মরণফাঁদ: বর্ষা শুরু হতেই শোচনীয় হাল শহরের বহু রাস্তার। ডায়মন্ড হারবার রোডে গর্তে জমে আছে বৃষ্টির জল। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
খাতায়-কলমে বর্ষা চলে এলেও সেই মেজাজ এখনও দেখা যায়নি। তার আগেই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে শহরের পুর্ব থেকে পশ্চিম বা উত্তর থেকে দক্ষিণের একাধিক রাস্তা হয়ে উঠেছে মরণফাঁদ। বড় বড় গর্ত তো আছেই, তার দোসর হয়েছে সেখানে জমে থাকা জল। অনেক সময়ে জলের কারণে গর্ত ভাল ভাবে বোঝাও যাচ্ছে না। সেই ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়েই চলেছে বাস, লরি এবং অন্য যানবাহন। প্রতি মুহূর্তে থেকে যাচ্ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
বেলেঘাটা-ইএম বাইপাস, মানিকতলা মেন রোড, উল্টোডাঙা মেন রোড বা দক্ষিণের তারাতলা, ডায়মন্ড হারবার রোড— ছবিটা সব জায়গায় একই। শহরের কোন কোন রাস্তার অবস্থা খারাপ, তা জানতে ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি-দের থেকে তালিকা চাওয়া হয়েছিল ডিসি (ট্র্যাফিক)-এর তরফে। লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি-রা তাঁদের এলাকার রাস্তার একটি তালিকা ইতিমধ্যেই জমা দিয়েছেন। পুলিশ আরও জানাচ্ছে, ভগ্ন-পথের সংস্কার করতে তাদের তরফে প্রায় দু’হাজার রাস্তার তালিকা কলকাতা পুরসভাকে দেওয়া হয়েছে। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘আমরা ওই তালিকা পেয়েছি। সেই মতো কাজও শুরু হয়েছে।’’
সপ্তাহ দুই আগে তেলেঙ্গাবাগানের কাছে উল্টোডাঙা মেন রোডে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল স্কুটি আরোহী দুই কিশোরের। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দুর্ঘটনার মূলেও ছিল একটি বড় গর্ত। কিন্তু অভিযোগ, দুর্ঘটনার পরে উল্টোডাঙা ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে গর্তটি সারানোর জন্য কলকাতা পুরসভাকে জানানো হলেও এখনও পর্যন্ত সেই কাজ হয়নি। পুলিশের একটি সূত্রই জানাচ্ছে, শহরের
বিভিন্ন এলাকায় ট্রাম লাইন সারাইয়ের কাজ হয়েছে। কিন্তু সেই লাইন সংলগ্ন রাস্তা থেকে গিয়েছে ভাঙাচোরা। যা বিপদ বাড়াচ্ছে। মানিকতলা মেন রোড বা এপিসি রোডে ট্রাম লাইন সংলগ্ন রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় সব চেয়ে খারাপ অবস্থা মোটরবাইক চলাচলে। উল্টোডাঙা ট্র্যাফিক গার্ডের এক সার্জেন্টের কথায়, ‘‘ট্রাম লাইন লাগোয়া রাস্তা সারাই না হওয়ার জন্য পদে পদে বিপদের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।’’
ট্র্যাফিক সূত্রের খবর, উল্টোডাঙা ও কাঁকুড়গাছির আন্ডারপাসের অবস্থাও তথৈবচ। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার ধারে পুরসভার কল বসানো আছে। সেগুলি থেকে সারা দিন-রাত জল পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিটুমিন। ফলে এক বার কোনও রাস্তা সারাই করা হলেও ফের কিছু দিনের মধ্যেই সেটির অবস্থা হয়ে উঠছে শোচনীয়।’’
শহরের বেহাল রাস্তার সংস্কার সাধনে ফি বছর বর্ষার আগে ও পুজোর আগে কলকাতা পুরসভা এবং পুলিশের আধিকারিকের মধ্যে বৈঠক হয়। ডিসি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমার বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশের তরফে রাস্তার তালিকা পুরসভাকে দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে, আপৎকালীন সমাধান হিসেবে বর্ষার মরসুমে তাপ্পি মারার কাজ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy