গতিবৃদ্ধির লক্ষে ই এম বাইপাসের প্রায় থমকে থাকা প্রকল্প ‘বিআরটিএস’ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রের খবর, ডিসেম্বেরের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে তদারকি সংস্থা কেএমডিএ-কে।
উল্টোডাঙা থেকে গড়িয়া অবধি প্রায় ১৬ কিলোমিটার অংশে ‘ছয় লেন’ পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ চলে ২০১১ পর্যন্ত। ইতিমধ্যে ২০১০-এ বাম আমলে ‘বাস র্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম’ অর্থাৎ ‘বিআরটিএস’ নামে এই প্রকল্পের পরিকল্পনা হয়। মেলে কেন্দ্রীয় সাহায্যের ছাড়পত্র। ঠিক হয়, বাইপাসের পূর্ব-পরিকল্পিত ‘ছয় লেন’-এর দু’পাশে একটি করে ‘লেন’ হবে বাসের জন্য। ২৫০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্ধেক করে অর্থ দেওয়ার কথা।
রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবাদলের পর ২০১১-র ১১ নভেম্বর বণিকসভার বৈঠকে তৎকালীন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সৌগত রায় প্রকল্প রূপায়ণের গুরুত্ব ব্যাখ্যা বলেন, ‘‘মেট্রো রেলে যা খরচ হয়, তার ১০ শতাংশ বরাদ্দে কোনও শহরে বিআরটিএস করা সম্ভব। এটা জাতীয় স্তরে চূড়ান্ত একটা সফল প্রকল্প।’’ কিন্তু এর প্রায় ৪০ মাস বাদেও প্রকল্পের কাজ এগিয়েছে সামান্যই।
মূল অংশের কাজ তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথমত, বর্তমান বাইপাসের দু’পাশের নিচু জমি ভরাট করা। দ্বিতীয়ত, ভরাট করা অংশে রাস্তা তৈরি। তৃতীয়ত, বাইপাসের বিভিন্ন সেতু ও কালভার্ট এই ‘আট লেনের’ মতো প্রসারিত করা। দু’টি ভাগের কাজ দু’টি নামী ঠিকাদারি সংস্থাকে দেওয়া হয়। কিন্তু কাজ অনেকটাই বাকি।
প্রকল্প রূপায়িত হল কতটা? অকুস্থল ঘুরে দেখা গেল, অনেক জায়গায় নিচু অংশ ভরাটের কাজ হয়নি। কিছু অংশে কাজ মার খাচ্ছে দখলদার থাকায়। প্রকল্প-পরিকল্পনায় (ডিপিআর) বাইপাসের পাঁচটি কালভার্ট সম্প্রসারণের কথা থাকলেও এই কাজ অনেকটাই বাকি। বাধা তৈরি করেছে কালিকাপুরে একটি দ্বিতল ‘বিতর্কিত’ বাড়ি। কেএমডিএ-র এক কর্তার বক্তব্য, বহু বছর ধরে বাড়িটি নিয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে। যদিও এই জটিলতার নিষ্পত্তিতে প্রশাসনের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন
তিনি নিজেই।
কেন এই সমস্যা? মন্তব্য করতে চাননি নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব দেবাশিস সেন। তবে কেএমডিএ সূত্রের খবর, অল্প কিছু জায়গায় দখলদার থাকায় কাজ আটকে। কিছু অংশে পরিকল্পনা রূপায়ণ বাধা পেয়েছে পানীয় জলের গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ থাকায়। দু’টি কালভার্টের গা-ঘেঁষে বসানো জলের বড় পাইপ সরানোটাও যে জটিল কাজ বলে দাবি কেএমডিএ কর্তাদের। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে ও পড়ে বেশ কয়েক মাস কেন্দ্রীয় অর্থ বরাদ্দের গতি মন্থর হয়ে যাওয়ায় কাজ মার খায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাইপাসের দু’পাশে বিদ্যুতের বড় ট্রান্সমিশন টাওয়ার সরানো নিয়ে কেএমডিএ-র সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুত্ বন্টন কোম্পানি লিমিটেড অর্থাত্ এসইডিসিএল-এর কর্তাদের দফায় দফায় বৈঠকের পরেও জট রয়ে গিয়েছে। নিউ গড়িয়া থেকে রাজারহাট হয়ে দমদম পর্যন্ত মেট্রো প্রকল্প, চিংড়িঘাটার উড়ালপুল এবং পরমা উড়ালপুল প্রভৃতির জন্যও মার খেয়েছে বিআরটিএসের রূপায়ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy