Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রুদ্ধ পথ ফিরে পাওয়ায় স্বস্তি নারকেলডাঙায়

আশপাশের তিনটে দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাঁর ব্যবসাও প্রায় লাটে ওঠার জোগাড় হয়েছিল। তবু তিনি দাঁতে দাঁত চেপে পড়ে ছিলেন নিজের দোকানে। রোজ দোকান খুলতেন। ভাবতেন, কবে ফের খুলে যাবে সামনের নারকেলডাঙা মেন রোড? যাতে দোকানটা আবার আগের মতো জমে উঠতে পারে।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো।—ফাইল চিত্র।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০১:৪৯
Share: Save:

আশপাশের তিনটে দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাঁর ব্যবসাও প্রায় লাটে ওঠার জোগাড় হয়েছিল। তবু তিনি দাঁতে দাঁত চেপে পড়ে ছিলেন নিজের দোকানে। রোজ দোকান খুলতেন। ভাবতেন, কবে ফের খুলে যাবে সামনের নারকেলডাঙা মেন রোড? যাতে দোকানটা আবার আগের মতো জমে উঠতে পারে।

আট বছরের প্রতীক্ষার অবসান হল ফুলবাগান মোড়ের ফাস্ট ফুডের দোকানি ধ্রুবজ্যোতি দে-র। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের জন্য বন্ধ থাকা নারকেলডাঙা মেন রোডের কাদাপাড়া থেকে ফুলবাগান মোড় হয়ে রাজাবাজার পর্যন্ত অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে রবিবার থেকে। যে কারণে হাসি ফুটেছে তাঁর মুখে।

শুধু ধ্রুবজ্যোতিই নন, নারকেলডাঙা মেন রোডের আশপাশের বাসিন্দারাও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। সাধারণ দোকানি থেকে বি সি রায় শিশু হাসপাতালের আসা লোকজন বা এলাকার স্কুল-কলেজে আসা ছাত্রছাত্রীরা— স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন প্রত্যেকেই। বিস্তীর্ণ ওই এলাকার বাসিন্দাদের এখন একটাই প্রশ্ন, ওই রাস্তায় ফের কবে বাস চালু হবে?

নারকেলডাঙা মেন রোডে কাদাপাড়া থেকে রাজাবাজার পর্যন্ত বাস রুট দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় এলাকার বহু মানুষ তাঁদের রোজকার যাতায়াতের পথই পাল্টে ফেলতে বাধ্য হয়েছিলেন। ফুলবাগানের বাসিন্দা অনিন্দ্য মিত্র যেমন বললেন, ‘‘নারকেলডাঙা মেন রোড ধরে হাওড়াগামী বিভিন্ন বাস আমাদের এই রাস্তা দিয়ে যেত। গত আট বছর ধরে হাওড়া যাওয়ার জন্য ফুলবাগান-হাওড়া মিনিই একমাত্র ভরসা ছিল। এ বার চাই, ওই বাসরুটগুলিও যেন তাড়াতাড়ি ফিরে আসে।’’ এলাকার আর এক বাসিন্দা অনুপ মল্লিকের কথায়, ‘‘আশা করি, আগের মতোই রাজাবাজার থেকে সল্টলেক পর্যন্ত অটোয় দ্রুত যেতে পারব।’’

এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গত আট বছরে বাড়িতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত বাড়ির কাছে আসতে পারত না। এলাকার বাসিন্দা অনুপম নন্দী বললেন, ‘‘আমার ঠাকুরমা অসুস্থ ছিলেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দরকার ছিল। বাড়ির সামনে অ্যাম্বুল্যান্স না ঢোকায় স্ট্রেচার পাইনি। তার পরে চাদরে মুড়ে রাস্তার মোড়ে নিয়ে গিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে ওঠাতে হয়েছে।’’ এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গ্যাস-কাটার দিয়ে কাটা হচ্ছে ফুটপাতের ব্যারিকেড।

নারকেলডাঙা মেন রোড খুলে দেওয়া হলেও এখনও ওই রাস্তা দিয়ে শুধু ছোট প্রাইভেট গাড়ি, ট্যাক্সি এবং অটো চলাচল করছে। কারণ, ফুলবাগান চারমাথা মোড়ে মেট্রোর কাজ হওয়ায় এখনও সেখানে ব্যারিকেড রাখা আছে। ওই ব্যারিকেড না খুললে ফুলবাগান মোড় পুরোপুরি বাধাহীন হবে না। চিংড়িঘাটা ট্র্যাফিক গার্ডের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘মেট্রোর কাজ পুরোপুরি শেষ না হলে ব্যারিকেড খোলা যাবে না। তাই কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত ফুলবাগান চারমাথা মোড়ের একটু আগে ঘুরিয়ে বাস চালানো হবে।’’ মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দু’মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। তার পরে রাস্তা পুরোপুরি খুলে দেওয়া হবে। ট্র্যাফিক কর্তারা জানিয়েছেন, ফুলবাগান চারমাথার মোড়ে আগের মতোই আইল্যান্ড করা হবে। নতুন ট্র্যাফিক সিগন্যাল লাগানোর কাজও শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road Metro East-West
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE