Advertisement
E-Paper

দূষণ-দাপট থেকে সাময়িক স্বস্তি ‘অসময়ের’ বৃষ্টিতে

চলতি মাসের প্রথম পনেরো দিনের মধ্যে আট দিনই দিল্লিকে পিছনে ফেলে দূষণ-দৌড়ে এগিয়ে ছিল কলকাতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
জল-উচ্ছ্বাস: গাড়ির ভিতর থেকেই বৃষ্টি উপভোগ। সোমবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

জল-উচ্ছ্বাস: গাড়ির ভিতর থেকেই বৃষ্টি উপভোগ। সোমবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

চলতি মাসের প্রথম পনেরো দিনের মধ্যে আট দিনই দিল্লিকে পিছনে ফেলে দূষণ-দৌড়ে এগিয়ে ছিল কলকাতা। মাসের দ্বিতীয়ার্ধেও একই ধারা বজায় ছিল। গত ১৬ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ রবিবার— এই ন’দিনের মধ্যে পাঁচ দিনই দিল্লির থেকে কলকাতার দূষণের মাত্রা বেশি ছিল বলে জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। দূষণ-দৌড়ের সেই ধারাবাহিকতায় ব্যতিক্রম ঘটল সোমবার।

সৌজন্য, ফেব্রুয়ারি মাসের বৃষ্টি। যার ফল, এ দিন অনেকটাই কম ছিল দূষণের মাত্রা।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, গত ছ’বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে শহরে ঝড়-বৃষ্টি এই প্রথম। ফেব্রুয়ারিতে শহরে শেষ ঝড়-বৃষ্টি হয়েছিল ২০১৪-র আগে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাসের কথায়, ‘‘অন্য জেলায় হলেও গত ছ’বছরে ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় কখনও ঝড়বৃষ্টি হয়নি। এ বারই তা হল।’’ আর সেই বৃষ্টিতেই শহরের দূষণের মাত্রা ‘খারাপ’ থেকে ‘মাঝারি’ মান ছুঁয়েছে।

কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার থেকে লাগাতার দিল্লির তুলনায় কলকাতায় দূষণের মাত্রা বেশি ছিল। বাতাসের মান ধারাবাহিক ভাবে ছিল ‘খারাপ’। অর্থাৎ, দূষিত বায়ুতেই শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছেন শহরবাসী। সেখানে সোমবার বৃষ্টির কারণে আক্ষরিক অর্থেই ‘স্বস্তির’ শ্বাস নিতে পেরেছেন তাঁরা। কারণ, এ দিন কলকাতায় বায়ুসূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) ছিল

‘মাঝারি’, ১৮৬। দিল্লির বাতাস সেখানে ছিল ‘খারাপ’। সেখানকার বায়ুসূচক ছিল ২১৭।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জানাচ্ছে, বৃষ্টির জন্য শহরের বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ কমে যায়। এমনিতে বৃষ্টি হলে দূষণের মাত্রা কমে বলেই জানাচ্ছেন আবহবিজ্ঞানীদের একাংশ। সোমবারও তা লক্ষ করা গিয়েছে। এ দিন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর এলাকায় সকাল ১০টায় বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ (পিএম১০) ছিল প্রতি ঘন মিটারে ৯৮.৮৩ মাইক্রোগ্রাম। যা সহনশীল মাত্রা ১০০ মাইক্রোগ্রামের কম! দুপুর ১টায় তা সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ১২৮.২ মাইক্রোগ্রামে। আবার সকাল ১০টায় ওই এলাকাতেই বাতাসে ভাসমান অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পিএম ২.৫) ছিল প্রতি ঘন মিটারে ৯১.৮৭ মাইক্রোগ্রাম। সহনশীল মাত্রা ৬০-এর থেকে যা কিছুটা বেশি। দুপুর ১টায় তার পরিমাণ দাঁড়ায় ১০২.৯ মাইক্রোগ্রামে।

এ দিন একই চিত্র ধরা পড়েছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরেও। সেখানে সকাল ১০টায় পিএম ১০-এর পরিমাণ ছিল প্রতি ঘন মিটারে ৬৮.৯৩ মাইক্রোগ্রাম, পিএম ২.৫-এর পরিমাণ ৫৩.৮ মাইক্রোগ্রাম। উভয়ই সহনশীল মাত্রার থেকে কম। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক কর্তার কথায়, ‘‘দূষণের দিক থেকে দেখলে অসময়ের বৃষ্টিতে ভালই হল।’’

আলিপুর আবহাওয়া দফতর অবশ্য এই বৃষ্টিকে পুরোপুরি অসময়ের বলতে নারাজ। তাদের যুক্তি, এমনিতে মার্চ-এপ্রিল-মে মাসকে প্রাক্‌ বর্ষা মরসুম বলা হয়। মার্চে যে ঝড়বৃষ্টি হয়, সেটাই কয়েক দিন এগিয়ে এসেছে। আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তার কথায়, ‘‘এই ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস তো ছিলই। ফলে আবহাওয়ায় বড় কোনও পরিবর্তনের ফলে এমন হয়েছে, সেটা এখনই বলা যাবে না।’’

Rain Storm Pollution Kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy