Advertisement
১৬ জুন ২০২৪
হাওড়া

অহিংসার উদ্‌যাপন দেখে মন বড় ভাল হয়ে যায়

এ বছরটা নিয়ে পাঁচ-পাঁচটা পুজো কাটিয়ে ফেললাম কলকাতায়। আর এ বছরটাই বোধ হয় কলকাতায় আমার শেষ বছর। তাই যেন সব কিছু আরও বেশি করে ভাল লাগছে। পুজোর এই মরসুমে এমন ঊজ্জ্বল রঙিন হয়ে ওঠে এ শহরটা! এত উন্মাদনা, পুজোর ক’টা দিন ঘিরে এত আবেগ! ঘোর কাটতে চায় না আমার।

স্তেফান আমালির
শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৬ ০১:০৮
Share: Save:

এ বছরটা নিয়ে পাঁচ-পাঁচটা পুজো কাটিয়ে ফেললাম কলকাতায়। আর এ বছরটাই বোধ হয় কলকাতায় আমার শেষ বছর। তাই যেন সব কিছু আরও বেশি করে ভাল লাগছে। পুজোর এই মরসুমে এমন ঊজ্জ্বল রঙিন হয়ে ওঠে এ শহরটা! এত উন্মাদনা, পুজোর ক’টা দিন ঘিরে এত আবেগ! ঘোর কাটতে চায় না আমার।

গত পাঁচ বছর ধরেই আমার অভ্যেস, পুজোর আগে সময় পেলেই কুমোরটুলি চলে যাই আমি। আমার স্ত্রী লরাও থাকে সঙ্গে। ছবি তুলি নানা রকম। প্রতিমাশিল্পীদের কাজের ছবি, ব্যস্ততার ছবি, কুমোরটুলির পরিবেশের ছবি। কেমন করে দেবীপ্রতিমা একটু একটু করে রূপ পান, খুব ভাল লাগে পদ্ধতিটা খুঁটিয়ে দেখতে। তার পরে তো মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা আসতে শুরু করে। আলোয় আলোয় ভরে উঠতে থাকে চেনা চত্বরগুলো।

আমি দক্ষিণ কলকাতায় যোধপুর পার্ক অঞ্চলে থাকি। এই এলাকায় অনেকগুলো বড় বড় পুজো হয়। তৃতীয়া-চতুর্থী থেকেই কর্মস্থল থেকে ফেরার সময়ে টুকটাক একটা-দু’টো ঠাকুর দেখি। ধুতি-পাঞ্জাবি পরে ঢাক বাজানোর অভিজ্ঞতাও আছে আমার। এমনিতে পুজোর উদ্বোধন থেকেই বিভিন্ন ক্লাব, বিভিন্ন সংস্থা থেকে আমন্ত্রণ আসে তাদের পুজো দেখতে যাওয়ার জন্যে। ষষ্ঠীর সকালে যেমন হাওড়ায় গেলাম সেখানকার বড় পুজোগুলো দেখতে। মোট পাঁচটা ঠাকুর দেখলাম। এ বছর মনে হয় সব পুজোর থিমেই ‘অহিংসা’ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। হাওড়ার একটা পুজোয় যেমন দেবী দুর্গার হাতে কোনও অস্ত্র ছিল না। একটা পুজোয় দেখলাম সমুদ্রগর্ভের শান্ত রূপকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। একটা পুজোয় ধর্মনিরপেক্ষতাই হয়ে উঠেছে মূল উপজীব্য। সব মিলিয়ে বেশ মন ভাল করা একটা অনুভূতি হল পুজোগুলো দেখে।

প্রতি বছরই মনে হয় কলকাতার পুজো আরও বড়, আরও জমকালো হয়ে উঠছে। আমার যদিও ব্যক্তিগত ভাবে সাবেক প্রতিমার ঐতিহ্যবাহী চেহারাটাই বেশি ভাল লাগে, তবে থিমপুজোগুলোয় যে ভাবে শৈল্পিক নৈপুণ্য ফুটে ওঠে সেগুলোও আলাদা করে প্রশংসার দাবি রাখে। পুজোর বাকি দিনগুলোতে আরও অনেক ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা রয়েছে। দক্ষিণ কলকাতা তো বটেই, উত্তরের মণ্ডপ এবং প্রতিমাও দর্শন করব। এ বছরটাই তো শহরের মানুষ হিসেবে পুজোটা শেষ বারের মতো দেখতে পারব, কাজেই যতটা পারা যায় উপভোগ করে নেব।

(লেখক আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্যু বেঙ্গালের ডিরেক্টর)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE