Advertisement
০৩ মে ২০২৪

নিখোঁজ যুবকের দেহ উদ্ধার, ধৃত ২

নিখোঁজ যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। শনিবার, চিৎপুর রেল ইয়ার্ডের একটি পরিত্যক্ত সারের গুদামের ভিতর থেকে। মৃতের নাম মহম্মদ জুনেদ (২০)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৪৮
Share: Save:

নিখোঁজ যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। শনিবার, চিৎপুর রেল ইয়ার্ডের একটি পরিত্যক্ত সারের গুদামের ভিতর থেকে। মৃতের নাম মহম্মদ জুনেদ (২০)। খড়দহের বাসিন্দা জুনেদ পেশায় ঝালাই মিস্ত্রি ছিলেন। খুনের অভিযোগে মহম্মদ সুলতান ও দিলওয়ার শেখ নামে দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। সুলতান সম্পর্কে জুনেদের শ্যালক।

পুলিশ জানায়, ৩ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন জুনেদ। পরদিন জুনেদের বোন থানায় ভাইয়ের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ করেন। তদন্তে পুলিশ সুলতান ও দিলওয়ারকে ধরে। জেরায় সুলতান জানায়, তাঁর বোনের উপরে অত্যাচার করতেন জুনেদ। আর তার বদলা নিতেই ৩ ডিসেম্বর জুনেদকে চিৎপুরে ডেকে খুন করে সুলতান।

পুলিশ জেনেছে, বছরখানেক আগে সুলতানের নাবালিকা বোন জুনেদের সঙ্গে পালিয়ে যায়। সপ্তাহ দুয়েক পরে বিয়ে করে তাঁরা খড়দহে ফিরে
আসেন। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই সুলতানের কাছে অভিযোগ আসতে শুরু করে, স্ত্রীকে মারধর করছেন জুনেদ। মারধরের জন্য স্ত্রীর গর্ভপাতও হয়ে যায়। এর পর বাপের বাড়ি ফিরে যায় সুলতানের বোন।

জেরায় সুলতান জানায়, খুনে সাহায্য করেছিল সুলতানের আত্মীয় দিলওয়ার। নভেম্বরে সুলতানের বাড়িতে থাকতে এসেছিল দিলওয়ার। তাঁর পরামর্শেই এলাকার বাইরে খুনের পরিকল্পনা করা হয়। যোগাযোগ করা হয় কালু যাদব নামে আর এক
জনের সঙ্গে।

পুলিশ আরও জেনেছে, খুনের উদ্দেশ্যেই জুনেদের সঙ্গে ভাব জমায় সুলতান। ঘুরতে যাওয়ার নামে ঘটনার দিন দুপুরে জুনেদকে চিৎপুরের গুদামে নিয়ে যায় সুলতান, দিলওয়ার ও কালু। ওই দিন সকলে মদ্যপান করছিল। জুনেদ আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় তাঁকে। গুদামের সারের ১২টি বস্তার তলায় দেহটি চাপা দেওয়া হয়। পুলিশের অনুমান, সারের বস্তা চাপা দেওয়ার দরুণই দেহে পচন ধরলেও গন্ধ বেরোয়নি।

অন্য দিকে জুনেদের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই সুলতানেরা বাড়ি খালি করে অন্যত্র চলে যায়। তাতেই সন্দেহ বাড়ে পুলিশের। সুলতানের ফোনে আড়ি পাতা শুরু হয়। জানা যায় দিলওয়ারের কথা। এর পর ঠিকাদারের কাজের টোপ ফেলে শুক্রবার সুলতানকে গ্রেফতার করে খড়দহ পুলিশ। ধরা হয় দিলওয়ারকেও।

শুক্রবার রাতে চিৎপুর থানার পুলিশ, দমদম জিআরপি ও কাশীপুর আরপিএফকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় খড়দহ থানার পুলিশ। ২৫ বছর ধরে বন্ধ গুদামটির দরজার সামনে সিমেন্ট জমে থাকায় ভিতরে ঢোকা ছিল প্রায় অসম্ভব। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে গুদামের পিছনে ঝোপের পাশে রয়েছে একটি ঘুলঘুলি। সেখান দিয়ে সহজেই এক জন মানুষ ভিতরে গলে যেতে পারে। শনিবার ফের জুনেদের দাদা জাভেদকে সঙ্গে নিয়ে গুদামে যায় পুলিশ। দেখা যায়, বস্তায় তলায় চাপা পড়ে রয়েছে জুনেদের দেহ। পুলিশের অনুমান, ধৃতেরা ভেবেছিল সারের বস্তা চাপা দিয়ে রাখলে দেহটি কঙ্কাল হয়ে মাটিতে মিশে যাবে। কেউ টের পাবেন না। মৃতদেহের পোশাক দেখে জুনেদকে শনাক্ত করেন জাভেদ।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষ়ড়যন্ত্র, খুন ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ধারায় মামলা হয়েছে। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র ও বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death body
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE