Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ফুঁড়ে উঠে এসেছে ট্রামলাইন, বিপন্ন শহরের রাজপথ

ট্রাম চলাচল বন্ধ হয়েছে বহু বছর আগে। তার পরেও অবশ্য ট্রামলাইন তোলা হয়নি। বরং সেই লাইনের উপরই তৈরি হয়েছে কংক্রিটের রাস্তা। কিন্তু এর জেরে যে কত বড় বিপদ হতে পারে, রবিবারের আগে পর্যন্ত তার আন্দাজ ছিল না। এ দিন সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোডের একাংশে পিচ রাস্তা ফুঁড়ে ট্রামলাইনের লোহার পাত বেরিয়ে পড়ায় যে রকম বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা দেখে প্রশাসনের অনেক কর্তাব্যক্তি বুঝেছেন রাস্তা তৈরির সময় এমন গাফিলতি ঠিক কতটা ভয়াবহ হতে পারে।

এসএন ব্যানার্জি রোডে এই ভাবে বেরিয়ে এসেছে ট্রামলাইনের লোহার পাত। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

এসএন ব্যানার্জি রোডে এই ভাবে বেরিয়ে এসেছে ট্রামলাইনের লোহার পাত। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪৫
Share: Save:

ট্রাম চলাচল বন্ধ হয়েছে বহু বছর আগে। তার পরেও অবশ্য ট্রামলাইন তোলা হয়নি। বরং সেই লাইনের উপরই তৈরি হয়েছে কংক্রিটের রাস্তা। কিন্তু এর জেরে যে কত বড় বিপদ হতে পারে, রবিবারের আগে পর্যন্ত তার আন্দাজ ছিল না। এ দিন সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোডের একাংশে পিচ রাস্তা ফুঁড়ে ট্রামলাইনের লোহার পাত বেরিয়ে পড়ায় যে রকম বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা দেখে প্রশাসনের অনেক কর্তাব্যক্তি বুঝেছেন রাস্তা তৈরির সময় এমন গাফিলতি ঠিক কতটা ভয়াবহ হতে পারে।

কী হয়েছিল এ দিন?

ঘড়িতে তখন বিকেল চারটে। সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোডে এক রাজনৈতিক দলের মিছিল চলছে। তখনই নজরে এল রাস্তা ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে ট্রামলাইনের লোহার পাত। পরিস্থিতি সামলাতে কিছু ক্ষণ যান নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এক পুলিশকর্মী। পরে একটি বড় পাথর এনে লোহার পাতের সামনের দিকে চাপা দেন। কিন্তু তাতে শুরু হয় অন্য বিপত্তি। কিছু গাড়ি পাশ কাটিয়ে গেলেও বেশ কিছু ওই জায়গাটির ওপর দিয়ে যেতে গিয়ে ধাক্কা খেতে থাকে। এক সময় পাথরটিও কিছুটা সরে যায়। ঘটনাস্থলের এক দিকে রয়েছে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সেন্ট্রাল) এর অফিস। উল্টো দিকে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু বিষয়টি কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে জানানোর ঘণ্টাখানেক পরও পুর-প্রশাসনের কেউ আসেননি। পরে গার্ডরেল দিয়ে পুলিশ জায়গাটি ঘিরে দেয়। তারও প্রায় আধঘণ্টা পরে পুরসভার কর্মীরা এসে রাস্তাটি মেরামত করেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৩-র ২১ নভেম্বর নিউ মার্কেট থানার রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে প্রায় একই কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এক বাইক আরোহীর গাড়ির চাকা ফুঁড়ে পিছনের আসন দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল ট্রামলাইনের পাত। ২০১২-র ডিসেম্বরে পিস হাভেনের কাছে মোটরবাইকের চাকায় ট্রামলাইনের পাত ঢুকে এক শিশু আহত হয়। তবে এ ঘটনাগুলি যে সব রাস্তায় ঘটেছে, সেখানে এখনও ট্রাম চলে। সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোডের ক্ষেত্রে তো সে যুক্তি খাটে না। ‘ক্যালকাটা ট্রাম কোম্পানির’ এক কর্তা জানাচ্ছেন, বহু বছর আগে ওই রাস্তা পিচ করার সময় ট্রাম লাইন তোলা হয়নি। কিন্তু কেন এমন? ওই রাস্তার দেখভালের দায়িত্বে থাকা পুর-কর্তাদের বক্তব্য, “সাধারণত ট্রামলাইন না-তুলেই পিচ করা হয়। তার কারণ, ট্রামলাইন তোলার কাজ প্রচুর খরচসাপেক্ষ। এ ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE