প্রতীকী ছবি
ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। স্বাভাবিক ভাবেই দেহ সৎকার হয়েছিল এক বৃদ্ধের। পরে জানা গেল, তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে পজ়িটিভ। আর সেই খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে রয়েছেন বৃদ্ধকে দাহ করতে নিয়ে যাওয়া এলাকার লোকজন থেকে শ্মশানের কর্মীরা।
এ বারের ঘটনাস্থল হাওড়ার জগাছা এলাকার বকুলতলা লেন। গত বুধবার বালির পালবাগান লেনের বাসিন্দা এক বৃদ্ধের মৃত্যুর পরে হাওড়া জেলা হাসপাতাল সেটি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে শংসাপত্র দেয়। তাঁর দেহ স্বাভাবিক ভাবে সৎকারও করা হয়। পরে খবর আসে, ওই বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তা নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, জগাছার এই ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার, ১৫ জুলাই। বকুলতলা লেনের বাসিন্দা, ৬৫ বছরের ওই বৃদ্ধের শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় সে দিন তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট থাকায় তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়। কিন্তু সেই রিপোর্ট আসার আগেই বৃহস্পতিবার বিকেলে মারা যান ওই বৃদ্ধ। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ডেথ সার্টিফিকেটে লিখে দেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে। ওই দিনই পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় বৃদ্ধের দেহ। পরিবারের লোক ও এলাকার বাসিন্দারা দেহটি স্থানীয় বাঁশতলা ঘাটে কাঠের চুল্লিতে সৎকার করেন। পরের দিন অর্থাৎ ১৭ জুলাই বিকেলে হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয়, ওই বৃদ্ধের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। এই খবর জানার পর থেকেই সংক্রমণের আশঙ্কায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে আত্মীয়-প্রতিবেশী থেকে শ্মশানের কর্মীদের। ওই বৃদ্ধের পরিবারের ঘনিষ্ঠ, এলাকারই এক বাসিন্দা সমর দাস বলেন, ‘‘১৭ তারিখ হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয়, রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।
শনিবার সকালে সেই খবর জানাজানি হয়। তার পর থেকেই আতঙ্কে রয়েছি।’’ সমরবাবু জানান, এলাকার প্রায় ছ’টি পরিবারের সদস্যেরা ওই বৃদ্ধের শেষযাত্রায় গিয়েছিলেন। তাঁদেরই এক জন শম্ভু সামন্ত বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের বলেছে, যাঁরা ওই বৃদ্ধের শেষকৃত্যে গিয়েছিলেন তাঁদের সকলকে হোম কোয়রান্টিনে যেতে হবে। সেই মতো আমরা এখন হোম কোয়রান্টিনে আছি।’’
আরও পড়ুন: রিপোর্ট না আসায় বাতিল অস্ত্রোপচার, বাড়ছে বিল
জগাছার বকুলতলা আগেই সংক্রমিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত ছিল। এই ঘটনার পরে সকলেই সংক্রমণের আশঙ্কায় ভুগছেন। কিন্তু বারবার এমন ঘটছে কেন?
হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৃতের পরিবারের সদস্যদের বলা হয়েছিল, তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট আসার পরেই দেহ দেওয়া হবে। কিন্তু পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরাই দেহ হাসপাতালে রাখতে চাননি। প্রায় জোর করে হাসপাতাল থেকে দেহ নিয়ে যান তাঁরা। তা সত্ত্বেও কোভিডের নিয়ম মেনে ওই বৃদ্ধের দেহ মুড়ে এবং জীবাণুমুক্ত করে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy