বইমেলার উদ্বোধনী মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বলিভিয়ার লেখক মাহেলা বোদোয়ার। সোমবার। ছবি: সুদীপ আচার্য।
তিনি কলম ধরেন, আবার তিনিই হাতুড়ি মারেন। সোম-সন্ধ্যায় ৪০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার আসর স্মরণীয় থাকল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতুড়ির ঘায়েই।
ঠিক তিন বার হাতুড়ি মেরে বলিভিয়ার লেখক মাহেলা বোদোয়ার রীতিমাফিক বইমেলার উদ্বোধন করেছিলেন। বইমেলার নতুন ‘থিম সং’ শুরু হব-হব করছে। সবাইকে থামিয়ে এগিয়ে এলেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘‘৪০তম বইমেলায় শুধু তিন বার হাতুড়িতে কী হয়! বাকি ৩৭ বার আমি হাতুড়ি মারছি।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে নাগাড়ে হাতুড়ি পেটাতে দেখে হেসে কুটিপাটি মাহেলা।
কলমের কেরামতিতেও সব লেখককে ছাপিয়ে আক্ষরিক অর্থেই দশ গোল দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্বোধনী-আসরে নিজের হাতে তাঁর সদ্য লেখা দশ-দশটি বই প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে তাঁর বহুলচর্চিত স্বরচিত উদ্ধৃতি-সংকলন ‘কথাঞ্জলির’র ইঙ্গানুবাদ বলিভিয়ার লেখকের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিলেন তিনি।
রাজ্যে বিরোধী-শিবিরকে এক হাত নিতেও এক গুচ্ছ বইয়ের সম্ভার প্রকাশিত হয় এ দিন। মমতার নিজের লেখা বইয়ে পাহাড়, জঙ্গলমহল, বিশ্ব বাংলা-ব্র্যান্ড নির্মাণের কাহিনি বাদ দিয়েও প্রকাশিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রকাশিত ‘চার বছরের ইতিকথা, উদ্যোগ ও সাফল্য’! মঞ্চ থেকে মমতা অবশ্য দাবি করেন, ‘‘চার কেন, ওটা পাঁচ বছর হবে।’’ বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে বইমেলার মঞ্চে সরকারি তথা শাসক দলের নেত্রীর সাফল্য ঘোষণা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠছে। বিশেষত, সংগঠকেরা যখন দাবি করেছিলেন মেলা হবে রাজনীতির ছোঁয়াচবিহীন। মেলার উদ্যোক্তা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড-এর সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, কোনও প্রকাশক সরকারের বিরুদ্ধে কোনও বই প্রকাশ করলেও বাধা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘এই তো নন্দীগ্রাম নিয়ে একটা বই মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ করলেন। তাতেও সব কথা ওঁর পক্ষে নয়। তবে উনি খুবই উদার এ বিষয়ে।’’
এ দিন উপস্থিত ছিলেন কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুহিতানন্দ প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy