টিফিন খাওয়া নিয়ে স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে মন কষাকষি। যার ফলে মনখারাপ নিয়েই বাড়ি ফেরা। পরে ষষ্ঠ শ্রেণির সেই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল তার ঘর থেকে। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পর্ণশ্রীর ডক্টর এ কে পাল রোডে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ১১ বছরের ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। তার স্কুলব্যাগে একটি খাতা পাওয়া গিয়েছে, যেখানে বন্ধুদের সঙ্গে গোলমালের উল্লেখ রয়েছে। সেটিকেই ‘সুইসাইড নোট’ বলে মনে করছে ওই ছাত্রীর পরিবার ও পুলিশ। সেখানে সে লিখেছে, ‘‘আমি চলে গেলে সবার ভাল হবে। দিদির বিয়ে তো দেখতে পারব না। উপর থেকে দেখব।’’ ওই ছাত্রী দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলে পড়ত।
ছাত্রীর পরিবার সূত্রের খবর, সোমবার বিকেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে ওই কিশোরী তার মাকে বলে, ‘‘আমরা সবাই টিফিন ভাগ করে খাচ্ছিলাম। পরে ওরা পয়সা দিয়ে আচার কিনে খাচ্ছিল। তখন ওদের কাছে গেলে আমাকে ওরা অপমান করে তাড়িয়ে দেয়।’’
ওই ছাত্রীর পরিবারের আরও দাবি, স্কুল ছুটি হলে সহপাঠীদের কয়েক জনের অভিভাবক তাকে বকুনি দেন বলেও জানিয়েছিল ওই ছাত্রী। এমনকী, মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষিকার কাছে তাঁরা নালিশ করবেন বলেও অভিভাবকেরা মেয়েটিকে হুঁশিয়ারি দেন। তবে মৃত ছাত্রীর মায়ের দাবি, পরে তাঁর উদ্যোগে এক সহপাঠী ও তার মায়ের সঙ্গে মেয়ের ফোনে কথা হয়। যাতে তিনি ভেবেছিলেন, বিষয়টি মিটে গিয়েছে। ওই ছাত্রীর মায়ের কথায়, ‘‘মেয়েকে বোঝাই, বন্ধুদের মধ্যে এ রকম ছোটখাটো ঘটনা ঘটেই থাকে। মনখারাপ করার কিছু নেই।’’
আরও পড়ুন:সংবর্ধনা পেয়ে কেঁদে ফেললেন জবা, কৃষ্ণারা
ওই মহিলা ও তাঁর বড় মেয়ে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বাজারে যান। সওয়া ন’টা নাগাদ বাড়ি ফিরে দেখেন, শোয়ার ঘরে সিলিং ফ্যান থেকে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে ছোট মেয়ে ঝুলছে। ওই কিশোরীকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ছাত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে মঙ্গলবার তার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে যান স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও আরও কয়েক জন শিক্ষিকা। প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘খারাপ খবরটা আমি সোমবার রাতে পাই। মঙ্গলবার সকালে স্কুলে গিয়ে জানতে পারি যে, ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার যে সহপাঠীদের গোলমাল হয়েছিল, তাদের এক জনকে সে আত্মহত্যা করবে বলে জানিয়েছিল।’’ মঙ্গলবার স্কুলে ডেকে পাঠানো হয় ওই সহপাঠীদের অভিভাবকদের। ঘটনার পরে মৃত ছাত্রীর সহপাঠীরা ও তাদের বাড়ির লোকজনও শোকগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy