Advertisement
E-Paper

অ্যাপ-ক্যাব চালকের মৃত্যু, গ্রেফতার স্ত্রী-সহ তিন

মানিকতলার বাগমারি রোডে এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম রাজু দুয়ারি (৩২)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৩৩
রাজু দুয়ারি

রাজু দুয়ারি

মানিকতলার বাগমারি রোডে এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম রাজু দুয়ারি (৩২)। ওই যুবককে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাঁর স্ত্রী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে মানিকতলা থানার পুলিশ। যুবকের পরিবার ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ, স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি হত তাঁর। রবিবার রাতেও স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয় পেশায় অ্যাপ-ক্যাব চালক রাজুর। পরে সোমবার তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, রাজু গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে তাঁর দেহ পুলিশ উদ্ধার করে ঘরে খাটে শোয়া অবস্থায়। পুলিশ জানায়, রাজু তাঁর ঘরে গলায় নাইলনের দড়ির ফাঁস দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলেছিলেন বলে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানিয়েছেন। রাজুর পরিবারের তরফে অভিযোগের ভিত্তিতে এ দিন তাঁর স্ত্রী তানিয়া মুখোপাধ্যায়, শ্বশুর তন্ময় মুখোপাধ্যায় ও শাশুড়ি শুক্লা মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে মানিকতলা থানার পুলিশ। তার আগে কয়েক দফা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদও করেন তদন্তকারীরা।

বাগমারি রোডে একটি ভাড়াবাড়িতে স্ত্রী, এক ছেলে এবং শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে থাকতেন রাজু। তাঁর নিজের বাড়ি কাছাকাছিই রয়েছে। তবে জায়গার অভাবে রাজু আলাদা বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন বলেই পুলিশ জেনেছে।

পুলিশ জানায়, রাজু যে অ্যাপ-ক্যাবটি চালাতেন সেই গাড়িটি তাঁর নিজের। রাজুর ঘরের পাশেই বসবাসকারী অন্য ভাড়াটেরা এ দিন পুলিশকে জানান, রবিবারও গভীর রাত পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া চলে। এক ভাড়াটের কথায়, ‘‘ভোরবেলা চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায়। রাজুর শ্বশুর জানান জামাই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমরা ছুটে রাজুর ঘরে গিয়ে দেখি, রাজুর দেহ খাটে শোয়ানো। যে ঘরে রাজুর দেহ মেলে সেটি ভিতর থেকে ভেজানো।’’

সোমবার রাজুর দেহ উদ্ধারের কথা জানাজানি হতেই তা নিয়ে এলাকায় শোরগোল শুরু হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজুকে খুন করা হয়েছে। দোষীদের শাস্তি দাবি করে তাঁরা পাড়ার ক্লাবের সামনের বোর্ডে সে কথাও লিখেও দেন। তাঁদের অভিযোগ, রাজুর স্ত্রী তানিয়ার অন্য এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। তা নিয়ে রাজুর সঙ্গে গোলমাল হত। রাজুর দাদা সুভাষ বৈদ্যের দাবি, ‘‘রবিবার তানিয়া গভীর রাতে মদ্যপান করে বাড়ি ফেরে। তা নিয়ে ফের রাজুর সঙ্গে অশান্তি শুরু হয়। তার জেরে তানিয়াই রাজুকে খুন করেছে কি না পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’

এ দিন সকালে তানিয়ার বাবা তন্ময়বাবু দাবি করেন, ‘‘গতকাল রাতে ঝগড়ার পরে তানিয়া ওর ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যায়। আমি ভোর রাতে শৌচালয়ে যেতে গিয়ে দেখি রাজুর ঘরে আলো জ্বলছে। দরজা ফাঁক করে দেখতে পাই রাজু ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে।’’ তবে তন্ময়বাবুর কথায় বিশ্বাস করতে চাননি পাড়ার লোকজন।

এ দিন ধরা পড়ার আগে তানিয়া বলেন, ‘‘রবিবার রাতে এক বন্ধুর জন্মদিনে চায়না টাউনে খেতে যাই। ফিরে আসার পরেই রাজু আমার সঙ্গে ঝামেলা শুরু করে। ছেলের গায়েও হাত তোলে। আমি ভয় পেয়ে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাই। ভোরবেলা আমার বাবা রাজুর মৃত্যুর খবর জানায়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমার সঙ্গে অন্য ছেলের সম্পর্কের কথা মিথ্যা রটনা। অ্যাপ ক্যাব কিনতে গিয়ে রাজুর প্রচুর দেনা হয়েছিল। টাকা শোধ দিতে পারছিল না। তা নিয়ে আমার সঙ্গে অশান্তি হত।’’

Death Driver App Cab Arrest Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy