Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Road Accidents In Kolkata

পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহেও অঘটন অব্যাহত, ২৪টি দুর্ঘটনায় মৃত তিন

গত রবিবার কলকাতা পুলিশের আয়োজিত হাফ ম্যারাথনের মাধ্যমে সূচনা হয়েছিল পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহের। শনিবার তা শেষ হয়। রাস্তায় দুর্ঘটনার সংখ্যা কমাতে সপ্তাহভর শহর জুড়ে প্রচার চালায় কলকাতা পুলিশ।

An Image Of Road Accident

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:৫৬
Share: Save:

পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহ কি আর আদৌ ‘নিরাপদ’ থাকল? কারণ, কলকাতা পুলিশেরই হিসাব বলছে, গত সাত দিনে পুলিশের তরফে বিস্তর প্রচার ও কর্মসূচির আয়োজন করা সত্ত্বেও শহরে নথিভুক্ত পথ-দুর্ঘটনার সংখ্যাই ২৪টি। সপ্তাহভর এই সমস্ত দুর্ঘটনায় ২৮ জন আহত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে তিন জনের।

গত রবিবার কলকাতা পুলিশের আয়োজিত হাফ ম্যারাথনের মাধ্যমে সূচনা হয়েছিল পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহের। শনিবার তা শেষ হয়। রাস্তায় দুর্ঘটনার সংখ্যা কমাতে সপ্তাহভর শহর জুড়ে প্রচার চালায় কলকাতা পুলিশ। এ বার সেই প্রচারে স্কুলের পড়ুয়াদেরও কাজে লাগানো হয়েছিল। ব্যবস্থা করা হয়েছিল বিশেষ নজরদারির। কিন্তু তার পরেও শহরের রাজপথে দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু আটকানো যায়নি। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পরিসংখ্যানে তাদের বিশেষ ভাবে চিন্তায় রেখেছে মোটরবাইকের দৌরাত্ম্য। কারণ, মৃত তিন জনই বাইকে সওয়ার ছিলেন। এমনকি, দুর্ঘটনায় আহতদের অধিকাংশই মোটরবাইকের চালক বা আরোহী।

বেপরোয়া গাড়ির দৌরাত্ম্যও বজায় ছিল সপ্তাহভর। প্রজাতন্ত্র দিবসকে কেন্দ্র করে রাতের শহরে বিশেষ অভিযানে পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়ার সংখ্যা দেখেই বিধি ভাঙার হিড়িকের আভাস মিলেছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাতে বিশেষ অভিযানে ২৭১টি বিধি ভাঙার ঘটনায় পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছে লালবাজার। এর মধ্যে ৪৮ জন মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ২৩ এবং ২৪ জানুয়ারি রাতেও বিশেষ অভিযান চলে। ওই দুই রাতে অভিযান চালিয়ে পথের বিধি ভাঙার অভিযোগে ৫৩৫ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ফলে, সপ্তাহভর রাস্তায় দু’চাকার পাশাপাশি বেপরোয়া গাড়ির দৌরাত্ম্যও যে বজায় ছিল, তা পরিসংখ্যান থেকেই কার্যত পরিষ্কার।

কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা যদিও গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর শহরের রাস্তায় দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে বলে দাবি করেছেন। তাঁদের আরও দাবি, শহরের পথে দুর্ঘটনা কমাতে নজরদারির পাশাপাশি সচেতনতার প্রচারেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যা শনিবার পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে নগরপাল বিনীত গোয়েলের কথাতেও উঠে এসেছে। এ দিন পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহের সমাপ্তি উপলক্ষে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের উত্তর দিকের গেটের সামনে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সচেতনতার প্রসারে বিশেষ মিছিলেরও আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে এসে বিনীত বলেন, ‘‘আমরা চাই, প্রত্যেক স্কুলপড়ুয়া আগামী দিনে অন্তত দশ জন করে পথচারীকে ট্র্যাফিকের পাঠ দিক। সেই জন্যই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন।’’ এমনকি, শহরের রাস্তায় মিটিং-মিছিলের জেরে ভোগান্তি কমাতে ওই সমস্ত কর্মসূচির জন্য একটি জায়গা নির্দিষ্ট করা যায় কি না, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা হচ্ছে বলে জানান সিপি।

তবে, পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহে দুর্ঘটনায় একাধিক মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা এ দিন বলেন, ‘‘এমন কোনও শহর নেই, যেখানে দুর্ঘটনা বা মৃত্যু ঘটে না। যানবাহন রাস্তায় চললে কোনও না কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটবেই। সেই সংখ্যাটা যাতে কমানো যায়, আমরা সেই চেষ্টাই করছি। এবং তার জন্য যা যা করার, তা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE