Advertisement
E-Paper

বেটিং-জালে জড়িয়ে শহর, গ্রেফতার ছয়

শহরে ফের জাল ছড়িয়েছে ক্রিকেট বেটিং চক্র। তার শিকড়ের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে অভিজাত পাঁচতারা হোটেল থেকে তিলজলার ঘুপচি গলি পর্যন্ত। ম্যাচে অনিশ্চয়তা যত বাড়ে ততই বাড়তে থাকে জুয়ার মজা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৬ ০৩:১৮

শহরে ফের জাল ছড়িয়েছে ক্রিকেট বেটিং চক্র। তার শিকড়ের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে অভিজাত পাঁচতারা হোটেল থেকে তিলজলার ঘুপচি গলি পর্যন্ত। ম্যাচে অনিশ্চয়তা যত বাড়ে ততই বাড়তে থাকে জুয়ার মজা। একেবারে একতরফা খেলে, পরপর জিতে গেলে জুয়ার বাজার খারাপ হয়ে যায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হওয়া ইস্তক, শহরের আনাচে কানাচে সক্রিয় হয়ে ওঠে জুয়াড়িরা। কিছু ছোটখাটো, কিছু আবার আন্তজার্তিক স্তরে।

কলকাতা পুলিশের কর্তারা জানাচ্ছেন, গোপনে এমনই খবর আসছিল তাঁদের কাছেও। সেই সূত্রেই রবিবার দক্ষিণ কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলের ‘প্রিমিয়াম’ রুমে হানা দিয়ে বিশাল খটিক, রাকেশ সিংহ ও সুমিত পাপোলি নামে তিন বুকিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা তিন জনই হোটেলের ঘরে বসে দেশ-বিদেশের বুকিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বেটিং চালাচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের কাছে ১টি ল্যাপটপ, ১১টি মোবাইল, ভয়েস রেকর্ডার ও কয়েক লক্ষ টাকা মিলেছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তিন জনকে জেরা করে সোমবার ট্যাংরা থেকে ধরা হয় ওই চক্রের পাণ্ডা তথা ওই হোটেলের প্রিমিয়াম ক্লাব সদস্য সঞ্জয় চৌধুরীকে। পুলিশ জানায়, সঞ্জয় ওই হোটেলে নিজের নামে ঘর ভাড়া করেছিল। সেখানেই রবিবার রাতে চলছিল ক্রিকেট বেটিং। এই বেটিং চক্রের আর এক পাণ্ডা, লিলুয়ার বাসিন্দা রীতেশ পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রবিবারই বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে একটি বাড়িতে হানা দিয়ে আরও একটি বেটিং চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, বেটিংয়ের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় প্রদীপ জৈন ও অনিল অগ্রবাল নামের দুই ক্রিকেট বুকিকে। তাদের কাছে একাধিক মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি মিলেছে।

এ বার বিশ্বকাপে ভারতের সাম্প্রতিকতম পারফরম্যান্স এমন সব ‘মজা’ই বুকিদের প্লেটে করে সাজিয়ে দিয়েছে। যেমন, প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়ার পরে টেনশন বাড়তে শুরু করেছিল। তাতে অবশ্য শুরুতেই ‘অ্যাডভান্টেজ’ পেয়ে যায় বুকিরা। বাংলাদেশের ম্যাচ প্রায় হারতে বসেছিল ধোনির দল। শেষ ওভারে বাংলাদেশ যখন ৩ বলে ২ রান করলেই জিতে যায়, তখন কার্যত আত্মঘাতী হন দুই বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান। জুয়াড়িদের হাতে তখন চাঁদ। কারণ, সে ম্যাচে ভারতের হার মানে, ব্যাগ-ট্যাগ গুছিয়ে যে যার বাড়ি। কিন্তু, টুর্নামেন্টে রয়ে গেল ভারত। সূত্রের খবর, পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচে জুয়ার দর থাকে সবচেয়ে বেশি। তবে, এ বার খেলাটা একতরফা হয়ে যাওয়ায় সুবিধা হয়নি জুয়াড়িদের।

পুলিশ জানাচ্ছে, ইডেনে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দিনই জানা ‌যায়, বাইপাসের ধারে একটি পাঁচতারা হোটেলে বেটিং চক্র চলছে। এক অফিসারের কথায়, ‘‘ওই জুয়ায় অংশ নিতে চেয়ে আমরা বেশ কিছু ‘পান্টারের’ (এরাই বুকিদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়) সঙ্গে যোগাযোগ করি। সেখান থেকে কয়েক জন বুকির ফোন নম্বর মেলে। দেখা যায়, তা শহরের বেশ কিছু ব্যবসায়ীর। তাঁদের মধ্যে এক জন শহরের বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলের প্রিমিয়াম সদস্য।’’

কিন্তু সে দিন কোনও চক্র ধরতে পারেনি পুলিশ। পাঁচতারা হোটেলের নিরাপত্তার আড়ালে ‘হাই-প্রোফাইল’ জোনে বসে থাকার সুবিধা রয়েছে। চাইলেও সে দিন পাঁচতারা হোটেলে হানা দেওয়া যায়নি। জুয়াড়িরা বিনা বাধায় চালিয়ে গিয়েছে জুয়া।

রবিবার ভারত-অস্ট্রেলিয়া ছিল মরণ-বাঁচন লড়াই। দু’পক্ষের কাছেই। পুলিশের কাছেও আগাম খবর ছিল যে, ম্যাচের প্রতিটি বল নিয়েই জুয়া খেলা হচ্ছে। বিশেষত যখন ভারত ব্যাট করছে তখন। কোহলির এক একটা চার, ছয়ের উপরেও দর ধরছেন বুকিরা। বিশ্বের দুই অতি শক্তিশালী দলের এ ভাবে মাঠে নেমে ‘ডু অর ডাই’-এর চেয়ে জুয়ার আর ভাল কী ‘মওকা’ হতে পারে।

betting arrested
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy