দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাস। ছবি: শৌভিক দে।
নির্দিষ্ট পথে না গিয়ে অন্য রাস্তায় ঢুকে পড়ায় রেল গার্ডের ধাক্কায় উড়ে গেল বাসের পুরো ছাদ। বরাতজোরে বাঁচলেন দুই স্কুলছাত্র-সহ চার আরোহী। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে মানিকতলা রেল সেতুর নীচে।
পুলিশ জানায়, মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালে জখম স্কুলপড়ুয়া শিবম যাদব ও কৃষ্ণ শর্মা এবং অন্য দুই যাত্রী নন্দদুলাল কর ও সঞ্জয়কুমার কুণ্ডুর প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। রাতে নন্দদুলালবাবুকে ভর্তি করা হয় বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে। বাসচালক পলাতক।
পুলিশ জানায়, এ দিন বিকেলে সিএসটিসি-র ৩এ/২ রুটের ওই বাসটি সরশুনা থেকে কাঁকুড়গাছি যাচ্ছিল। মানিকতলা মেন রোডে সেটি রেল সেতুর আন্ডারপাস দিয়ে না গিয়ে ছোট গাড়ি যাওয়ার রাস্তায় ঢুকে যায়। রেল গার্ডের লোহার গেটটি তুলনায় নিচু হওয়ায় তার ধাক্কায় বাসের ছাদ কাটতে কাটতে যেতে থাকে। স্থানীয়েরা জানান, চালক যতক্ষণে বাসটি থামান, ততক্ষণে বাসের পুরো ছাদ কেটে ছিটকে পড়েছে।
ইতিমধ্যে বাসের জানলার কাচ গুঁড়ো হয়ে ভিতরে পড়তে থাকে। তাতেই জখম হন যাত্রীরা। এলাকার লোকজনই আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ দিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আহত সঞ্জয়বাবুকে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাকিদের চিকিৎসা চলছে। তাদের মধ্যে শ্রী জৈন বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির দুই ছাত্র শিবম ও কৃষ্ণের কপাল, ঠোঁট ও হাত কাচের টুকরোয় কেটে গিয়েছে।
শিবম এবং কৃষ্ণ জানায়, কাঁকুড়গাছি মো়ড়ে তাদের নামার কথা ছিল। তার আগে হঠাৎই বাসটি আন্ডারপাস দিয়ে না গিয়ে পাশের রাস্তায় ঢুকে পড়ে। তার পরেই বিকট আওয়াজ আর সঙ্গে চারদিক থেকে কাচের টুকরো পড়তে শুরু করল। শিবম বলে, ‘‘রোজই এই রুটের বাসে বাড়ি ফিরি। কোনও দিন এমন হয়নি। আজ হঠাৎ বাসটি অন্য রাস্তায় ঢোকার পরেও বুঝতে পারিনি। কিন্তু কয়েক মুহূর্ত পরেই বাসের ছাদ কাটতে শুরু করায় ভয় পেয়ে যাই।’’ কাচে ঠোঁট কেটে যাওয়ায় কৃষ্ণ অবশ্য খুব একটা কথা বলার অবস্থায় ছিল না। তার মা জানিয়েছেন, ছেলের পোশাকের ভিতরেও কাচ ঢুকে গিয়েছে।
অন্য দিকে, দুর্ঘটনায় আহত যাত্রী নন্দদুলালবাবু মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়েছিলেন। তাঁর মেরুদণ্ডেও চোট লেগেছে। মানিকতলা ইএসআই হাসপাতাল থেকে পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বাইপাস সংলগ্ন এক বেসরকারি হাসপাতালে।
কিন্তু বাসের চালক কী ভাবে ভুল রাস্তায় নিয়ে গেলেন? পুলিশ সূত্রের খবর, সাধারণত ওই রুটে যাঁরা বাস চালান, তাঁরা জানেন আন্ডারপাস দিয়ে বড় গাড়ি যায়। কিন্তু ওই চালক এই রুটে এ দিন প্রথম বলেই সিএসটিসি কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছেন। তিনি জানতেন না ওখানে রেল গার্ড রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy