Advertisement
০৬ মে ২০২৪

অ্যাপ ক্যাবে ক্যামেরা নিয়ে মামলা

অ্যাপ-নির্ভর গাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগালে যাত্রীদের গোপনীয়তা নষ্ট হবে বলে সোমবার আদালতে জানালেন চালকেরা। কলকাতা হাইকোর্টে অ্যাপ-নির্ভর সংস্থা উবের-এর বক্তব্য, যে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য তাদের আওতাভুক্ত গাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে বলছে, সেই বিজ্ঞপ্তি জারির এক্তিয়ার রাজ্যের নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪৬
Share: Save:

অ্যাপ-নির্ভর গাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগালে যাত্রীদের গোপনীয়তা নষ্ট হবে বলে সোমবার আদালতে জানালেন চালকেরা। কলকাতা হাইকোর্টে অ্যাপ-নির্ভর সংস্থা উবের-এর বক্তব্য, যে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য তাদের আওতাভুক্ত গাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে বলছে, সেই বিজ্ঞপ্তি জারির এক্তিয়ার রাজ্যের নেই।

পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য মোটরযান বিধির সংশোধন করা হয়েছে ২০১৫ সালের ১৬ অক্টোবর। সেই সংশোধনীর বলে ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর অ্যাপ-নির্ভর গাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, চলতি বছরের ৫ এপ্রিল অ্যাপ-নির্ভর সংস্থাগুলির সঙ্গে পুলিশ, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ও পরিবহণ দফতরের বৈঠক হয়। সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। গত ২৭ জুলাই পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে সংস্থাগুলি আশ্বাসও দেয়, তারা গাড়িতে ওই ক্যামেরা লাগাবে। তা সত্ত্বেও উবের এখনও তা লাগায়নি। উল্টে বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে।

ওই কর্তা জানান, কয়েকটি সংস্থার গাড়িতে ওই ক্যামেরা লাগানো শুরু হয়েছে। সেই কারণে তাদের সাময়িক ভাবে যে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, তার মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়ানোও হয়েছে। উবের-এর ক্ষেত্রে ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর।

দায়ের হওয়া দু’টি মামলারই এ দিন শুনানি ছিল বিচারপতি তাপস মুখোপাধ্যায়ের আদালতে।

চালকদের আইনজীবী সুরেন্দ্রকুমার কপূর এবং উবের-এর আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতে জানান, প্রায় সব ক্ষেত্রে গাড়ির মালিক চালকেরাই। ক্যামেরা লাগানো হলে যাত্রীরা গোপনীয়তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় অ্যাপ ক্যাবে চড়বেন না। ফলে রোজগারহীন হবেন চালকেরা। সুরেন্দ্রকুমার আরও জানান, কলকাতা ও তার লাগোয়া এলাকায় ৫০ হাজারের বেশি ট্যাক্সি চলে। রাজ্য তাদের ক্ষেত্রে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো বাধ্যতামূলক করছে না। একই ভাবে বাসে, মিনিবাসেও ওই ক্যামেরা বসানো উচিত।

আইনজীবীরা আরও জানান, কেন্দ্রীয় সরকার তাদের ১৯৮৮ সালের মোটরযান বিধি সংশোধনী আনতে চায় বলে সংসদে জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার যদি সংশোধনী আনে, তা হলে রাজ্যের সংশোধনী কার্যত বাতিল হয়। তা ছাড়া ১৯৮৮ সালের আইনে অ্যাপ-নির্ভর কোনও সংস্থার অস্তিত্ব নেই। সৌমেন্দ্রনাথবাবু জানান, তাঁর মক্কেলের সংস্থা পৃথিবীর ২০ দেশের ১০০টি শহরে ব্যবসা করে। কোথাও গাড়িতে ওই ক্যামেরা লাগানো হয়নি। যে নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁর মক্কেলের সংস্থাকে গাড়িতে ওই ক্যামেরা লাগাতে বলা হচ্ছে, যাত্রীদের সেই নিরাপত্তা অনেক বেশি দেয় উবের। যে পদ্ধতিতে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ রাজ্য করতে চাইছে, তা অবাস্তব এবং প্রযুক্তিগত ভাবে ত্রুটিপূর্ণ।

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্র জানান, প্রায় দিনই অ্যাপ নির্ভর গাড়িতে যে ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে বা গাড়ির যাত্রীদের যে অভিজ্ঞতা হচ্ছে, তার জেরেই ওই বিজ্ঞপ্তি। সেই বিজ্ঞপ্তি জারির এক্তিয়ার রাজ্যের রয়েছে।

এ দিন মামলার শুনানি শেষ হয়নি। আজ, মঙ্গলবার ফের শুনানি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uber CCTV
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE