E-Paper

পড়ুয়াদের নিরাপত্তা বাড়াতে স্কুলের তালিকা তৈরি হচ্ছে হাওড়ায় 

বেহালার দুর্ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসেছে বিধাননগর পুলিশও। সল্টলেকের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্কুলের সামনে, যেখানে গাড়ি চলাচল করে, শনিবার সেই সব জায়গায় গার্ডরেল বসানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৪৫
An image of Road Safety

অবশেষে: দুর্ঘটনায় এক স্কুলপড়ুয়ার মৃত্যুর পরে বেহালা চৌরস্তায় রাস্তা পারাপার সুবিধার জন্য বসেছে বুম ব্যারিয়ার। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ।

শুধু বেহালায় নয়, হাওড়াতেও বড় রাস্তা সংলগ্ন স্কুলগুলির পড়ুয়াদের জন্য পুলিশি নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। অভিযোগ, স্কুল শুরু হওয়ার সময়ে বা ছুটির পরেও রাস্তায় দেখা মেলে না ট্র্যাফিক পুলিশের। তাই শুক্রবার সকালে বেহালায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরে পুলিশের কাছে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা চাইতে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সমস্ত সার্কেল ইনস্পেক্টরদের বড় রাস্তার ধারে থাকা স্কুলের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিল।

ঘিঞ্জি শহর হাওড়ার অধিকাংশ বড় রাস্তা, যেমন কাজিপাড়া থেকে বালির জিটি রোড, নরসিংহ দত্ত রোড বা নেতাজি সুভাষ রোডের দু’পাশে একাধিক সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুল রয়েছে। সেই সব স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, স্কুল শুরু হওয়ার বা ছুটির সময়ে শয়ে শয়ে পড়ুয়া রাস্তা পেরিয়ে স্কুলে ঢোকে অথবা বাড়ির পথে যায়। অথচ, রাস্তায় তখন ট্র্যাফিক পুলিশের দেখা মেলে না। এ বিষয়ে স্থানীয় থানাগুলিকে বার বার লিখিত ভাবে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।

হাওড়ার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবনের প্রধান শিক্ষিকা মোনালিসা মাইতি বললেন, ‘‘স্কুল থেকে বেরিয়ে দু’ফুট দূরেই বড় রাস্তা। সকালে প্রাথমিক বিভাগের ছুটির সময়ে এবং মাধ্যমিক বিভাগের স্কুল শুরুর সময়ে প্রায় ৩৫০০ পড়ুয়া ঢোকে-বেরোয়। তখন ওই
জায়গায় মারাত্মক ভিড় হয় বলে আমি বার বার থানায় চিঠি দিয়ে স্কুলের সামনে পুলিশ মোতায়েনের আবেদন করেছি। কিন্তু কাজ কিছু হয়নি।’’ হাওড়ার কলেজ ঘাট রোডের পাশে প্রজ্ঞানন্দ স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগে স্কুলের সামনে কোনও পুলিশকর্মী থাকতেন না। বর্তমানে এখানে স্থানীয় বিধায়কের অফিস হওয়ায় সপ্তাহে কয়েক দিন সিভিক ভলান্টিয়ারদের পাঠানো হচ্ছে দেখছি।’’

হাওড়ায় বড় রাস্তা সংলগ্ন স্কুলগুলির পড়ুয়াদের নিরাপত্তার বিষয়ে জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ ঘোষ শনিবার বলেন, ‘‘সার্কেল ইনস্পেক্টরদের বলা হয়েছে, বড় রাস্তা সংলগ্ন সমস্ত সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলের তালিকা তৈরি করতে হবে। ওই তালিকা পাওয়ার পরেই হাওড়ার নগরপালের সঙ্গে স্কুলগুলির সামনে পুলিশ মোতায়েন নিয়ে কথা বলব।’’ কৃষ্ণ আরও জানান, সংসদের পক্ষ থেকে স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ছুটির পরে দায়িত্ব নিয়ে সমস্ত পড়ুয়াকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে হবে। এই বিষয়টিকে যেন অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

কিন্তু যানবহুল বড় রাস্তা সংলগ্ন স্কুলগুলির পড়ুয়াদের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয় না কেন? হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে সমস্ত জায়গায় পড়ুয়াদের ভিড়ের জন্য সমস্যা হয়, সেখানে পুলিশ থাকে। তবে, স্কুল শুরুর বা ছুটির সময়ে সব স্কুলের সামনে পুলিশ দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটে কর্মীর অভাব রয়েছে। তবু আমরা চেষ্টা করব।’’

অন্য দিকে, বেহালার দুর্ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসেছে বিধাননগর পুলিশও। সল্টলেকের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্কুলের সামনে, যেখানে গাড়ি চলাচল করে, শনিবার সেই সব জায়গায় গার্ডরেল বসানো হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশকর্মীদেরও। বিধাননগর কমিশনারেটের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, এত দিন স্কুলের তরফে গার্ডরেল বা পুলিশি সাহায্য চাইলে দেওয়া হত। এ দিন থেকে পুলিশের তরফেই স্কুলগুলিকে বলা হয়েছে, গার্ডরেল ও রাস্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হবে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘এমন অনেক স্কুলই রয়েছে, যেগুলির সামনে গাড়ি চলে। তাদের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা আবশ্যিক করা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Howrah School students

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy