শাস্তি: কড়াকড়ির মধ্যে অকারণে রাস্তায় বেরনোয় সাইকেলের টায়ারের হাওয়া খুলে দিচ্ছে পুলিশ। রবিবার, বারাসতের হেলাবটতলায়। ছবি: সুদীপ ঘোষ।
রাজ্য জুড়ে রবিবার থেকে কড়া বিধিনিষেধ জারির প্রথম সকালেই পথে নেমে তা কার্যকর করতে দেখা গেল পুলিশকে। কোথাও গাড়ি থামিয়ে নাকা-তল্লাশি চলল, তো কোথাও বাজারে ঢুকে মাইক হাতে চলল বিধি মানার আবেদন। যদিও দিনের শেষে কোথাও কোথাও রাশ আলগা করার অভিযোগ উঠেছে। কোথাও আবার সক্রিয় পুলিশকে দেখে অনেকের প্রশ্ন, গত বারের লকডাউনে জরুরি পরিষেবা নিতে যাওয়া মানুষকে আটকানোর যে অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে উঠেছিল, এ বারে তেমন হবে না তো? অবশ্য অভিযোগ রয়েছে উল্টো দিক থেকেও। পরিস্থিতির গুরুত্ব এখনও কিছু মানুষ না বোঝার খেসারত দেবেন আরও বহু মানুষ, শঙ্কা পুলিশকর্মীদের।
রাজ্য সরকারের কড়া বিধিনিষেধ জারির সিদ্ধান্তকে কার্যকর করা ছিল কলকাতা পুলিশের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই কী ভাবে তা হবে, সেই রূপরেখা ঠিক করতে শনিবার বৈঠকে বসেছিলেন লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা। ওই দিনের একাধিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রবিবার সকাল থেকেই পুলিশকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেল।
শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের সর্বত্রই ছিল একই ছবি। তবে ছুটির দিন হওয়ায় রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা ছিল তুলনায় কম। শহরে ঢোকার প্রায় প্রতিটি পয়েন্টে একাধিক পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিলেন। সেই সঙ্গে ভিতরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ছিল তল্লাশির বন্দোবস্ত। রুবি কানেক্টর, রাসবিহারী, উল্টোডাঙা, পার্ক সার্কাস, হাজরা, শ্যামবাজার-সহ শহরের একাধিক জায়গায় পুলিশ মোতায়েন ছিল নজরে পড়ার মতো। জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড করে রীতিমতো প্রত্যেকটি গাড়ি দাঁড় করিয়ে চালক এবং যাত্রীদের পরিচয়পত্র যাচাই করতেও দেখা যায় পুলিশকে। এমনকি, পথে বেরোনোর যুক্তিগ্রাহ্য কারণ দেখাতে প্রয়োজনীয় নথি না দিতে পারায় বহু গাড়িকে ফেরাতেও দেখা গেল এ দিন। আটক করা হয়েছে একাধিক গাড়ি।
হাজরার এক বাসিন্দা সুব্রত বিশ্বাসের প্রশ্ন, “গত বছর লকডাউনে অতি সক্রিয় পুলিশকে একাধিক বিধিভঙ্গ করতে দেখা গিয়েছিল। এ বারেও সেই সক্রিয়তায় সমস্যায় পড়বেন না তো জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা?” কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, এ জন্য ইপাসের ব্যবস্থা করেছে লালবাজার। পথে সেটা সঙ্গে রাখলেই সমস্যা হবে না কোনও।
এ দিন মাস্ক না পরে রাস্তায় ঘোরার অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় পুলিশকে। রাত ৮টা পর্যন্ত পথে বিনা মাস্কে ঘোরার অভিযোগে ৩৪৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। ওই সময়ের মধ্যেই ৮৫টি গাড়ি আটক করা হয়েছে। একরাশ বিরক্তি নিয়ে এক পুলিশকর্মী বলেন, “গোটা ভোট পর্বে অনেকে শুধুই খেলে গিয়েছেন। তাতেই হু হু করে বেড়েছে সংক্রমণ। ভাবলে দুঃখ হচ্ছে, এখনও বহু মানুষ অসচেতন।”
দিনের শুরুর সেই পুলিশি বাঁধন কিছুটা আলগা হল বেলা গড়াতেই। তখন শহরের একাধিক পয়েন্টে ব্যারিকেড করা থাকলেও দেখা গেল না পুলিশকর্মীদের। ফলে বিনা বাধায় অনেকেই ঘোরাঘুরি করেও ছাড় পেয়ে গেল। প্রথম দিনেই রাশ আলগা কেন?
যদিও কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের ডিসি ট্রাফিক অরিজিৎ সিংহের দাবি, “এ দিন দিনভর রাস্তায় সক্রিয় ভূমিকায় ছিল পুলিশ। আগামী দিনেও সরকারি নির্দেশিকা মেনে পুলিশকে একই ভূমিকায় দেখা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy