Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

স্থানীয় বাজারে লম্বা লাইন, লাঠি পুলিশের

চাল, ডাল, চিনি, আনাজের সংগ্রহে এ দিন সকাল থেকে মানিকতলা, শ্যামবাজার, লেক মার্কেট, যদুবাবুর বাজার, গড়িয়াহাট বাজারের মতো জায়গায় চোখে পড়ে ক্রেতাদের লম্বা লাইন।

গিজগিজে: কাঁকুড়গাছির কাছে বাগমারি বাজারে ভিড়। বুধবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

গিজগিজে: কাঁকুড়গাছির কাছে বাগমারি বাজারে ভিড়। বুধবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০ ০৩:৪৯
Share: Save:

দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণার সময়ে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের কোনও ঘাটতি থাকবে না। কিন্তু কলকাতার বাজারগুলিতে বুধবারেই প্রায় হাহাকার শুরু হয়ে গিয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য। বড় লরি না চলায় স্থানীয় বাজারে জিনিসপত্র পাঠানো যাচ্ছে না বলে জানান পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা। কলকাতা এবং শহরতলির বিভিন্ন স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, জিনিসপত্রের পর্যাপ্ত সরবরাহ কত দিন বাজারে থাকবে তা নিয়ে তাঁরা নিশ্চিত নন। রাজ্য সরকারের তরফে অবশ্য এ দিন জানানো হয়েছে, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজার থেকে জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। এবং পাইকারি বাজারের মোটবাহকেরাও কাজ করতে পারবেন।

চাল, ডাল, চিনি, আনাজের সংগ্রহে এ দিন সকাল থেকে মানিকতলা, শ্যামবাজার, লেক মার্কেট, যদুবাবুর বাজার, গড়িয়াহাট বাজারের মতো জায়গায় চোখে পড়ে ক্রেতাদের লম্বা লাইন। কোথাও ক্রেতারা প্রয়োজন মতো জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে পেরেছেন। কোথাও সেই সুযোগ না পেয়ে ক্রেতাদের চেঁচামেচি করতেও শোনা গিয়েছে। অধিকাংশ বাজারেই ক্রেতারা কার্যত গায়ে গা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়েই জিনিসপত্র কিনতে বাধ্য হয়েছেন। কোথাও কোথাও আবার করোনার সংক্রমণ এড়াতে দোকানের বাইরে গোল দাগ কেটে দেওয়া হয়।

গড়িয়াহাটের এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, গত রবিবার অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে রুই-কাতলা বোঝাই ট্রাক শেষ বার এসেছিল। ওই মাছ শেষ হয়ে গেলে সমস্যা তৈরি হবেই। মানিকতলা মাছ ব্যবসায়ী সমিতির এক বিক্রেতা জানান, শহরে নিয়ে আসার পরিবহণ বন্ধ থাকায় খড়িবাড়ি, চিংড়িঘাটা, বানতলার মতো জায়গায় ভেড়িতে জাল ফেলছেন না জেলেরা। ফলে ভেটকি, তেলাপিয়া, চিংড়ি মাছের জোগানও এ বার কমতে পারে।

ভিন্‌ রাজ্য থেকে বড় লরি আসা ইতিমধ্যেই বন্ধ। রাজ্যের ভিতরেও বিভিন্ন বাজারে আনাজের লরি কম পৌঁছচ্ছে। কোলে বাজারের এক পাইকারি বিক্রেতা জানান, গাজর, এঁচোড় ভিন্‌ রাজ্য থেকে আসছে না। করলার মতো অনেক আনাজও স্থানীয় বাজারে পাঠানো যাচ্ছে না। এক বিক্রেতার কথায়, ‘‘দেড় থেকে দু’লক্ষ টাকার বিন্‌স ও ডাঁটা জমে রয়েছে।’’

এ দিন শ্যামবাজার বাজার থেকে দু’হাতে দু’টি বিরাট ব্যাগ ভর্তি করে বেরোচ্ছিলেন এক মধ্যবয়সি ক্রেতা। তিনি বলেন, ‘‘ঝুঁকি নিয়ে লাভ নেই। আজ একটু বেশি করে মাছ আর মুরগির মাংস কিনেছি। তাতে যত দিন চলে চলবে। অন্য দিনগুলি কিছু না পেলে নিরামিষ খেয়ে কাটানোর মতো বাজার করে রেখেছি।’’

নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহের এমন ছবি অনেক জায়গাতেই ধরা পড়েছে। হাওড়ার বাঁকড়া বাজারে মালপত্র কেনা নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মারপিট শুরু হয়ে যায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ দফায় দফায় লাঠি চালায়। চ্যার্টাজিহাট থানার সামনে পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে জোর করে বন্ধ করে দেয় মুদি ও চায়ের দোকান। কালীবাবুর বাজার, কদমতলা বাজার, সালকিয়ার হরগঞ্জ

বাজার-সহ হাওড়ার বিভিন্ন বাজারে পুলিশ বাধ্য হয় লাঠি উঁচিয়ে জমায়েত ভেঙে দিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE