Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

অভিনব কায়দায় সাইবার চুরি

গত মাসে নিউ টাউনের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় হানা দেন সিআইডি-র সাইবার অপরাধ দমন শাখার অফিসারেরা। গ্রেফতার করা হয় রিচা পিপলবা, বিক্রমজিৎ পান্ধার, আকাশ সিংহ, নীলেশ রাস্তোগি ও শুভ্রজিৎ পাল নামে পাঁচ অভিযুক্তকে। তদন্তকারীরা জানান, রিচাই ওই চক্রের মূল চাঁই।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ১২:১৫
Share: Save:

বিদেশি নাগরিকদের ঠকিয়ে টাকা হাতানোর নানা ছক ধরা পড়েছে বারবার। সম্প্রতি নিউ টাউন থেকে ধরা পড়া সাইবার জালিয়াতদের আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে আরও এক অভিনব পদ্ধতির খোঁজ মিলল বলে দাবি সিআইডি-র।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, সুই়ডেন, ডেনমার্কের নাগরিকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া বিদেশি মুদ্রা সরাসরি নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নিতেন না অভিযুক্তেরা। তার বদলে লন্ডনের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ঘুরপথে এ দেশে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি নাগরিকের মাধ্যমে টাকা আদায় করা হতো। এ নিয়ে বিশদে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এই টাকা লেনদেনের জন্য নতুন ভাবে মামলায় জড়ানো হতে পারে ওই অভিযুক্তদের। এই টাকা কোথাও পাচার করা হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

গত মাসে নিউ টাউনের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় হানা দেন সিআইডি-র সাইবার অপরাধ দমন শাখার অফিসারেরা। গ্রেফতার করা হয় রিচা পিপলবা, বিক্রমজিৎ পান্ধার, আকাশ সিংহ, নীলেশ রাস্তোগি ও শুভ্রজিৎ পাল নামে পাঁচ অভিযুক্তকে। তদন্তকারীরা জানান, রিচাই ওই চক্রের মূল চাঁই। ২০১৪ সাল থেকে একাধিক নামে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা খুলে বিদেশি নাগরিকদের পরিষেবা দেওয়ার নাম করে প্রতারণা করত তারা। সিআইডি-র এক কর্তা বলেন, ‘‘পরিষেবা দেওয়ার নাম করে সফটঅয়্যারের মাধ্যমে বিদেশিদের কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হতো। তাতে গোলমাল পাকিয়ে বিদেশি মুদ্রা হাতিয়ে নেওয়া হতো।’’

একই কায়দায় অপরাধের জন্য শুক্রবার বেকবাগানের একটি অফিসে হানা দিয়ে শরাফত আলি নামে এক যুবককে ধরা হয়েছে। গত বছর সেক্টর ফাইভ থেকে একই ধরনের অপরাধের জন্য চার জনকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। লালবাজার সূত্রের খবর, শরাফত মূলত মার্কিন নাগরিকদের ঠকাতেন বলে অভিযোগ। তবে তাঁর ক্ষেত্রে এখনও ঠকিয়ে নেওয়া টাকার হিসেব ও পদ্ধতি বিশদে জানা যায়নি।

কী ভাবে কাজ করতেন রিচা? সিআইডি-র দাবি, লন্ডনের একটি সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে বলা হতো বিদেশি নাগরিকদের। সেটি ব্রিটেনের একটি সংস্থার নামে খোলা। তারা রিচার পরিচিত এবং ওই প্রতারণা চক্রের সদস্য। সেই অ্যাকাউন্ট অনলাইনে রিচারাই নিয়ন্ত্রণ করতেন। লন্ডন থেকে প্রথমে সেই টাকা আসত বাংলাদেশে। সেখান থেকে মধ্যমগ্রামের একটি ব্যাঙ্কে। ওই ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টটি বাংলাদেশের বাসিন্দা এক দম্পতির। ওই দম্পতির মেয়ে রিচার সংস্থাতেই কাজ করতেন। সিআই়ডি সূত্রের খবর, প্রভাবশালীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে রিচার। তিনি গ্রেফতার হওয়ার পরে রাজ্যের এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে তদ্বির করার চেষ্টা হয়েছিল।

সিআইডি সূত্রে খবর, ধৃতেরা ঠিক কত টাকার জালিয়াতি করেছে, তার হিসেব এখনও শেষ হয়নি। ফলে জালিয়াতির টাকা কোথাও পাচার করা হয়েছে কি না, এখনও তা নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE