Advertisement
E-Paper

ফণী আতঙ্ক: একুশ ঘণ্টা উড়ান বন্ধের ঘোষণা শহরে

শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কলকাতায় বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন’ (ডিজিসিএ)। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ভুবনেশ্বরের সমস্ত উড়ানও বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ০০:০০
শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কলকাতায় বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ডিজিসিএ। ফাইল চিত্র।

শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কলকাতায় বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ডিজিসিএ। ফাইল চিত্র।

আগে যা কোনও দিন হয়নি, ঘূ‌র্ণিঝড় ‘ফণী’র জন্য সেটাই হতে চলেছে কলকাতা বিমানবন্দরে। এই প্রথম আবহাওয়ার কারণে আগাম ঘোষণা করে বাতিল করা হচ্ছে উড়ান।

শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কলকাতায় বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন’ (ডিজিসিএ)। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ভুবনেশ্বরের সমস্ত উড়ানও বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে তারা।

ডিজিসিএ-র এই ঘোষণায় মাথায় হাত পড়েছে উড়ান সংস্থা ও যাত্রীদের। কলকাতা থেকে দিনে গড়ে ২১০টি উড়ান ছাড়ে। নামেও সমসংখ্যক উড়ান। ডিজিসিএ-র নির্দেশের ফলে প্রায় ২০০টি উড়ান বাতিল হতে পারে। এর ফলে শুক্রবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে কলকাতামুখী যাত্রীরা আটকে যেতে পারেন। কলকাতাতেও আটকে পড়ার সম্ভাবনা অসংখ্য যাত্রীর। শনিবার রাতের মধ্যে ‘ফণী’র প্রভাব থেকে কলকাতা মুক্ত হলেও আটকে পড়া যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে রবিবার সারা দিন কেটে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ডিজিসিএ বলেছে, শনিবার সন্ধ্যার পরে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর সবুজ সঙ্কেত পেলে তবেই কলকাতায় উড়ান চলাচল স্বাভাবিক হবে। এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, স্পাইসজেট, বিস্তারা, গো— প্রতিটি উড়ান সংস্থাই বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ৫ মে পর্যন্ত বাতিল উড়ানের যাত্রীরা চাইলে টিকিটের পুরো টাকা ফেরত পাবেন। ওই টিকিটে অন্য দিন যেতে চাইলে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হবে না।

এমনিতে হাওয়ার গতি বেশি থাকলে নামতে সমস্যা হয় বিমানের। ঘণ্টায় ৩৬ কিলোমিটার বা তার বেশি বেগে ঝোড়ো হাওয়া দিলেই সতর্ক করা হয় পাইলটকে। শনিবার সারা দিন ধরে ঝোড়ো হাওয়ার গতি ঘণ্টায় ৭০ থেকে ১০০ কিলোমিটার থাকতে পারে। বৃষ্টি নয়, এই ঝোড়ো হাওয়ার জন্যই প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে গিয়েছে বিমান পরিষেবায়।

কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, এ দিন সকালেই প্রতিটি উড়ান সংস্থা, এটিসি ও আবহাওয়া দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়। বৈঠক শেষে বিমানবন্দরের আবহাওয়া বিভাগের প্রধান গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘‘পরিস্থিতির গুরুত্ব সবাইকে জানানো হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাতেই ঘূ‌র্ণিঝড় ‘ফণী’ পশ্চিমবঙ্গে ঢুকবে। বিমানবন্দরের উপর দিয়ে প্রবল গতিতে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। শুধু কলকাতায় নয়, ভুবনেশ্বর, গুয়াহাটি, ঢাকাতেও এর প্রভাব পড়বে। ফলে কলকাতার বদলে ওই সব বিমানবন্দরেও বিমান নামতে পারবে না।’’

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এ দিন সকাল থেকেই বিমানের গতিপথ বদলাতে শুরু করে দেয় এটিসি। কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, হায়দরাবাদ বা ভুবনেশ্বরের মতো শহরে উড়ে যেতে হয় সমুদ্রের উপর দিয়ে। সেই রুট এড়িয়ে জামশেদপুর ঘুরে স্থলভূমির উপর দিয়ে উড়ে গিয়েছে বিমানগুলি। তাতে গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয়েছে। পাকিস্তানের আকাশ এখনও বন্ধ। তাই ইউরোপমুখী আন্তর্জাতিক বিমানগুলি মুম্বই থেকে মাসকট হয়ে পশ্চিমে উড়ে যাচ্ছে। তারাও মূলত সমুদ্রের উপর দিয়েই যাচ্ছে। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বুধবার মধ্যরাত থেকে সেই বিমানগুলিকেও যতটা সম্ভব সমুদ্রের উপর থেকে সরিয়ে উপকূলবর্তী এলাকা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘কলকাতা বিমানবন্দরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সব অফিসারের ছুটি বাতিল হয়েছে। আমরা যাত্রীদের ও উড়ান সংস্থাগুলির সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। শুক্রবার সকালে আবার উড়ান সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করা হবে।’’

এয়ার ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট-এর জিএম আর এস লাহোরিয়া জানিয়েছেন, যে গতিতে ঝড় আসবে, তাতে কলকাতায় রেডার বন্ধ করে দিতে হতে পারে। নয়তো ক্ষতি হতে পারে তার অ্যান্টেনার। সে ক্ষেত্রে আকাশে উড়ে যাওয়া বিমানের ছবি মনিটরে দেখতে পাওয়া যাবে না। তখন দু’টি বিমানের মাঝের দূরত্ব বাড়িয়ে দেওয়া হবে।

ফণী Cyclone Fani Kolkata Airport
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy