রানওয়ের শেষ প্রান্তে পৌঁছে মুখ ঘুরিয়ে ওড়ার জন্য দৌড় শুরু করার কথা ছিল বিমানের। সোমবার গভীর রাতে তখন আলোয় ঝলমল করছে কলকাতা বিমানবন্দরের রানওয়ে। কিন্তু মুখ ঘোরানোর সময়ে হিসেবে সামান্য ভুল করে ফেললেন পাইলট। বিমানের সামনের দু’টি চাকা রানওয়ের শক্ত কংক্রিট ছেড়ে নেমে গেল ঘাসে ঢাকা নরম মাটিতে। আর সেখানেই চাকা বসে গিয়ে আটকে গেল বিমান।
বিমানবন্দর সূত্রে খবর, গতি খুব কম থাকায় বিমানের বড় কোনও বিপত্তি হয়নি। কিন্তু রানওয়ের উত্তর দিকে সেটি আটকে পড়ায় কলকাতার মূল রানওয়ে বন্ধ করে দিতে হয় রাতেই। দ্বিতীয় সমান্তরাল যে রানওয়ে রয়েছে, তার দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে ওঠানামা করেছে অন্য বিমান। বিমানটিকে টেনে ফের পার্কিং বে-তে নিয়ে আসা হলে নির্ধারিত সময়ের প্রায় তিন ঘণ্টা পরে আবার সেটি যাত্রীদের নিয়ে উড়ে যায় সিঙ্গাপুর।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে রাত প্রায় ১১টা ৫০ মিনিট নাগাদ এয়ারবাস ৩৩০ বিমানটি নিয়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের পাইলট প্রধান রানওয়েতে পৌঁছে যান। একেবারে উত্তর প্রান্তে গিয়ে মুখ ঘুরিয়ে তাঁর দৌড় শুরু করার কথা ছিল। ওই ঘোরার সময়েই সামনের চাকা নেমে যায় মাটিতে। খবর পেয়ে বিমানবন্দরের অফিসারেরা দমকল, অ্যাম্বুল্যান্স ও টো-বার (যা দিয়ে বিমানকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়) নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। মাটিতে চাকা গেঁথে যাওয়া ওই বিমানটিকে টেনে-হিঁচড়ে পার্কিং বে-তে আনা হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায় সে রকম কোনও ক্ষতি হয়নি। পরে বিমানটি আবার যাত্রীদের নিয়ে উড়ে যায় সিঙ্গাপুর। গোটা সময়টা বিমানের ভিতরে বসেই অপেক্ষা করছিলেন ১৭৫ জন যাত্রী। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এঁদের মধ্যে এক মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি ও তাঁর স্বামী নেমে যান। তাঁদের কলকাতায় নামিয়েই ফের রওনা হয় বিমান। তাঁদের মালপত্র নামানোর জন্যও বেশ কিছুক্ষণ সময় নষ্ট হয় বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্রে খবর, মাটি ভিজে থাকায় সামনের চাকা টেনে তোলার কাজটা সহজ হয়নি। রাত ১২টার পর থেকে চেষ্টা করে সেই বিমানকে রাত আড়াইটে নাগাদ পার্কিং বে-তে আনা সম্ভব হয়। ততক্ষণ বন্ধ থাকে প্রধান রানওয়ে।
বিপদ কাটিয়ে সিঙ্গাপুর পৌঁছনোর পরে ওই বিমানের এক যাত্রী ক্যারোলিন ট্যান ফোনে জানান, বিমান ও ভাবে আটকে যাওয়ার পরে পাইলট ঘোষণা করে বিষয়টি জানান। জানানো হয়, বিমানকে টেনে পিছনে আনার পরেই টেক-অফ করা সম্ভব হবে। ক্যারোলিন বলেন, ‘‘জানলা দিয়ে দেখি রানওয়ের সমস্ত আলো নিভিয়ে দিয়ে মাথায় বাতি লাগানো গাড়ি ছুটে আসছে। একজন যাত্রী অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন।’’ এর পরে বিমানটিকে টেনে পার্কিং বে-তে আনা হয়। প্রায় চার ঘণ্টা দেরিতে সিঙ্গাপুর পৌঁছনোয় অনেক যাত্রী পরবর্তী উড়ান ধরতে পারেননি বলে জানান ক্যারোলিন।
কলকাতা বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট) বরুণকুমার সরকার মঙ্গলবার বলেন, ‘‘এই ঘটনায় অন্য বিমান নামাওঠায় সমস্যা হয়নি। ঘটনার পরেই প্রধান রানওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় রানওয়ের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে বিমান ওঠানামা শুরু হয়।’’ জানা গিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে কলকাতায় নামতে চলে আসে তাই এয়ারওয়েজ এবং ইন্ডিগোর প্রায় চারটি বিমান। তারা সময় মতো নেমে আসে। কয়েকটি বিমান কলকাতা ছেড়েও উড়ে যায়। ঘটনাটি নিয়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy