নায়কের পোস্টারে গাঁদার মালা, ভিড়, ব্ল্যাকার, পুলিশের লাঠি! তীব্র সিটি বা ‘গুরু গুরু’ গর্জনের দিনগুলো ফিরে আসবে কি না, বলা যাচ্ছে না। তবে ফিরে আসছে ওরা তিন জন।
আট মাস বন্ধ থাকার পরে আজ, শুক্রবার খুলছে বিজলি ও ছবিঘর। মিনার খুলবে আর কয়েক দিনেই। এই মাল্টিপ্লেক্সের জমানায় পয়লা বৈশাখের প্রাক্কালে ঠিক যেন উলটপুরাণ।
তখন বাঙালির সিনেমা-প্রেমের সঙ্গে সমার্থক বলতে কয়েকটি ‘ত্রয়ী’! তিন হলের ‘চেনে’ ছবি রিলিজ হতো তখন। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বরের আদলেই উত্তরা-পূরবী-উজ্জ্বলা, রূপবাণী-অরুণা-ভারতী, রাধা-পূর্ণ-প্রাচী বা মিনার-বিজলি-ছবিঘর। সেখানে এখন কোথাও শপিং মল বা আবাসন। কোথাও খাঁ খাঁ শূন্যতা। কেউ টিকে থাকলেও আছে না-থাকার মতোই। মিনার, বিজলি, ছবিঘর ফিরছে নতুন সাজে, নতুন স্বপ্ন চোখে মেখে।
সাবেক সিনেমা হলে এমনটা কমই দেখা যায়। ভাঙাচোরা হলে কদাচিৎ দর্শক ঢোকে। কলকাতায় বসে নায়েবের ভরসায় রাজ্যপাট সামলাতেন সেকেলে জমিদারেরা। আয়েসি হল-মালিকরাও হয়ে ওঠেন এক-এক জন জলসাঘরের জমিদার। মিনার-বিজলি-ছবিঘরের কর্ণধার সুরঞ্জন পাল এই ধারাটা ভাঙতে চাইছেন। তাঁর দাবি, ‘‘ঠিক ভাবে চালাতে পারলে বড় হলেই বেশি লাভ, এখনও বলব। হল-মালিক, প্রযোজক— দু’জনেরই অ্যাডভান্টেজ।’’ কী ভাবে? সুরঞ্জনের কথায়, ‘‘দর্শকের জন্য বেশি আসন সিঙ্গল স্ক্রিনেই। প্রযোজকের শেয়ারও মাল্টিপ্লেক্সের থেকে বেশি।’’ কিছু কম টাকার টিকিটে মাল্টিপ্লেক্সের আমেজ উপহার দিতে চান তিনি। পুশ-ব্যাক চেয়ার, এসি, সিঙ্গাপুরের আমদানি ডিজিটাল জেভিএস সাউন্ড প্রযুক্তির সঙ্গে থাকবে বাড়িতে ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভিতে আরামে ছবি দেখার মজা।
তবে ছবি ভাল না হলে সব চেষ্টা ভেস্তে যেতে পারে। নববর্ষের সপ্তাহে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বিসর্জন’, প্রসেনজিতের ‘ওয়ান’, হিন্দিতে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘বেগমজান’, ইংরেজিতে ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস-৮’ থাকছে। এ যাত্রায় ছবিঘর-বিজলি ভাগ করে ‘ফাঁস’ ও ‘ছোট মেমসাহেব’— দু’টি ছবি দেখাবে।
চোরাই ভিডিও ছবির দৌলতে সাবেক ভাঙাচোরা হলের সিনেমাওয়ালা-র মর্মান্তিক পরিণতি নিয়ে গত বছরই ছবি হয়েছে টালিগঞ্জে। হল-মালিক, প্রযোজক, পরিচালক— সবার হতাশার কাহিনিই ইদানীং মুখে মুখে ফেরে। এই চেনা চিত্রনাট্য অন্য ভাবে লেখা হচ্ছে বাঙালির বচ্ছরকার দিনটির ঠিক আগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy