Advertisement
০২ মে ২০২৪
Calcutta High Court

অবৈধ ক্লাব ভাঙতে না পারায় পুলিশ, পুরসভাকে তীব্র ভর্ৎসনা হাই কোর্টের

বিধাননগর পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপট্টিতে আদিত্য স্মৃতি সঙ্ঘ নামে একটি ক্লাব আছে। যার সভাপতি ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি জয়দেব নস্কর।

Calcutta high court

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৫১
Share: Save:

খাস কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও বিধাননগরের নয়াপট্টিতে একটি বেআইনি ক্লাব ভাঙতে পারেনি পুলিশ-পুরসভা। সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়া ও নিগ্রহের ঘটনাতেও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তা নিয়েই এ বার বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে তিরস্কার সইতে হল বিধাননগরের পুলিশ ও পুর প্রশাসনকে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সিংহ তাদের ‘শেষ সুযোগ’ দিয়ে বলেছেন যে, আগামী ১৯ মার্চের মধ্যে ওই নির্মাণ ভাঙতে হবে। তা না হলে পুলিশের বদলে তিনি নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দায়িত্ব দিতে পারেন বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি। শুধু তা-ই নয়, আদালতের নির্দেশ পালনে পুলিশ-পুরসভার কত দূর সদিচ্ছা আছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

বিধাননগর পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপট্টিতে আদিত্য স্মৃতি সঙ্ঘ নামে একটি ক্লাব আছে। যার সভাপতি ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি জয়দেব নস্কর। একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ক্লাবটির নির্মাণকে বেআইনি বলে ঘোষণা করেছিল হাই কোর্ট। পুরসভাকে সেই নির্মাণ ভাঙতে বলা হয়েছিল। সেই কাজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং পুরসভাকে সাহায্যের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল পুলিশকে। মামলাকারী বাপ্পা প্রামাণিকের আইনজীবী পার্থ চক্রবর্তী এবং পৌলোমী দত্ত তাই আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করেন। সেই মামলায় এ দিন পুরসভা ও পুলিশের কৌঁসুলি কোর্টে জানান, নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে বাধা পেয়েছেন পুরসভা এবং পুলিশকর্মীরা। পুলিশের গায়ে কেরোসিন ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই ফিরে আসা হয়েছে। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, তা হলে কি এ ভাবেই আদালতের নির্দেশ পালন না করে ফেলে রাখা হবে? লোকজন বাধা দেবে এবং পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবে? প্রসঙ্গত, বুধবার হাওড়ার ঘুসুড়িতে একটি বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে না পারায় একই ভাবে পুলিশকে তিরস্কার করেছিলেন বিচারপতি সিংহ।

এ দিন পুলিশ এবং পুরসভার বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার জন্য পদক্ষেপ করা হবে না, সেই প্রশ্নের উত্তরে দু’পক্ষই ‘শেষ সুযোগের’ আর্জি জানায়। বিচারপতি অবশ্য প্রশ্ন করেন, তা হলে এত দিন প্রশাসন কী করছিল? পুলিশের উপরে হামলার ঘটনায় এফআইআর করা হলেও কত জন গ্রেফতার হয়েছেন, তার জবাব চান বিচারপতি। যার সদুত্তর পুলিশ দিতে পারেনি।

অনেকেই অবশ্য বলছেন যে, বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে জনগণের বাধাকে অজুহাত হিসাবে খাড়া করে পুলিশ-প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলার অবনতির দোহাই দিয়ে প্রকারান্তরে বেআইনি কাজকেই স্বীকৃতি দেয়। নয়াপট্টির ওই ক্লাবের পিছনে অবশ্য আরও একটি প্রশ্ন উঠেছে। প্রভাবশালী তৃণমূল পুরপ্রতিনিধির জন্যই কি ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ পন্থা নিয়েছে
বিধাননগর পুলিশ? পুলিশকে মারধর করা হলেও বিধাননগরের পুলিশকর্তারা ‘তদন্ত চলছে’ বলেই কার্যত দায় সারছেন। তবে, এ দিন আদালত যা বলেছে, তাতে শেষমেশ পুলিশ-পুরসভা ওই ক্লাব ভাঙতে তৎপর হয় কি না, তা নিয়েও জনমানসে চর্চা শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Bidhannagar Police KMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE