ভাড়াটে এবং মালিকপক্ষের মধ্যে টানাপড়েন চলছিলই। সমস্যার সূত্রপাত, ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে।
সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, পুজোর আগেই ভাড়া বাড়াতে হবে। কিন্তু, তাতে রাজি ছিলেন না ভাড়াটেরা। তাঁদের দাবি ছিল, যেমন চলছে, তেমনই চলুক। কিন্তু, মালিক পক্ষ তাতে রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়। বাধ্য হয়েই গত শনিবারে বৈঠকে বসেছিলেন ভাড়াটেরা। এই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাগড়ি মার্কেট গ্রাস করে লেলিহান শিখা।
এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। চোখের সামনে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে খাঁক হয়ে গেল বাগড়ি মার্কেট। আগুন নেভাতে দমকল, পুলিশ-প্রশাসন ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কিন্তু এখনও আগুনের উৎসস্থল কোথায়? কী করে আগুন লাগল, তা জানা যায়নি। সোমবার ঘটনাস্থলে এসে কলকাতা পুরসভার মহানাগরিক শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই বাগড়ি মার্কেট নিয়ে অনেক সমস্যাই রয়েছে। এখনও কারও নামে এফআইআর না হলেও, বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির জেরে ব্যবসায়ীদের এখন মাথার হাত। বাগড়ির সামনে যখন হাহাকার হচ্ছে, তখন ভাড়াটেদের প্রশ্ন, কোথায় গেলেন মার্কেটের অন্যতম মালিক রাধা বাগড়়ি? মার্কেট ঘিরে যখন এত সমস্যা। এত অভিযোগ, তখন কোথায় গেলেন তিনি ? রাধাই মূলত এই মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করতেন।
আগুন লাগার পর থেকে ‘আশ্চর্যজনক’ ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছেন সেই রাধা বাগড়ি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ফোন করেও মালিকের খোঁজ মেলেনি। বালিগঞ্জ প্লেস-এ রাধা বাগড়ির বিশাল বাড়ি। কিন্তু ঘটনার পর থেকে বাড়ি সব জানলা বন্ধ। দরজায় বড় তালা। সোমবারও পুলিশ তাঁর খোঁজ পায়নি।
বাগড়ি মার্কেটের অগ্নি নির্বাপন নিয়েও ক্ষোভ ছিল ভাড়াটেদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা সুরক্ষিত করতে টাকা দেওয়া হয়েছিল। জিনিসপত্র কেনা হলেও, তা রক্ষণাবেক্ষণ হত না। নজরদারি অভাবও ছিল। ছাদে ৬০ হাজার লিটারের জল ধরার মতো বেশ কয়েকটি ট্যাঙ্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তা শুকনো রাখা হত। আগুন লাগার পর, দমকল গিয়েও সেই ট্যাঙ্কে জল পায়নি। ফলে আগুন নেভাতে সমস্যা হয়।
সমস্যা রয়েছে আরও, মার্কেটের মালিকানা নিয়েও মামলা চলছে। মোহন বাগড়ির পুত্রবধূ রাধাই এই মার্কেটের বেশিরভাগ শেয়ারের মালিক। মার্কেটের আর এক বড় শরিক কৃষ্ণ কোঠারি। রয়েছে আরও কয়েকজন শরিক।