ভাঙচুরের পরে। বুধবার, গড়িয়ায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
অটোচালক এবং স্থানীয় হকারদের সংঘর্ষে বুধবার দুপুরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল গড়িয়ার পাঁচ নম্বর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা। নেতাজি নগর এবং পাটুলি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রথমে গোলমাল থামায়। পরেও দফায় দফায় ভাঙচুর চলে। ফুটপাতের পসরা হ্যাঁচকা টানে ছড়িয়ে পড়ে চতুর্দিকে। মাটিতে গাছ পিষে, চিনামাটির টব আছড়ে ভেঙে ফেলতে দেখা গেল এক দলকে। অন্য পক্ষ তখন বাঁশ, রড, ভোজালি নিয়ে উন্মত্তের মতো ভাঙছে স্ট্যান্ডে দাঁড়ানো পর পর অটোর কাচ। রেহাই পায়নি কানুনগো পার্কের গলির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা অটোও। এই গোলমালে এলাকায় যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়।
বিকেলের পর থেকে শুনশান হয়ে যায় এলাকা। গড়িয়া এবং গোল পার্ক থেকে মোট চারটি রুটে অটো চলাচল বন্ধ হওয়ায় যাত্রীদের চূড়ান্ত হয়রান হতে হয়। দোষীদের শাস্তি এবং সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত রুট বন্ধ রেখে বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়েছেন শাসকদলের অটো ইউনিয়নের সদস্যেরা। দু’পক্ষই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেনি বলেই জানা গিয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে গড়িয়া ৫ নম্বর বাস স্ট্যান্ডের সামনে অটোচালকদের বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা।
কিন্তু এই খণ্ডযুদ্ধের কারণ কী?
পাঁচ নম্বর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন পাঁচিলের ধারে শাসকদলের অটো ইউনিয়নের শহিদ বেদী রয়েছে। ইউনিয়ন সূত্রের খবর, ১০ বছরের পুরনো ওই বেদীর সামনেই তাদের রাজনৈতিক সমাবেশ হয়। গত ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসও পালিত হয়েছে সেখানে। অভিযোগ, আপত্তি সত্ত্বেও সেখানে একাধিক হকারকে সম্প্রতি বসার সুযোগ করে দিয়েছে শাসকদলের হকার ইউনিয়ন। অভিযোগ, এ দিন কালীপদ
ঘরামি নামে এক ব্যক্তির শহিদ বেদী সংলগ্ন দোকান হুমকি দিয়ে তুলে দেওয়া হয়। এর পরেই বেলা ১২টা নাগাদ গড়িয়া খালপাড় থেকে এক দল যুবক অটো স্ট্যান্ডে পৌঁছে ভাঙচুর চালান। কয়েক জন চালককেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
ওই খবর রটতেই ফুটপাতের দোকানে ভাঙচুর চলে। নেতাজি নগর থানার পুলিশ সেই গন্ডগোল মিটিয়ে অটো চালু করে। বিকেলে পদ্মশ্রী এলাকা থেকে এক দল লোক বাঁশ, লাঠি, রড, ভোজালি নিয়ে অটো চালকদের আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ। ১০টি অটোয় ভাঙচুর চলে। গোলমালে দু’পক্ষেরই লোক আহত হয়েছেন।
শাসকদলের হকার ইউনিয়নের নেতা ভাস্কর সিংহ বলেন, ‘‘সরকার হকার উচ্ছেদের বিরুদ্ধে। অথচ এক জন হকারকে জোর করে তুলে দেওয়া হয়েছে। কুড়ি-বাইশটি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। আমরা কথা বলতে গিয়েছিলাম। ওঁরাই হামলা চালিয়েছেন।’’ ওই রুটের অটো ইউনিয়নের নেতা দেবরাজ ঘোষের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘টাউন ভেন্ডিং কমিটির সুপারিশ ছাড়া নতুন হকার বসানো বন্ধ। ওঁরা শহিদ বেদীর সামনে হকার বসিয়ে সমস্যা তৈরি করেছেন। সেটা নিয়ে আপত্তি
করলে আমাদের সদস্যদের মারধর আর অটো ভাঙচুর করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy