Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গিতে মৃত্যু, বর্ষণে ত্রস্ত এলাকা

জ্যাংড়া হাতিয়াড়া দু’নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌরাঙ্গনগরে এ দিন গিয়ে দেখা গেল, এখানে-ওখানে ছোট ছোট পরিত্যক্ত জমিতে জল জমে রয়েছে। আবর্জনার স্তূপ বিভিন্ন জায়গায়। কোথাও কোথাও আবর্জনা জমে নর্দমায় জলের প্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:১৬
গৌরাঙ্গনগরে এ ভাবেই জমে জঞ্জাল । বিমল রায়ের (ইনসেটে) ডেথ সার্টিফিকেট (নীচে)। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

গৌরাঙ্গনগরে এ ভাবেই জমে জঞ্জাল । বিমল রায়ের (ইনসেটে) ডেথ সার্টিফিকেট (নীচে)। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন। কাজে যোগ দিতেও উদগ্রীব ছিলেন। কিন্তু, বাড়ি ফেরা হল না কেষ্টপুরের জ্যাংড়া হাতিয়াড়া দু’নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌরাঙ্গনগরের বাসিন্দা বিমল রায়ের (৫৬)। টানা দশ দিন জ্বরে ভোগার পরে বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ দমদম মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালে মারা গেলেন তিনি। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গি লেখা হয়েছে।

জ্যাংড়া হাতিয়াড়া দু’নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌরাঙ্গনগরে এ দিন গিয়ে দেখা গেল, এখানে-ওখানে ছোট ছোট পরিত্যক্ত জমিতে জল জমে রয়েছে। আবর্জনার স্তূপ বিভিন্ন জায়গায়। কোথাও কোথাও আবর্জনা জমে নর্দমায় জলের প্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুধু এ বছর নয়, প্রতি বছরই বর্ষার পর থেকে ওই এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ে। তাই এ বছর তাঁরা পঞ্চায়েত প্রতিনিধিকে মার্চ-এপ্রিল মাসেই সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, পঞ্চায়েতের তরফে বিশেষ তৎপরতা দেখা যায়নি। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ার পরে ব্লিচিং আর মশার তেল ছড়িয়ে কি কোনও লাভ হয়? প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা।

এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, এ বছর ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা আগের সমস্ত বছরকে ছাপিয়ে গিয়েছে। নির্মল হালদার নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের গা-ছাড়া মনোভাবের কারণেই এলাকার খোলা ড্রেন অনেক সময়ে আমরা নিজেরাই পরিষ্কার করি।’’ এলাকার পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের দাবি, নিয়মিত মশার তেল ছড়ানো হচ্ছে। ব্লিচিং-ও দেওয়া হচ্ছে। সাফাই হচ্ছে
জঞ্জালও। ঘরে ঘরে গিয়ে দেখা হচ্ছে, বাসিন্দারা ফুলের টব বা পরিত্যক্ত চৌবাচ্চায় জল জমিয়ে রাখছেন কি না। পঞ্চায়েতের দাবি, এলাকার বাসিন্দারা একটু বেশি সচেতন হলে হয়তো এই পরিস্থিতিকে কিছুটা হলেও ঠেকানো যেত।

বিমলবাবুর মৃত্যুর পরে তাঁর পড়শিদের মধ্যে আতঙ্ক চেপে বসেছে। নিম্নচাপের বৃষ্টি শুরু হওয়ায় তাঁরা ফের আতঙ্কিত। এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় ও ঠিকমতো রোদ ওঠায় মশার প্রকোপ কিছুটা হলেও কমেছিল। নতুন করে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যাটাও কমে এসেছিল। কিছু দিন আগেও এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই অ্যাম্বুল্যান্স দেখা যেত। সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি কিছুটা কমে এসেছিল। রাহুল বিশ্বাস নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জমা জল অনেকটাই শুকিয়ে গিয়েছিল। নতুন করে বৃষ্টিতে ফের
জল জমবে। মশা বাড়বে।’’

বিমলবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন দশেক আগে জ্বরে আক্রান্ত হন বিমলবাবু। স্থানীয় চিকিৎসককে দেখানোর পরে তাঁর রক্ত পরীক্ষায় এনএস ১ পজিটিভ ধরা পড়ে। জ্বরের সঙ্গে গা-হাত-পায়ে ব্যথা শুরু হওয়ায় বিমলবাবুকে সঙ্গে সঙ্গে ভিআইপি রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে বিমলবাবুর অবস্থার খুব একটা উন্নতি হচ্ছিল না বলে তাঁর পরিজনেরা জানিয়েছেন। বিমলবাবুর এক আত্মীয় সারদা রায় বলেন, ‘‘জ্বরটা পুরোপুরি সারছিল না। সেই সঙ্গে হাসপাতালের বিল বাড়তে থাকায় আমাদের পক্ষে খরচ চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে। তাই ওঁকে আমরা গত কাল দমদম মিউনিসিপ্যাল হাতপাতালে ভর্তি করি। সকাল থেকে ওঁর শারীরিক অবস্থার ফের অবনতি হতে শুরু করে। আজ সকালে উনি মারা যান।’’

Dengue ডেঙ্গি Mosquitoes
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy