Advertisement
E-Paper

পিটিয়ে মারার ঘটনায় গ্রেফতার আরও এক যুবক

রতনকে মৃত অবস্থায় প্রথম যে চিকিৎসক দেখেছিলেন, সেই গৌর দে বা এলাকার ‘গৌর ডাক্তার’-এর সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৯ ০৩:৪৬
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

মানিকতলায় চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার ঘটনার দু’দিন পরে গ্রেফতার হল মূল অভিযুক্ত সুরজিৎ কুন্ডু। শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্যামবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তবে এখনও আর এক মূল অভিযুক্ত দীপ সরকার ফেরার।

ঘটনার দিন দেরিতে খবর পাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছিল পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। এ দিন অবশ্য সকালে মানিকতলা থানায় গিয়ে দেখা গিয়েছে পুলিশি তৎপরতার চিত্র। ওই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারেন, এমন ব্যক্তিদের নামের তালিকা তৈরি করেছে পুলিশ। সেই তালিকাতেই রাখা হয়েছে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের নামও। ওই তালিকা ধরেই এ দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েক জনকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল থানায়। ফলে থানায় এ দিন দুপুরে ছিল প্রবল ভিড়। বসার জায়গা ছিল না বেঞ্চগুলিতেও। তার মধ্যে থেকেই নাম ধরে ধরে ডেকে নিচ্ছিলেন উর্দিধারীরা। অফিসার ইন-চার্জের (ওসি) ঘরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির ছিলেন ডিসি (ইএসডি) দেবস্মিতা দাস এবং অন্য তদন্তকারীরা। ঘটনার পরে বুধবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মোট তিন জায়গায় হানা দিয়েছিল পুলিশ। এর মধ্যে দু’টি জায়গা রাজ্যের বাইরে। পরে গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে শ্যামবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয় সুরজিৎকে।

তাঁকে এবং আর এক ধৃত তাপস সাহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, অভিযুক্তেরা আগে থেকেই চিনতেন রতন কর্মকারকে (৫৫)। খন্নার হাট থেকে দীপ নামের ওই যুবকই মোটরবাইকে রতনকে পাড়ায় নিয়ে গিয়েছিলেন। দীপই ফোনে ডেকে নেন সুরজিৎ, তাপস এবং বাকিদের। তার পরে ক্লাবের ভিতরে রতনকে ঢুকিয়ে তাঁর হাত-পা বেঁধে চলে বেধড়ক মারধর। এতেই পুলিশের প্রশ্ন, পরিচিত না হলে রতন বিনা প্রতিবাদে দীপের মোটরবাইকে উঠলেন কেন? আর ক্লাব যেখানে অবস্থিত, সেই হরিশ নিয়োগী রোড পর্যন্ত এলেনই বা কী ভেবে?

রতনকে মৃত অবস্থায় প্রথম যে চিকিৎসক দেখেছিলেন, সেই গৌর দে বা এলাকার ‘গৌর ডাক্তার’-এর সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাঁর দাবি, ‘‘বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ আমি গিয়েছিলাম। সুরজিৎ আমাকে ফোন করে বলেন, এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমরা তাঁকে ক্লাবে নিয়ে এসেছি। দ্রুত আসুন। ওঁরাই আমাকে মোটরবাইকে নিয়ে যান। গিয়ে দেখি, ওই ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। গায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। আমি যাওয়ার প্রায় তিন ঘণ্টা আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। ঘটনাটি পুলিশে জানাতে বলে আমি চলে আসি।’’ কিন্তু তিনি নিজে কেন পুলিশে খবর দেননি? গৌরবাবুর দাবি, ‘‘বিষয়টি এত দূর গড়াবে, বুঝিনি।’’

এ দিন একই দাবি করেছেন অভিযুক্ত সুরজিতের মা-ও। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যাপারটা যে এতটা হবে, বুঝিনি।’’ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবশ্য এ দিনও দেখা গিয়েছে, থমথমে পরিবেশ। পাড়ার সকলেই চাইছেন, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। ওই এলাকা থেকে কিছুটা দূরে মুরারিপুকুরের সেই বিখ্যাত পাড়া। ঐতিহাসিক বোমার মামলায় এখানকারই এক বাগানবাড়িতে হানা দিয়ে ১৯০৮ সালের ২ মে বোমা তৈরির সরঞ্জাম-সহ অরবিন্দ ঘোষের ভাই বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, উল্লাসকর দত্তদের মতো ১৪ জন স্বাধীনতা সংগ্রামীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ওই একই মামলায় গ্রেফতার হন অরবিন্দও। সঞ্জিত দাস নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য যে মানিকতলা বিখ্যাত, সেখানেই এমন পিটিয়ে মারার ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটছে এখন। দোষীদের কড়া শাস্তি চাই।’’

Crime Maniktala Death Lynching
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy