Advertisement
১৮ মে ২০২৪

পুজোর ছুটি চলছে মেট্রোর, চলছে যাত্রী দুর্ভোগও

সাধারণত পুজোর চারদিন মেট্রো কর্তৃপক্ষ সারা রাত ট্রেন চালান বলে দুপুর পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। যাত্রীরাও এই ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত। কিন্তু পুজোর পরে এক সপ্তাহ কেটে গেলেও স্বাভাবিক হয়নি পরিষেবা।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৪৫
Share: Save:

পুজো মিটে গিয়েছে দিন ছয় আগেই। কিন্তু পুজোর ছুটির রেশ কাটেনি!

সাধারণত পুজোর চারদিন মেট্রো কর্তৃপক্ষ সারা রাত ট্রেন চালান বলে দুপুর পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। যাত্রীরাও এই ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত। কিন্তু পুজোর পরে এক সপ্তাহ কেটে গেলেও স্বাভাবিক হয়নি পরিষেবা। এ বছর থেকে নতুন ছুটির নিয়ম চালু করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। দশমীর পরে টানা এক সপ্তাহ স্বাভাবিকের চেয়ে কম সংখ্যক ট্রেন চালানো হচ্ছে। যার ফলে সমস্যায় পড়ছেন নিত্যযাত্রীরা।

অভিযোগ, যাত্রী বাড়লেও হুঁশ নেই মেট্রো কর্তৃপক্ষের। ৩০ ছিল দশমী। তার পরে ১ থেকে ৩ তারিখ সর্বত্রই ছিল ছুটির মেজাজ। ট্রেন অনেকটা কম চললেও তাই ততটা সমস্যা হয়নি। কিন্তু ৪ থেকে ৭ তারিখ পর্যন্তও একই ভাবে পরিষেবা কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় মেট্রো। ৪ তারিখ ২০০টি ট্রেন, ৫ তারিখে ১৭৪টি, ৬ তারিখে ২২৪টি এবং ৭ তারিখে ২২৪টি ট্রেন চালানো হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এই দিনগুলির মধ্যে লক্ষ্মীপুজো ছিল ৫ তারিখ। সেটি ছুটির দিন হলেও বাকি সব দিনগুলিতে রাজ্য সরকারি অফিস ছাড়া সব অফিসই খোলা ছিল। ফলে নিত্য যাত্রীর চাপ ছিল ভালই।

কিন্তু পুজোর পড়ে নতুন করে কম ট্রেন চালানোর যুক্তি কী? মেট্রোর এক কর্তা বলছেন, ‘‘এখন রাজ্য সরকারের সব অফিস ছুটি। ফলে যাত্রী কম। এই সময়ে বেশি ট্রেন চালিয়ে লাভ কী?’’ এ দিকে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের ছুটির দোহাই দিয়ে মেট্রো কম চালানোর পিছনে মেট্রোর কর্ম সংস্কৃতিকে দূষছেন যাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, জেলা মিলিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মী কম-বেশি দশ লক্ষ। শহরে সংখ্যা আরও কম। এ দিকে মেট্রোর নিত্যযাত্রী প্রায় ৬ লক্ষ। ফলে মেট্রোর এই ব্যাখ্যা অমূলক বলে অভিযোগ যাত্রীদের।

অভিযোগ রয়েছে মেট্রোর সময়নিয়েও। মাঝেমধ্যেই দু’টি ট্রেনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান বাড়ছে। ফলে পরের ট্রেনে ভিড় বাড়ায় দুর্ভোগ বাড়ছে যাত্রীদের। ৪-৭ অক্টোবর ট্রেন কম চালানোর বিজ্ঞপ্তিতেও দু’টি ট্রেনের মধ্যে পরিবর্তিত ব্যবধান জানানো হয়নি বলে বক্তব্য কিছু যাত্রীর।

এ বছর পুজোর আগেও চার দিন নিত্য যাত্রীরা চূড়ান্ত দুর্ভোগ সহ্য করছেন। পুজোর ভিড় আগে থেকে শুরু হয়ে যাওয়ায় ট্রেনগুলিতে তিল ধারণের জায়গা মেলেনি। বহু নিত্য যাত্রীকে বাধ্য হয়ে ওই সময়ে মেট্রো ছেড়ে বাস বা ট্যাক্সিতে ভরসা করতে হয়েছে। মেট্রো সূত্রেই খবর মিলেছে, পঞ্চমীর দিন মেট্রোর যাত্রী সংখ্যা ছিল ৮ লক্ষ ৬৯ হাজার। যা সর্বকালীন রেকর্ড বলে দাবি মেট্রো কর্তৃপক্ষের। ষষ্ঠী, সপ্তমী থেকে অবশ্য ওই ভিড় আস্তে আস্তে কমে গিয়েছে।

এ বছরও অন্য বছরের মতোই পুজোর চার দিন মেট্রো রাতভর পরিষেবা চালু রেখেছে। নিত্য যাত্রীদের বক্তব্য, ভিড় থেকে বেঁচে আগে ঠাকুর দেখার তাগিদে শহরতলি থেকে অসংখ্য মানুষ মেট্রোয় ভিড় জমান তৃতীয়া, চতুর্থী ও পঞ্চমীতে। ওই সময়ে নাজেহাল হন অফিসযাত্রীরা। নিত্য যাত্রীদের দাবি, পুজোর অতিরিক্ত ট্রেন তৃতীয়া থেকেই চালু হোক। না হলে নিত্য যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE