জেলা প্রশাসনের!
দলীয় কাজে রাজ্যে আসা বিজেপি-র মন্ত্রী, সাংসদদের সরকারি অতিথিশালায় থাকা-খাওয়ার খরচ দেবে না রাজ্য সরকার, এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নবান্ন। উল্টো পথে হেঁটে সিউড়িতে দলের বৈঠকে যোগ দিতে আসা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর সার্কিট হাউসে থাকা-খাওয়ার বিল নেয়নি প্রশাসন। কিন্তু অতিথি ফিরে যাওয়ার এক দিন পরে, সোমবার সকালে বিজেপি নেতৃত্বকে ডেকে বিল ধরানো হয়। ‘উপরতলার চাপে’ জেলা প্রশাসন ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যেতে বাধ্য হয়েছে বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
মন্ত্রীর জন্য সার্কিট হাউসের দু’টি ঘরে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে পর দিন দুপুর ১টা পর্যন্ত থাকা ও খাওয়া বাবদ বিল করা হয়েছে মোট হাজার টাকা। এ দিন দুপুরে সিউড়ির প্রশাসনিক ভবনে বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডলকে খবর পাঠিয়ে তাঁকে বিল দেওয়া হয়। সার্কিট হাউসের ঘরভাড়ার বিলটি (৪০০ টাকার) প্রথমে মন্ত্রীর নামে করা হলেও পরে তা কেটে কালোসোনাবাবুর নাম বসানো হয়েছে। সার্কিট হাউসে খাবারের দায়িত্বে যে কেটারার সংস্থা, তাদের বিলটি আবার মন্ত্রীর নামেই করা হয়েছে।
বিলে কেটে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নাম। নিজস্ব চিত্র
বিল মিটিয়ে কালোসোনাবাবু বলেন, ‘‘যে ভাবে প্রোটোকলের তোয়াক্কা না করে এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সার্কিট হাউসে থাকা-খাওয়ার বিল চাওয়া হল, তা অসম্মানজনক।’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘রবিবার যখন বিলের কথা জানতে চাইলাম, তখন কেন প্রশাসন কিছু দিল না?’’
জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপ, এসএমএসেরও জবাব আসেনি। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সরকারি কাজে আসেননি। তাই নিয়ম অনুযায়ী, সার্কিটহাউসের খরচ চাওয়া হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, বিজেপি সার্কিট হাউস কর্তৃপক্ষ নয়, কেটারার সংস্থার কাছে বিল চেয়েছিল। তারা সে মুহূর্তে কিছু জানাতে পারেনি। কালোসোনাবাবু ঘর বুক করেছিলেন। তাই তাঁকে বিল দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি-র জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের দাবি, ‘‘শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্বের চাপেই এমন করল প্রশাসন। তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা অনেক সময় দলীয় কাজে দিল্লিতে গিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের আতিথেয়তা নেন। কই তখন তো এমন করা হয় না!’’