Advertisement
২২ মে ২০২৪
ইস্ট-ওয়েস্ট

সুড়ঙ্গে আটকে গেলেও মিলবে মুক্তির পথ

সুড়ঙ্গে আচমকা থেমে গেল ট্রেন। ঘোষণা শোনা গেল, যান্ত্রিক ত্রুটিতে ট্রেন থেমে গিয়েছে, আপাতত চলবে না। যাত্রীদের চালকের কেবিন দিয়ে এক এক করে নামতে হবে। এমন ঘটনা বার কয়েক ঘটেছে। আতঙ্কিত যাত্রীদের প্রথমেই মনে হয়, অন্ধকারে সুড়ঙ্গ পথে নামতে গিয়ে তড়িদাহত হওয়ার আশঙ্কা নেই তো? বা অন্য কোনও বিপদ?

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৬ ০১:০৯
Share: Save:

সুড়ঙ্গে আচমকা থেমে গেল ট্রেন। ঘোষণা শোনা গেল, যান্ত্রিক ত্রুটিতে ট্রেন থেমে গিয়েছে, আপাতত চলবে না। যাত্রীদের চালকের কেবিন দিয়ে এক এক করে নামতে হবে। এমন ঘটনা বার কয়েক ঘটেছে। আতঙ্কিত যাত্রীদের প্রথমেই মনে হয়, অন্ধকারে সুড়ঙ্গ পথে নামতে গিয়ে তড়িদাহত হওয়ার আশঙ্কা নেই তো? বা অন্য কোনও বিপদ?

এই প্রথম যাত্রী নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ পথে থাকছে পায়ে চলা পথ। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর বেশির ভাগটাই হচ্ছে সুড়ঙ্গ পথ। তাই সুড়ঙ্গপথে বিপদ হলে যাত্রীরা যাতে ট্রেন থেকে নেমে পড়তে পারেন এবং‌ দ্রুত বাইরে বেরিয়ে আসতে পারেন সে কারণে আড়াইশো মিটার অন্তর রাখা হচ্ছে খোলা আকাশের নীচে বেরিয়ে আসার বিশেষ রাস্তা।

শনিবার কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের লিমিটেডের (কেএমআরসিএল) ডাকা এক সাংবাদিক সন্মেলনে সংস্থার কর্তারা দাবি করেন, মেট্রোর যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাহায্য নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল সুড়ঙ্গ পথে পায়ে চলা পথ বা ওয়াক ওয়ে। এই মেট্রোয় যে আধুনিক মানের রেক আনা হচ্ছে তাতে সুড়ঙ্গে বিপদে পড়লে যাত্রীদের আর চালকের কেবিন দিয়ে বেরোতে হবে না। বিপদ বুঝলেই চালক ট্রেনের সব দরজা একসঙ্গে খুলে দেবেন। সেই দরজা দিয়েই যাত্রীরা ট্রেন থেকে বেরিয়ে দরজার উচ্চতাতেই পায়ে চলা পথ পেয়ে যাবেন।

এ দিন সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সতীশ কুমার বলেন, ‘‘গঙ্গা দিয়ে যে সুড়ঙ্গ পথ কলকাতার দিকে যাবে তাতেও যেমন পায়ে চলা পথ বা ওয়াক ওয়ে থাকছে, তেমনই স্ট্র্যান্ড রোড থেকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত থাকছে এমনই পথ। সে ভাবেই স্ট্র্যান্ড রোড থেকে শিয়ালদহের মধ্যে সুড়ঙ্গ পথে যাত্রীদের বাইরে বেরোনোর জন্য সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে ব্যবস্থা হয়েছে।’’

সংস্থার কর্তারা জানান, মেট্রো চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে একটি নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে। এই ব্যবস্থায় চালক ছাড়াও ট্রেন চালানো যাবে। প্রতিটি স্টেশনের মধ্যে ট্রেনের গতি আগে থেকেই বেঁধে দেওয়া থাকবে। ট্রেনে থাকবে উন্নত প্রযুক্তির ব্রেক ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। ক্যামেরা দিয়ে গোটা ট্রেনটা দেখতে পাবেন চালক ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসে থাকা ইঞ্জিনিয়াররা। সংস্থার কর্তাদের দাবি, ট্রেন চলবে আড়াই মিনিট অন্তর।

মেট্রো স্টেশনে আত্মহত্যা রুখতে কেএমআরসিএল এ বার প্রতিটি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে স্ক্রিন ডোর বা সামনে গেট লাগাচ্ছে। স্টেশনে ট্রেন ঢোকার পরেই ওই গেট খুলবে। সংস্থার কর্তাদের দাবি, এর ফলে আত্মহত্যা কমবে এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালাতে অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

সংস্থার চিফ ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বনাথ দেওয়ানজি বলেন, ‘‘হাওড়ার দিকে সুড়ঙ্গ কাটার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই গঙ্গার নীচ দিয়ে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হবে। এই কাজ আমাদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। গঙ্গার প্রায় ৩৬ মিটার নীচ দিয়ে এই সুড়ঙ্গ তৈরি হবে।’’

এক প্রশ্নের উত্তরে সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানান, মেট্রোর কাজ দ্রুত শেষ হওয়ার পথে দত্তাবাদে ৩৬৫ মিটার অংশে জমি সংক্রান্ত একটি সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া মহাকরণ আর এসপ্ল্যানেড স্টেশনের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়াও, কয়েকটি পুরনো সরকারি ভবনের খুব কাছ দিয়ে মেট্রোর চলাচল করা নিয়ে একটা সমস্যা রয়েছে। আশা করা যায় খুব শীঘ্রই সেগুলি মিটে যাবে। কেএমআরসিএলের দাবি, কাজ যে গতিতে এগোচ্ছে তাতে আশা করা যায় আগামী ২০১৯-এর শেষ দিকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চলাচল শুরু করতে পারবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

metro exit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE