Advertisement
E-Paper

স্কুলে শৌচালয় খোলা কি না, দেখবে প্রশাসন

অধিকাংশ সময়েই সেগুলি তালা বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ। তাই শৌচালয় থাকলেও সেগুলি ব্যবহার করতে পারছে না পড়ুয়ারা। খাস কলকাতার একাধিক স্কুলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠায় নড়েচড়ে বসেছে শিক্ষা দফতর। শহরের প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কড়া চিঠি পাঠিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার হুমকি দিল দফতর।

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:২০

স্কুলে শৌচালয় রয়েছে। অথচ অধিকাংশ সময়েই সেগুলি তালা বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ। তাই শৌচালয় থাকলেও সেগুলি ব্যবহার করতে পারছে না পড়ুয়ারা। খাস কলকাতার একাধিক স্কুলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠায় নড়েচড়ে বসেছে শিক্ষা দফতর। শহরের প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কড়া চিঠি পাঠিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার হুমকি দিল দফতর।

বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, স্কুলের পরিকাঠামোর তালিকায় রাজ্য সরকারের প্রথম উদ্দেশ্যই হল ১০০ শতাংশ স্কুলে শৌচালয় সুনিশ্চিত করা। ২০১৬ সালের সর্বশিক্ষা মিশনের রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল শহরের বহু স্কুলে পৃথক শৌচালয় নেই। শৌচালয় থাকলেও সেখানে জল নেই। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই এই খাতে আরও অর্থ বরাদ্দ করে দফতর। সমস্ত স্কুলেই পৃথক শৌচালয় তৈরি করা হয়েছে বলে একাধিক বার দাবিও করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তার পরেও অব্যবস্থা রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

শহরের বহু স্কুলে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে সম্প্রতি কলকাতার জেলা স্কুল পরিদর্শক ভবনে (শিক্ষা ভবন) অভিযোগ করেছিলেন কয়েক জন অভিভাবক। তার ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করে দফতর। দফতরের এক কর্তা জানান, ২০১৬ সালে প্রকাশিত রিপোর্টের পরেই স্কুলগুলিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছিল শৌচালয় সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে পড়ুয়াদের ব্যবহারের পরে সেগুলি অপরিচ্ছন্ন হয়ে যায়। তাই সমস্যা এড়াতে শৌচালয়গুলিতে তালা দিয়ে রেখে দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। শৌচালয় অপরিচ্ছন্ন থাকা যেমন অপরাধ, তেমনই সেগুলি ব্যবহার করতে না দেওয়া আরও বড় অপরাধ। ‘‘কর্তৃপক্ষ এটা করতে পারেন না’’, বলেন ওই কর্তা।

সর্বশিক্ষা মিশনের এক কর্তা জানান, নিয়ম অনুয়ায়ী প্রতিটি স্কুলে পৃথক শৌচালয় ও প্রস্রাবাগার থাকতে হবে। রাখতে হবে পৃথক জলের ব্যবস্থা। কোনও ভাবে জীবাণু যাতে না ছড়ায় সে জন্য স্কুলের নিজস্ব সাফাই কর্মীকে দিয়ে প্রতিনিয়ত তা পরিষ্কার করানোর কথা। দেখভালের দায়িত্ব স্কুলের রক্ষীর। স্কুল চালু হওয়ার অন্তত আধ ঘণ্টা আগে শৌচালয় খুলে পরিষ্কার করার নির্দেশ রয়েছে। কয়েক ঘণ্টা অন্তর ফের পরিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। স্কুল সম্পূর্ণ বন্ধ হওয়ার আগে শৌচালয় বন্ধ করা যায় না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এই নিয়মেরই অবহেলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে।

সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার একটি স্কুলে এক ছাত্রীকে শৌচালয়ে যেতে না দিয়ে তাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। তার পরে আরও কড়া হতে চাইছে শিক্ষা দফতর। সে কারণে শেষবারের মতো স্কুলগুলিকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ পরে ফের আচমকা স্কুল পরিদর্শন করতে পারেন দফতরের কর্তারা। তখন হাতে নাতে ধরা পড়লে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে বলে সাফ জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে। শহরের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘শৌচালয় বন্ধ রাখার বিষয়টি সমর্থন করি না। তবে পরিষ্কারের ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। তার প্রধান কারণ অর্থাভাব।’’ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির-সহ সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘শৌচালয় খোলা রাখার জন্য দফতর থেকে স্কুলে নির্দেশ পাঠানোটা স্কুলের অপমান। স্কুল কর্তৃপক্ষের এটা ভাবা উচিত।’’

school toilet Administration vikas bhawan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy