Advertisement
E-Paper

বানচাল ভূত কেনা, ধৃত চার

ফোনে যোগাযোগ করে দু’জন হাজির ভূত কিনে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এঁরা নিছকই কবিরাজের প্রতিনিধি। ভূত বেচাকেনা কোথায় হবে? ভূশুণ্ডির মাঠ নয়। খাস বর্ধমান শহরের একটি হোটেলে নাকি জ্যান্ত ভূতের দর্শন মিলবে, এমনই দাবি করেছিল বিক্রেতারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৫

কবরেজের ভূত চাই। টাটকা ভূত। সুকুমার রায়ের সেই ‘পান্ত ভূতের জ্যান্ত ছানা’র মতোই!

মিলেও গেল চার ভূত বিক্রেতা। তাদের কাছে নাকি অর্ডারি ভূত আছে। কবিরাজ মশাইয়ের যেমন চাই! হাতেগরম ভূত বিক্রির ফাঁদ পা দিলেন কবিরাজ। ফোনে যোগাযোগ করে দু’জন হাজির ভূত কিনে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এঁরা নিছকই কবিরাজের প্রতিনিধি। ভূত বেচাকেনা কোথায় হবে? ভূশুণ্ডির মাঠ নয়। খাস বর্ধমান শহরের একটি হোটেলে নাকি জ্যান্ত ভূতের দর্শন মিলবে, এমনই দাবি করেছিল বিক্রেতারা।

ভূত দর্শন হয়নি। কিন্তু, ভূত বেচার নামে লোক ঠকানোর দায়ে পুলিশ পাকড়াও করেছে সুপ্রকাশ দে, জয়ন্ত ধারা, অরূপ দাস, বিকাশ গিরিকে। হুগলির মলয়পুরে সুপ্রকাশের বাড়ি। তিনি কলকাতা পুলিশের গাড়িচালক। বাকিরাও হুগলির বাসিন্দা। শুক্রবার বর্ধমান আদালতে চার জনকেই বিচারক এক হাজার টাকার বন্ডে এবং সপ্তাহে ২ দিন থানায় হাজিরার শর্তে জামিন মঞ্জুর করেন।

ভূত কিনতে এসেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বাগুইআটির বাসিন্দা তাপস রায় ও তাঁর বন্ধু বাসুদেব কুণ্ডু। তাপস পুলিশকে জানান, মঙ্গলবার নিউ টাউন থানার জগৎপুরের দীনেশ সিংহ ফোন করে জানান, এক জন ভূত বিক্রি করতে চায়। জমির কারবারের সূত্রে দীনেশের সঙ্গে পরিচয় তাপস-বাসুদেবের। পুলিশ জেনেছে, এই তিন জনের ‘গুরু’ হচ্ছেন ওই কবিরাজ। তাঁর কাছে ওষুধপত্র ছাড়াও নানা কারণে যাতায়াত তাপসদের। কবিরাজের ভূত চাওয়ার কথা শুনে দীনেশ ঠিক করে ভূত জোগাড় করতেই হবে। ভূত বিক্রেতারা জানিয়ে দেন, ২০ লক্ষ টাকা দিলে ভূত তাঁদের পোষা হয়ে যাবে। আশা আরও জাঁকিয়ে বসে দীনেশের মনে। তিনি তাপসদের পাঠান, ভূত পরখ করে আসতে।

বিক্রেতার দাবি মেনে বৃহস্পতিবার গাড়িতে বর্ধমান আসেন তাপস-বাসুদেব। বর্ধমান ঢোকার মুখে তাঁদের জন্য পুলিশ স্টিকার দেওয়া আরও একটি গাড়ি দাঁড়িয়েছিল। তাতেই দু’জনকে তিনকোনিয়ার এক হোটেলে তোলা হয়। তাপসরা পুলিশকে জানান, হোটেলের ঘরে ঠান্ডা পানীয়ের খালি একটি বোতল দেখিয়ে সুপ্রকাশরা দাবি করে, বোতলের মধ্যেই হাওয়ায় ভাসছে ভূত। সে নিরাকার। তাই দেখা যাচ্ছে না। তাপসদের বিশ্বাস হয় না। সুপ্রকাশরা বলে, পাঁচ টাকার কয়েন ফেলছি, ভেসে থাকলে বুঝবে ভূত রয়েছে। কয়েন কি আর ভূতের শোনে? সে দিব্যি বোতলের নীচে ঠক করে পড়ল।

জোর ঠকেছেন, বুঝে তাপস ও বাসুদেব কেটে পড়ার তাল করতেই বিক্রেতারা তাঁদের জোর করে আটকে রাখেন বলে অভিযোগ। বলা হয়, পাঁচ লাখ দিয়ে ‘ভূত’ বন্দি বোতল নিতে হবে। রাহা খরচ বাবদ আরও ২০ হাজার। দিনভর আটকে রাখার পরে ভূত ক্রেতার কাছে খবর পেয়ে হোটেলে হাজির বর্ধমান থানার পুলিশ। পুলিশ স্টিকার লেখা গাড়িটিও আটক করেছে পুলিশ।

তবে, কবরেজ মশাইয়ের হঠাৎ কেন ভূত কেনার দরকার হয়েছিল, জানা যায়নি।

Arrested Fake Business Ghosts
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy