Advertisement
E-Paper

লরির ব্যাটারি বক্সে লুকিয়ে ২১ কোটির মাদক পাচারের চেষ্টা

ধৃতদের মধ্যে এক জনের বয়স ৪৭। তার নাম মোহর আলি। অন্য জন, বছর ছাব্বিশের রবিউল হোসেন ওরফে রবিয়াল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৫০
বেআইনি: লরি থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া মাদক। শনিবার রাতে, বেলগাছিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

বেআইনি: লরি থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া মাদক। শনিবার রাতে, বেলগাছিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

শহরে কুরিয়র মারফত মাদক পাচার হচ্ছে বলে নানা অভিযোগ আসছিল পুলিশ এবং নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর (এনসিবি) কাছে। শনিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া প্রায় ২১ কোটি টাকার মাদক ধরল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। এ ক্ষেত্রে ‘কুরিয়র’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল একটি লরির ব্যাটারি বক্স!

পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের মধ্যে এক জনের বয়স ৪৭। তার নাম মোহর আলি। অন্য জন, বছর ছাব্বিশের রবিউল হোসেন ওরফে রবিয়াল। দু’জনেই অসমের বাসিন্দা। ধৃতদের রবিবার আদালতে তোলা হলে মাদক পাচার চক্রের হদিস পেতে পুলিশি হেফাজতের দাবি জানায় এসটিএফ। বিচারক ধৃতদের আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা গিয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার রাতে শ্যামবাজার চত্বরে বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছিলেন এসটিএফের তদন্তকারীরা। চারটি দলে ভাগ হয়ে তাঁরা ছিলেন শ্যামবাজার, ক্যানাল ইস্ট ও ওয়েস্ট রোড, বেলগাছিয়া রোড এবং বেলগাছিয়া মিল্ক কলোনি মোড়ের কাছে। খবর ছিল, লরিতে করে মাদক পাচার হতে পারে। রাত পৌনে আটটা নাগাদ ক্যানাল ওয়েস্ট রোডের দিক থেকে একটি লরিকে আসতে দেখে সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। সেটিকে আর জি কর হাসপাতালের সামনে থামানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু গতি বাড়িয়ে লরিটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বেলগাছিয়া রোড থেকে টালা পার্কের দিকে না ঘুরে লরিটি সোজা মিল্ক কলোনির দিকে চলতে শুরু করে। এর পরে মিল্ক কলোনির সামনে থাকা তদন্তকারীদের একটি দল লরিটিকে ৩ডি বাসস্ট্যান্ডের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে যায়। সেখানেই লরিটিকে দাঁড় করিয়ে শুরু হয় তল্লাশি।

তবে প্রথমে তল্লাশি করেও মাদকের হদিস পাননি তদন্তকারীরা। এর পরে লরির সামনেই দাঁড় করিয়ে চালক এবং খালাসির আসনে বসা মোহর ও রবিউলকে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারাও কিছু বলেনি। তার পরে এসটিএফের এক আধিকারিক লরির ব্যাটারি বক্স খুলতে বলেন। সে কথা শুনেই তদন্তকারীদের হাত ছাড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করে মোহর। ওই ব্যাটারি বক্স খুলেই নানা প্যাকেটে মোড়া মাদক উদ্ধার হয়।

এসটিএফ সূত্রের খবর, ওই ব্যাটারি বক্স থেকে প্রায় ২ কিলোগ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়েছে। আন্তর্জাতিক কালোবাজারে যার দাম প্রায় ১০ কোটি টাকা। এ ছাড়াও বেশ কিছু ছোট প্যাকেটে ইয়াবা ট্যাবলেট (সিন্থেটিক ড্রাগ) উদ্ধার হয়েছে। সেগুলির বাজারদর প্রায় ১১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, ২১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার ওই মাদক পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে বাংলাদেশে পাচারের পরিকল্পনা ছিল তাদের। এর আগে অসমেও এমনই মাদক ভর্তি লরি তারা পৌঁছে দিয়েছে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। তবে এই মাদক কে বা কারা বাংলাদেশে পাচারের বরাত দিয়েছিল তা এখনও ধৃতদের থেকে জানা যায়নি বলে আদালতে জানিয়েছেন পুলিশের আইনজীবী।

এ জন্যই পুলিশি হেফাজতে নিয়ে ধৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন বলে তিনি আবেদন করেন। এসটিএফের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বর্ষবরণের পরে এমন প্রচুর পরিমাণে মাদক বাজেয়াপ্ত হওয়ার নজির সে ভাবে নেই। বর্ষশেষের রাতে এবং বর্ষবরণের দিনে এই মাদক কোথায় ছিল, এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত সেটাই এই মুহূর্তে মূল জানার বিষয়।’’

Drug Smuggling Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy