এই অ্যাম্বুল্যান্সেই ছিল গাঁজা।
আচমকাই সেতু থেকে প্রায় ঝাঁপ দিয়ে নেমে পাশের রাস্তায় একটি অ্যাম্বুল্যান্সের পথ আটকাল কয়েক জন যুবক। ব্রেক কষে অ্যাম্বুল্যান্স থেমে যেতেই পিছনের গাড়িগুলিও পরপর দাঁড়িয়ে যায়। কেউই বুঝতে পারছিলেন না কেন আটকানো হল ওই অ্যাম্বুল্যান্স!
শনিবার দুপুরে দক্ষিণেশ্বর মোড়ের কাছের এই ঘটনায় পথচারী থেকে গাড়িচালক সকলেই হতবাক। তখনও ফ্ল্যাশার-সহ হুটার বেজে চলা অ্যাম্বুল্যান্সটি ঘিরে ওই যুবকেরা। এর পরেই সেখানে উল্টো দিক থেকে এসে থামল অন্য একটি গাড়ি। তা থেকে নেমে এলেন আরও কয়েক জন। অ়্যাম্বুল্যান্সের দরজা খুলতেই দেখা গেল স্ট্রেচারে শুয়ে এক যুবক। পাশে বসে আর এক জন। সামনে চালক-সহ আরও এক ব্যক্তি। স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা যুবককে টেনে তুলে দিয়ে সিট খুলে ফেললেন ঘিরে ধরা যুবকেরা। সেখান থেকে বেরিয়ে এল পাঁচটি ব্যাগ এবং কাপড় দিয়ে মোড়ানো কিছু জিনিস।
আরও পড়ুন: নিম্নমানের সরঞ্জাম, ঝুঁকি চিকিৎসায়
জানা গেল, ব্যাগ ও কাপড়ে মুড়ে নিয়ে যাচ্ছিল গাঁজা। যাঁরা অ্যাম্বুল্যান্সটি আটকে ছিলেন, তাঁরা সিআইডি-র স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের অফিসার ও কর্মী। ১০০ কেজি গাঁজা পাচার করার অভিযোগে সিআইডি গ্রেফতার করে হাবড়ার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ বড়ুয়া এবং জলঙ্গির তিন বাসিন্দা অনারুল বিশ্বাস, হাসানুজ্জামান এবং আক্রম আলি মণ্ডলকে।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই খবর আসছিল ওড়িশা থেকে মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে গাঁজা। কী ভাবে হচ্ছে তার কোনও সূত্রই মিলছিল না। অবশেষে জানা যায়, তিন বছর ধরে একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে গাঁজা পাচার চলছে। দলটি ধরতে ওড়িশাতে সোর্স লাগায়।
শনিবারই সিআইডি-র ওই দল জানতে পারে ওড়িশা থেকে গাঁজা বোঝাই অ্যাম্বুল্যান্সটি রওনা হয়েছে। এর পরেই ধূলাগড়ে অপেক্ষা করতে থাকেন গোয়েন্দারা। অল্পের জন্য ফস্কে যায় অ্যাম্বুল্যান্সটি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এর পরেই পিছনে ধাওয়া শুরু হয়। বালি ব্রিজ দিয়ে যাচ্ছে অ্যাম্বুল্যান্সটি আর পাশের সেতু দিয়ে গোয়েন্দাদের গাড়ি। দক্ষিণেশ্বরের কাছে এসে দেখা যায়, অ্যাম্বুল্যান্সটি বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার রাস্তায় এগোচ্ছে। তখনই দ্বিতীয় বিবেকানন্দ সেতুতে গাড়ি দাঁড় করিয়ে তা থেকে প্রায় ঝাঁপ দিয়ে নেমে গোয়েন্দারা অ্যাম্বুল্যান্সটি আটকে উদ্ধার করা হয় গাঁজা। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ওই অ্যাম্বুল্যান্সের নম্বরও ভুয়ো। এ বিষয়ে বরাহনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে সিআইডি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy