ড্রামের ভিতরে সেই মৃতদেহ। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র
এ জে সি বসু রোডের পরে হেস্টিংস। খাস কলকাতার রাস্তায় ফের মৃতদেহ। এ বার সেটি রাখা ছিল একটি ড্রামের ভিতরে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, বছর তিরিশের ওই যুবককে শহরের বাইরে কোথাও খুন করা হয়েছে। তার পরে ড্রামে দেহ ভরে এনে সেখানে ফেলে দেওয়া হয়।
শনিবার সকালে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট ও রিপন স্ট্রিটের মোড়ে, এ জে সি বসু রোডের ফুটপাথে এক তরুণীর দেহ মেলে। সেই খুনের কিনারা হতে না হতেই নতুন এক জন নিহতের দেহ পাওয়া গেল। বুধবার সকালে নীল রঙের একটি ড্রামের মধ্যে ওই যুবকের রক্তাক্ত দেহ মিলেছে। পুলিশের অনুমান, খুনের সময়ে ভোঁতা ও ধারালো— দু’ধরনের অস্ত্রই ব্যবহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই যুবকের শ্বাসরোধও করা হয়। তার পরে দেহ ও ড্রাম গাড়িতে এনে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ওই র্যাম্পের কাছে ফেলে দেওয়া হয় বলে ধারণা পুলিশের।
এ দিন সকালে ঝোপের আড়ালে প্রাতঃকৃত্য করতে গিয়েছিলেন স্থানীয় এক যুবক। র্যাম্পের স্তম্ভের আড়ালে তিনি একটি নীল রঙের ড্রাম কাত হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। কৌতূহলবশত এগিয়ে গিয়ে ওই যুবক দেখেন, রক্তে ভেজা মানুষের মাথার কিছুটা অংশ বেরিয়ে আছে। আরও একটু এগিয়ে দেখা যায়, জিভও বেরিয়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে সেন্ট জর্জেস রোডের দায়িত্বে থাকা বিদ্যাসাগর ট্রাফিক গার্ডের পুলিশকে খবর দেন ওই যুবক। সেখান থেকে খবর যায় হেস্টিংস থানায়।
পুলিশ জানায়, আড়াই ফুটের একটি মাছের ড্রামে দু’পা মুড়িয়ে ভরে রাখা হয়েছিল দেহটি। তদন্তকারীদের সন্দেহ, এ জে সি বসু রোডের র্যাম্পের উপর থেকে নীচে ফেলার ফলে ড্রামটি কাত হয়ে গিয়েছিল। ড্রামের পাশ থেকে একটি সাদা নাইলনের বস্তাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে, খুনিরা এই অঞ্চলের সঙ্গে যথেষ্ট পরিচিত। ওই তল্লাট নির্জন জেনেই ড্রামে ভরে দেহটি ওখানে ফেলা হয়েছিল।’’ পুলিশের বক্তব্য, পোশাক-আশাক দেখে নিহতকে দক্ষিণ ভারতীয় বলে মনে হচ্ছে। নিহতের পরনে ছিল নীল রঙের লুঙ্গি ও গোলগলা টি শার্ট।
পুলিশের দাবি, যুবকটির গলায় শ্বাসরোধ করার চিহ্নের পাশাপাশি মাথার বাঁ দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন আছে। কোনও ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে তাঁর বাঁ ও ডান পাঁজরেও আঘাত করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, খুনের আগে ওই যুবক বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। নিহতের ডান হাতে ‘রানা’ ও বাঁ হাতে ‘ঔঁ’ লেখা। পুলিশ ওই এলাকার বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। তবে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি সিসিটিভি নেই বলেই লালবাজারের একটি সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy