E-Paper

ঐতিহ্য-সমীক্ষায় পুরসভার অর্থ বরাদ্দ নিয়ে সংশয়

হেরিটেজ কমিটির সাম্প্রতিক বৈঠকে ঐতিহ্য-মাপকাঠি ঘোষিত না হওয়া বাড়ি, ভবনের পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই কাজে বিশেষজ্ঞ সংস্থা নিয়োগের কথা ভাবা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৩ ০৭:১৯
An image of Kolkata Municipal Corporation

ঐতিহ্য-মাপকাঠি (গ্রেড) ঘোষণা হয়নি, এমন বাড়ি/ভবনকে নিয়ে বার বার বিতর্কে পড়তে হয়েছে কলকাতা পুরসভাকে। ফাইল ছবি।

সমীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ হবে কি? আপাতত এই প্রশ্নেই শহরের ঐতিহ্য-তালিকার ২৮০টি ‘গ্রেড পেন্ডিং’ বাড়ি, ভবনের ভাগ্য আটকে রয়েছে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর।

এমনিতে তালিকায় রয়েছে, অথচ ঐতিহ্য-মাপকাঠি (গ্রেড) ঘোষণা হয়নি, এমন বাড়ি/ভবনকে নিয়ে বার বার বিতর্কে পড়তে হয়েছে কলকাতা পুরসভাকে। আদালতও একাধিক বার ‘গ্রেড পেন্ডিং’-এর মাপকাঠি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। পুরো ব্যাপারটা নিয়েই একটা ধোঁয়াশা রয়েছে বলে মত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের। এ বার সেই ধোঁয়াশা কাটানোরই চেষ্টা শুরু করেছেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ।

পুরসভা সূত্রের খবর, হেরিটেজ কমিটির সাম্প্রতিক বৈঠকে ঐতিহ্য-মাপকাঠি ঘোষিত না হওয়া বাড়ি, ভবনের পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই কাজে বিশেষজ্ঞ সংস্থা নিয়োগের কথা ভাবা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞ সংস্থা নিয়োগের জন্য অর্থের প্রয়োজন। তাই সমীক্ষার কাজে কত অর্থ খরচ হতে পারে, তার হিসেবের খসড়া তৈরির আলোচনা হয়েছে। পুরসভার পদস্থ এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘সমীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ খরচের হিসেব কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হবে। প্রশাসনিক ও আর্থিক অনুমোদন পেলে শুরু হবে এই কাজ।’’

যদিও সমীক্ষার কাজ কবে শুরু হবে বা আদৌ শুরু হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ঐতিহ্য বিশারদদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, এর আগেও একাধিক বার ঐতিহ্যশালী বাড়ি, ভবনগুলির সমীক্ষা করা হবে বলে পুরসভা জানিয়েছিল। আদতে যা আর হয়নি। এক বিশেষজ্ঞের বক্তব্য, ‘‘আসলে ঐতিহ্য রক্ষা নিয়ে যত বড় বড় ঘোষণা করা হয়, বাস্তবে তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায় না। তাই সমীক্ষার কাজে পুর কর্তৃপক্ষ যে অর্থ বরাদ্দ করবেনই, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই।’’

প্রসঙ্গত, পুরসভার ঐতিহ্য-তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৯ সালে। সেখানে ঐতিহ্যের মাপকাঠিতে গ্রেড ‘ওয়ান’, ‘টুএ’, ‘টুবি’-র পাশাপাশি ‘গ্রেড পেন্ডিং’, অর্থাৎ, ঐতিহ্যশালী কিন্তু ইতিহাস, স্থাপত্যশৈলীর নিরিখে কোন মাপকাঠিভুক্ত হবে, তা নিয়ে পরবর্তীকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, এমন বাড়ি, ভবনের ওয়ার্ড, অ্যাসেসি নম্বর ও ঠিকানার উল্লেখ ছিল। তার পরে ১৪ বছর কেটে গেলেও এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি পুরসভা।এর মধ্যে বার বার ঐতিহ্য-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে পুরসভা। কখনও ঐতিহ্যের মানের অবনমন ঘটিয়ে বাড়ি, ভবন ভেঙে ফেলা, কখনও লোকচক্ষুর আড়ালে বাড়ির ‘গ্রেডেশন’ পরিবর্তন— বার বার উঠেছে এমনই অভিযোগ। যে কারণে আদালতেও বেগ পেতে হয়েছে পুর কর্তৃপক্ষকে।

তাই পুর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ঐতিহ্য-মাপকাঠি ঘোষিত না-হওয়া বাড়ি-ভবনের পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা করে সেগুলির ‘গ্রেড’ ঘোষণা করা হবে। পুর হেরিটেজ কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য তথা ঐতিহ্য বিশারদ হিমাদ্রি গুহের বক্তব্য, ‘‘গ্রেড পেন্ডিং বাড়ি, ভবনগুলির মধ্যে সবই যে ঐতিহ্যের মর্যাদা পাবে, তা নয়। তবে কোনগুলি শেষ পর্যন্ত ঐতিহ্যের মর্যাদা পাবে, আর কোনগুলি পাবে না, তার জন্য সমীক্ষা অত্যন্ত জরুরি। সেই মতোই কাজ শুরুর পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

kolkata municipal corporation heritage

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy