Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

সচেতন হচ্ছে স্কুল, সঙ্গী পুরসভা

মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন স্কুলে স্কুলে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে, বাড়াতে হবে স্বাস্থ্য সচেতনতাও। সোমবার বিকাশ ভবনে বৈঠক ডেকে শিক্ষামন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন সচেতনতা বিধিকে আরও জোরদার করে তুলতে। মঙ্গলবার কলকাতার বেশ কয়েকটি স্কুলে ঘুরে দেখা গেল সরকারের নির্দেশে নড়েচড়ে বসেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ, টনক নড়েছে পুরসভারও।

ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার। বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুলে। ছবি তুলেছেন দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার। বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুলে। ছবি তুলেছেন দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

মধুরিমা দত্ত
শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫৮
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন স্কুলে স্কুলে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে, বাড়াতে হবে স্বাস্থ্য সচেতনতাও। সোমবার বিকাশ ভবনে বৈঠক ডেকে শিক্ষামন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন সচেতনতা বিধিকে আরও জোরদার করে তুলতে। মঙ্গলবার কলকাতার বেশ কয়েকটি স্কুলে ঘুরে দেখা গেল সরকারের নির্দেশে নড়েচড়ে বসেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ, টনক নড়েছে পুরসভারও। ডেঙ্গি ও অজানা জ্বরের প্রকোপ রুখতে স্কুলে স্কুলে শুরু হয়েছে বিশেষ সাফাই।

তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই যে প্রত্যেক স্কুলের ভোল বদলে গিয়েছে এমনটাও নয়। হেদুয়ায় বেথুন স্কুলের রান্নাঘরের সামনেই জমে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। প্লাস্টিকের বোতলে আটকেছে নর্দমার মুখ। সেখানে জমছে জল। নর্দমার পাশেই শিক্ষিকাদের ঘর, রয়েছে ক্লাসরুমও। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সাফাইকর্মীর অভাবই এর কারণ। স্কুলের সহ-প্রধানশিক্ষিকা শাশ্বতী হালদার বলেন, ‘‘স্কুলের ক্যাম্পাস বেশ বড় হলেও সাফাইকর্মী মাত্র এক জন। তাই সারাক্ষণ পরিষ্কার রাখা সম্ভব হয় না। তবে ক্লাস শুরুর আগে ক্লাসঘরে মশা মারার স্প্রে ছ়়ড়িয়ে রাখা হয়।’’ আবর্জনা স্তূপ হয়ে থাকার প্রসঙ্গে তিনি জানান, ওই স্তূপের পিছনেই রয়েছে পুরসভার ভ্যাট। সেই দিকের দরজা খুলে তাই নোংরা বের করা সম্ভব হয় না। তাই মাঝে মাঝে আগুন জ্বালিয়ে তা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়।

মশাবাহিত রোগ রুখতে পড়ুয়াদের ফুল প্যান্ট ও ফুলহাতা শার্ট পরে আসার প্রস্তাব দিয়েছে অনেক স্কুল। মঙ্গলবার বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুলে দেখা গেল, খেলার মাঠ জুড়ে ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, সকালে পুরসভার পক্ষ থেকে ছড়ানো হয়েছে মশা মারার তেল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবানন্দ বাগচী জানান, তাঁরা নিয়মিত স্কুল পরিষ্কারের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘‘সকালে প্রাথমিক বিভাগের ক্লাস শুরু হওয়ার আগেই প্রতি ক্লাসরুমে মশা তাড়ানোর স্প্রে করা হয়। তবে চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস শেষ হয়ে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস শুরু হওয়ার মাঝে আবার স্প্রে করার সুযোগ পাই না।’’ শিক্ষকদের ঘরে ঘরেও নিয়মিত সাফাইয়ের পাশাপাশি মশা তাড়ানোর ওষুধ ছড়ানো হচ্ছে বলে জানান দেবানন্দবাবু।

একই চিত্র টাকী বয়েজ স্কুলেও। ইতস্তত কাগজ, প্লাস্টিক ছড়িয়ে থাকলেও জল জমে মশার আঁতুড়ঘর নেই কোথাওই। প্রধান শিক্ষক পরেশকুমার নন্দ জানান, বর্ষা এলেই স্কুল পরিষ্কার রাখতে এবং মশাবাহিত রোগ আটকাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ‘‘পুরসভা থেকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্কুলে মশা মারার তেল ছড়ানো হয়। সব সময়েই চেষ্টা করা হয় ক্লাস রুম পরিষ্কার রাখার, তবে পর্যাপ্ত সাফাইকর্মীর অভাবে মাঝে মাঝে সমস্যা হয়,’’ বলেন তিনি। হেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল দাস জানান, স্কুলের বিভিন্ন অংশে নির্মাণকাজ চলায় পরিষ্কারের কাজে সমস্যা হচ্ছে। তিনি জানান, ক্লাসে মশা মারার ধূপ বা স্প্রে করার ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা নিয়ে বুধবার পড়ুয়াদের সঙ্গেই কথা বলবেন শিক্ষকেরা।

স্কুলে স্কুলে এই সচেতনতা মেনে চলা হচ্ছে কি না, মশার প্রকোপ কমাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা স্কুল নিচ্ছে কি না, খতিয়ে দেখার জন্য স্কুলে পরিদর্শক পাঠানোর ব্যবস্থাও করেছে শিক্ষা দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

City Schools Dengue Awareness Campaign
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE