—প্রতীকী চিত্র।
স্কুলের গণ্ডিও পার হয়নি। কিন্তু তার আগেই কি পড়ুয়াদের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে? কথা বলার সময়ে কি কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ করা যাচ্ছে? এই অস্বাভাবিক আচরণের কারণ হিসাবে স্কুলপড়ুয়াদের মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার প্রবণতাকেই দায়ী করছে কেন্দ্রীয় সরকারের নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরো। তাদের মতে, স্কুলপড়ুয়ারাও অনেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। তাই কলকাতার কয়েকটি স্কুলে মাদক নিয়ে সচেতনতার বার্তা দিয়েছে তারা।
সম্প্রতি সরশুনার চিলড্রেন্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন হাইস্কুল ফর গার্লস এবং সন্তোষপুরের ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যাপীঠে যান নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর পূর্বাঞ্চলের ডিরেক্টর রাকেশ শুক্ল। সঙ্গে ছিলেন কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তারা। স্কুলগুলিতে গিয়ে রাকেশ জানান, স্কুল স্তর থেকেই মাদক সেবনের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। কারণ, স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যেও মাদকাসক্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
রাকেশ জানান, বর্তমানে এমন অনেক মাদক বেরিয়েছে, যা সেবন করলে সাধারণ মানুষ তা বুঝতেই পারবেন না। সাধারণ মাদকের মতো তাতে কোনও গন্ধ নেই। এমন মাদকের খপ্পরে পড়ে যাচ্ছে স্কুলপড়ুয়ারাও। তাদের মা-বাবারা বুঝতেও পারছেন না যে, ছেলে বা মেয়ে মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাই অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মিশতে হবে। তাদের মধ্যে কোনও আচরণগত পরিবর্তন দেখলে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মতো কথা বলতে হবে।
চিলড্রেন্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন হাইস্কুল ফর গার্লসের প্রধান শিক্ষিকা শর্বরী সেনগুপ্ত বললেন, ‘‘আমাদের স্কুলের পড়ুয়ারা মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে শপথ নেয়। শপথবাক্য পাঠ করার পরে তারা নিজেরা তো মাদক নেয়ই না, উল্টে সমাজে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করে। এর জন্য তাদের একটি শংসাপত্রও দেওয়া হয়।’’ শর্বরী জানান, স্কুলে ইকো ক্লাবের মতো আরও একটি ক্লাব খোলা হয়েছে। যাদের কাজই হল, স্কুলে এবং সমাজে মাদক-বিরোধী সচেতনতা তৈরি করা। এই ক্লাবের নোডাল অফিসার স্কুলের এক শিক্ষিকা এবং সদস্য স্কুলের চাইল্ড ক্যাবিনেটের কয়েক জন পড়ুয়া। শর্বরী বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের এই ক্লাবের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিয়ার জ়িন্দেগি’।’’
ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষিকা সর্বাণী সেন বলেন, ‘‘নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর মাদক থেকে শুরু করে তামাকজাত দ্রব্য নিয়ে সচেতনতার বার্তা আজকের দিনে খুবই প্রাসঙ্গিক। আমাদের পড়ুয়াদেরও মাদক নিয়ে সচেতন করে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। প্রথমে অনলাইনে শংসাপত্র দেওয়া হয়। তার পরে স্কুলের প্রায় ৩৫০ জন পড়ুয়ার হাতে এই শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। স্কুলে ও সমাজে সচেতনতা তৈরির জন্য একটি ক্লাব খোলা হয়েছে। এর মাধ্যমে শুধু নিজেরাই নয়, পাড়ার বড়দেরও মাদক ও তামাকজাত দ্রব্য বর্জন নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেবে পড়ুয়ারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy