Advertisement
১৮ মে ২০২৪
TMC

21st July TMC Rally: বাস-অটো শূন্য পথে দিনভর হয়রান শহরবাসী

বাসের আকাল এবং বৃষ্টি— এই জোড়া গেরোয় এ দিন বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় অ্যাপ ক্যাবের ভাড়া আকাশ ছুঁয়েছে বলে অভিযোগ।

বাসে উঠতে হুড়োহুড়ি অফিসযাত্রীদের। বৃহস্পতিবার, উল্টোডাঙায়।

বাসে উঠতে হুড়োহুড়ি অফিসযাত্রীদের। বৃহস্পতিবার, উল্টোডাঙায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২২ ০৫:৫৪
Share: Save:

আশঙ্কা ছিলই। তাকেই সত্যি করে তৃণমূলের সমাবেশের দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত শহরের রাস্তা থেকে বাস, মিনিবাস কার্যত উধাও হয়ে গেল। সমাবেশ শেষ হয়ে এসপ্লানেড চত্বরে কর্মী-সমর্থকদের ভিড় পাতলা না হওয়া পর্যন্ত রাস্তায় দেখা মেলেনি সরকারি বাসেরও। এমনকি ওই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ রুটের অটোয় যাত্রী পরিষেবাও বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

এ দিকে পথে গণ পরিবহণের আকাল দেখে নিরুপায় যাত্রীদের ভিড় পৌঁছে যায় উত্তর-দক্ষিণ এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর লাইনে। পাশাপাশি শহরতলির ট্রেনেও ভিড় শুরু হয়। যার ফলে উত্তর-দক্ষিণ এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো দিয়ে এ দিন রেকর্ড সংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করেছেন বলে মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে। অতিমারি আবহে যাত্রী সংখ্যার সব নজির কার্যত ছাপিয়ে গিয়েছে ওই দুই মেট্রোয়।

বাসের আকাল এবং বৃষ্টি— এই জোড়া গেরোয় এ দিন বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় অ্যাপ ক্যাবের ভাড়া আকাশ ছুঁয়েছে বলে অভিযোগ। বিকেলে রাস্তার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও জরুরি কাজে বেরোনো জনতার হয়রানি হয়েছে দিনভর। উত্তরের কামারহাটি, দক্ষিণেশ্বর, বারাসত, ব্যারাকপুর, দমদম, নাগেরবাজার, বনহুগলি, সিঁথি এলাকায় সকাল ৮টার পরে বাস প্রায় চোখেই পড়েনি জানা যাচ্ছে। দু’-একটি বাস বেরোলেও তা বন্ধ হয়ে যায়। সূত্রের খবর, বহু জায়গায় বাস স্ট্যান্ড অথবা উড়ালপুলের নীচে কর্মীদের পিকনিক করতেও দেখা গিয়েছে।

নিউ টাউন, সল্টলেক, সাপুরজি, হাড়োয়া, লাউহাটি, ঘটকপুর এলাকাতেও বাসের দেখা মেলেনি। ডানকুনি, সলপ, ধূলাগড়ে কিছু বাস দেখা গেলেও তাতে বাদুড়-ঝোলা ভিড় নজরে এসেছে। গার্ডেনরিচ, মেটিয়াবুরুজ রুটে হাতে গোনা বেসরকারি বাস এবং মিনিবাস চলাচল করেছে বলে জানা গিয়েছে। বেহালায় পর্ণশ্রী, পৈলান, শিবরামপুর, চৌরাস্তা, জোকা এবং দক্ষিণ শহরতলির সোনারপুর, বারুইপুরে বেসরকারি বাস প্রায় চোখেই পড়েনি। হাওড়া-শিয়ালদহ রুটে সকালের দিকে অল্প কিছু বাস চললেও বেলা বাড়তেই মিছিলের চাপে তা বন্ধ হয়। অভিযোগ, সরকারি বাস সকাল থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত এ দিন ডিপো থেকে বেরোয়নি। চালক এবং কন্ডাক্টরদের বড় অংশই নাকি ধর্মতলায় শাসক দলের সমাবেশের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। রাস্তায় যানজট এবং ট্র্যাফিক একমুখী হওয়ায় বাস নামানো যায়নি বলেও জানিয়েছেন পরিবহণ আধিকারিকদের একটি অংশ।

‘সিটি সাবার্বান সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলছেন, ‘‘বাসের চাহিদার তুলনায় এ বার জোগান ছিল সত্যিই যথেষ্ট কম। বিকল্প না থাকায় মানুষকে পরিষেবা দিতে পারিনি।’’ ‘বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসুর আবার দাবি, ‘‘কর্মীর অভাবেও এ দিন অনেক রুটে বাস চালানো যায়নি।’’

এ দিকে নাকাল যাত্রীদের বড় অংশ বৃহস্পতিবার মেট্রোর উপরে নির্ভর করেছিলেন। এসপ্লানেড, দমদম, কালীঘাট, মহানায়ক উত্তম কুমার স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় আছড়ে পড়ে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আধিকারিকদের অনুমান ছিল মেট্রোয় যাত্রীর সংখ্যা এ দিন পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়ে থাকতে পারে। দিনের শেষের হিসেবও এল তেমনটাই হয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় সাধারণ দিনে যাত্রী থাকে ৩০ হাজারের আশপাশে। ওই মেট্রোয় এ দিন রাত পর্যন্ত প্রায় ৪২ হাজার যাত্রী হয়েছে।

নিত্যযাত্রীদের কথা ভেবে শিয়ালদহ এবং হাওড়া শাখায় কিছু অতিরিক্ত লোকাল ট্রেনও চালিয়েছে পূর্ব রেল। সন্ধ্যায় বাস-অটো চলাচল শুরু হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC 21st July TMC Rally
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE