Advertisement
E-Paper

দুশ্চিন্তায় দিন যাচ্ছে বাগড়ির ব্যবসায়ীদের

অগ্নিকাণ্ডের পরে ৩৭ দিন অতিক্রান্ত। এখনও অন্ধগলি হয়ে রয়েছে মধ্য কলকাতার ‘বিজনেস হাব’ বাগড়ি মার্কেট। ওই পোড়া বাড়ি কবে থেকে আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে, জানা নেই কারও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০৮
খণ্ডহর: বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে পোড়া বাগড়ি মার্কেট। মঙ্গলবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

খণ্ডহর: বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে পোড়া বাগড়ি মার্কেট। মঙ্গলবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

অগ্নিকাণ্ডের পরে ৩৭ দিন অতিক্রান্ত। এখনও অন্ধগলি হয়ে রয়েছে মধ্য কলকাতার ‘বিজনেস হাব’ বাগড়ি মার্কেট। ওই পোড়া বাড়ি কবে থেকে আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে, জানা নেই কারও। উত্তর নেই প্রশাসনের কাছেও। ব্যবসায়ীরা এখন বলছেন, ‘‘দুর্গাপুজো কেটে গেল। এ বার কালীপুজোও যাবে। কবে খদ্দেরের মুখ দেখব, বুঝতে পারছি না। কাউকে বলেই কিছু হচ্ছে না। সরকারি জট কাটাতেই দিনের পর দিন চলে যাচ্ছে!’’

গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে আগুন লাগে বাগড়ি মার্কেটে। ছ’তলা ভবন জ্বলে খাক হয়ে যায়। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন একটানা লড়াই চালিয়ে তিন দিনের মাথায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কোনও মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও ওই আগুনে কয়েকশো কোটি টাকার জিনিসপত্র পুড়ে যায়। তার পরেই পুর প্রশাসনের তরফে মার্কেট ভবন বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হয়েছিল, মার্কেটের বাইরে থাকা ফুটপাতের ডালা থেকেই আগুন লেগেছিল। এমনকি, সেই সময়ে ওই অগ্নিকাণ্ড নিয়ে অন্তর্ঘাতের তত্ত্বও প্রকাশ্যে আসে। মালিক রাধা বাগড়ি ও তাঁর ছেলে বরুণ এবং এস্টেটের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার কৃষ্ণকুমার কোঠারির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ আনে দমকল। এঁদের প্রত্যেকেই এখন ফেরার। এর মধ্যে তাঁদের জামিনের আবেদনও খারিজ হয়ে গিয়েছে। ৩৭ দিন পরেও অভিযুক্তদের ধরতে না পারায় প্রশাসনের পাশাপাশি চাপে পুলিশও। বড়বাজার থানা এ নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘রেড রোডে ভাসানের কার্নিভ্যালে আছি। বাগড়ি নিয়ে এখন ভাবতে পারছি না।’’

পুলিশ ও প্রশাসনের বাগড়ি-ভাবনা অনেকটা ফিকে হয়ে এলেও মার্কেটের ব্যবসায়ীদের চোখে এখনও ঘুম নেই। চারতলায় ব্যাগের গুদাম ছিল জানবাজারের বাসিন্দা স্নেহময় সাহার। প্রতিদিন নিয়ম করে মার্কেটে ঘুরে যাচ্ছেন তিনি। সংস্কারের কাজ কত দূর এগোল, তা দেখতে। মঙ্গলবার তিনি বললেন, ‘‘পুজোটা কোনও মতে কেটেছে। কত দিন এ ভাবে চালাতে হবে, জানি না। সবাই রাজনীতি করছেন। আমাদের দিকটা কেউ ভাবছেন না। মাঝেরহাটে বিকল্প রাস্তা তৈরি হয়ে গেল। আমাদের জন্য বিকল্প কিছুই হল না।’’ ‘বাগড়ি মার্কেট সেন্ট্রাল কলকাতা ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি আশুতোষ সিংহ অবশ্য জানালেন, সরকারের ভূমিকায় তাঁরা খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘এখন মার্কেটের ভিতরে নতুন করে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বসানোর কাজ চলছে। বিদ্যুতের সংযোগগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কালীপুজোর পরেই হয়তো মার্কেট খুলে যাবে।’’

যদিও কালীপুজোর পরেই মার্কেট খোলার আশা দেখছেন না সরকারি মহলের বড় অংশ। তাঁদের ব্যাখ্যা, মার্কেট পুড়ে যাওয়ার পরে বাড়িটির অবস্থা খতিয়ে দেখে গিয়েছে আইআইটি খড়্গপুর ও আইআইটি রুরকি-র বিশেষজ্ঞ কমিটি। এখনও তাদের রিপোর্ট জমা পড়েনি। কলকাতা পুরসভা ও দমকল সূত্রের দাবি, কালীপুজোর পরে দুই আইআইটি কমিটির মূল রিপোর্ট জমা পড়বে। তার পরেই বাগড়ি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাগড়ি মার্কেটের ভবনটি ভেঙে ফেলার মতো অবস্থায় যায়নি। রিপোর্ট পাওয়ার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ দমকলের ডিজি জগমোহন বলেন, ‘‘বাগড়ি মার্কেটের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে বাজার কমিটিকে। আইআইটি-র বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরে পুরসভা কী পদক্ষেপ করে, তা দেখে নিয়েই আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’

আপাতত বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টেই আটকে বাগড়ি মার্কেটের ভবিষ্যৎ!

Bagri Market Fire Shop Owners Worry Closed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy