কালীপুজোর রাতে শব্দবাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করায় এক প্রৌঢ়া এবং এক প্রৌঢ়কে মারধরের অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে ভবানীপুর থানা এলাকার আশুতোষ মুখার্জি রোডের একটি বাড়িতে। অভিযোগকারী ভবানীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বছর পঞ্চান্নের ওই প্রৌঢ়া তাঁর দাদার সঙ্গে আশুতোষ মুখার্জি রোডের একটি বাড়ির দোতলায় থাকেন। দাদার বয়স ৬৫। ছোট্ট এক কামরার ফ্ল্য়াটের সামনে একটি বারান্দা রয়েছে তাঁদের। বৃহস্পতিবার বাড়িতে বসে ওই প্রৌঢ়া জানান, কালীপুজোয় গভীর রাত পর্যন্ত পাড়ায় এত জোরে বাজি ফাটছিল যে, ঘরের কাছে বোমা পড়ছে বলে ভ্রম হচ্ছিল। বাজির আওয়াজে ঘুম আসছিল না। প্রৌঢ়া বলেন, ‘‘হঠাৎ দেখি, বারান্দা দিয়ে বাজির ধোঁয়া ঢুকছে ঘরে। আগুনের ফুলকিও ঘরে ঢুকছিল। তাতে ঘরে রাখা একটা কাপড় আংশিক পুড়েও যায়। আমি হার্টের রোগী, আমার শ্বাসকষ্ট হতে থাকে। কোনও ভাবেই বাজির আওয়াজ থামছে না দেখে আমি ও দাদা নীচে নেমে বাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করতে যাই।’’
নীচে নেমে তাঁরা দেখেন, পাড়ারই কয়েক জন যুবক-যুবতী তাঁদের বাড়ির নীচে রাস্তায় বাজি ফাটাচ্ছেন। কিন্তু বাজি ফাটানো বন্ধ করতে বলায় তাঁরা রীতিমতো তেড়ে আসেন বলে অভিযোগ। ওই প্রৌঢ়া বলেন, ‘‘আমাকে ওরা মারধর করে। মুখে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। আমার দাদা আমাকে বাঁচাতে এলে ওকেও মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেয়। দাদার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এখনও দাগ রয়েছে। সে দিন হয়তো মরেই যেতাম। আমরা কোনও মতে নিজেদের বাঁচিয়ে ফের ঘরে ঢুকে আসি। কিছু ক্ষণ পরে বাজির আওয়াজ থামলে ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যাই।’’
আরও অভিযোগ, ভবানীপুর থানা প্রথমে ওই প্রৌঢ়ার অভিযোগ নেয়নি। অভিযোগকারিণী বলেন, ‘‘থানার অফিসার বললেন, একটা আগুনের ঘটনা নিয়ে ব্যস্ত আছি। এখন অভিযোগ নেওয়া হবে না। পরে আসবেন। আমরা এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে মেডিক্যাল টেস্ট করিয়ে ফের পরদিন ভবানীপুর থানায় যাই। তখন অবশ্য অভিযোগ নেওয়া হয়। আমরা পাঁচ অভিযুক্তের নাম লিখে থানায় অভিযোগ করেছি। কিন্তু পুলিশ কী পদক্ষেপ করেছে, কিছুই জানতে পারছি না।’’ পুলিশ জানিয়েছে, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।
এ দিন বাড়িতে বসে ওই প্রৌঢ়া ও তাঁর দাদা জানান, অভিযুক্তেরা কেউ এখনও ধরা পড়েনি। থানায় অভিযোগ করায় ফের তাঁদের বাড়িতে অভিযুক্তেরা হানা দেবে কিনা, তা নিয়েও এখন রীতিমতো আতঙ্কে আছেন তাঁরা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)