ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের পথে হাঁটছে লালবাজার!
এত দিন সদর দফতরের ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম থেকেই গোটা মহানগরের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করত লালবাজার। পুলিশ সূত্রের খবর, এ বার টালিগঞ্জে মহানগরের দ্বিতীয় কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তার কাজ শেষ। অপেক্ষা শুধু উদ্বোধনের। ওই কন্ট্রোল রুম থেকে দক্ষিণ শহরতলির যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবেন। সদর দফতরের মতো দ্বিতীয় কন্ট্রোল রুমেও দু’জন ইনস্পেক্টরের অধীনে একটি দল মোতায়েন থাকবে।
ভোটের আগে পুলিশ কমিশনার হিসেবে প্রথম দফায় দায়িত্ব নেওয়ার পরেই রাস্তায় টহলদার পুলিশ বা ‘রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড’-কে বিকেন্দ্রীকরণ করেছিলেন রাজীব কুমার। সদর দফতরের বদলে আরএফএস নিয়ন্ত্রণের ভার দেওয়া হয়েছে বিভাগীয় ডেপুটি কমিশনার বা থানার ওসিদের। এ বার দ্বিতীয় দফায় বিকেন্দ্রীকরণ হচ্ছে ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের। লালবাজারের খবর, পরবর্তী ধাপে শহরের সিসিটিভি নজরদারিকেও ভেঙে দিতে বলেছেন সিপি। লালবাজারের মূল কন্ট্রোল রুমের পাশাপাশি আটটি ডিভিশনের কন্ট্রোল রুম থেকেও সিসিটিভি দিয়ে রাস্তায় নজরদারি চালাতে বলেছেন তিনি।
আরএফএস বিকেন্দ্রীকরণের সময়ে পুলিশের একাংশের যুক্তি ছিল, কোন এলাকায় টহলদার গাড়ি প্রয়োজন তা ওসি বা ডিসি-রা ভাল বুঝতে পারেন। সদর দফতরের হাতে থাকলে প্রয়োজনের সময়ে আরএফএস পেতে দেরি হয়েছে, এমন অভিযোগও মিলত। কিন্তু ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের বিকেন্দ্রীকরণের পিছনে কী কারণ দেখাচ্ছেন পুলিশকর্তারা?
২০১১ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ন’টি থানাকে কলকাতা পুলিশ এলাকার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়। ফলে কলকাতা পুলিশের এলাকা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়। নতুন এলাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পড়েন পুলিশকর্তারা। দক্ষিণ শহরতলির জন্য একটি পৃথক ডিসি (ট্রাফিক) পদও তৈরি করা হয়। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। শুধু যান চলাচল নিয়ন্ত্রণই নয়, লালবাজারের খবর, সদর দফতরের কন্ট্রোল রুম থেকে সংযুক্ত এলাকার বেশ কিছু জায়গাতে বেতার সংযোগও ঠিকঠাক মিলত না। ফলে অফিসারদের নির্দেশ দিতেও সমস্যায় পড়তেন কন্ট্রোলের অফিসারেরা। এই পরিস্থিতিতে টালিগঞ্জে এক জন এএসআই-এর নেতৃত্বে একটি সাব-কন্ট্রোল খোলা হয়েছিল। কিন্তু সেটা যে বিরাট এলাকার জন্য পর্যাপ্ত নয়, তা বুঝতে পেরেছিলেন লালবাজারের পদস্থকর্তারা। শেষমেশ গত মাসে পুলিশ কমিশনার নতুন কন্ট্রোল রুম খোলার নির্দেশ দেন।
লালবাজারের খবর, সদর দফতরের ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের মতো সব ধরনের অত্যাধুনিক ব্যবস্থা থাকবে নতুন কন্ট্রোল রুমেও। সেই সঙ্গে যাদবপুর-রিজেন্ট পার্ক-ঠাকুরপুকুর-তিলজলা এলাকার রাস্তায় থাকা সব ক্যামেরা নজরদারি করা হবেও ওই কন্ট্রোল রুম থেকেই। ওই সব এলাকার ১০টি ট্রাফিক গার্ড ও তাদের অফিসারদের নিয়ন্ত্রণও থাকবে টালিগঞ্জের ওই কন্ট্রোল রুমের হাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy