অসমাপ্ত: স্কাইওয়াকে চলছে ঢালাইয়ের কাজ। সোমবার, দক্ষিণেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র
ঢালাইয়ের কাজ চলার সময়ে আচমকাই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল পোস্তার উড়ালপুল। দিনের ব্যস্ত সময়ে উড়ালপুল ভেঙে পড়ায় কংক্রিট ও লোহার চাঙড়ের নীচে চাপা পড়েছিলেন বহু মানুষ। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই এ বার দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকের শেষ অংশের ঢালাইয়ের কাজে বিশেষ সতর্ক রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। ওই কাজের জন্য স্কাইওয়াকের নীচের রাস্তা দিয়ে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখা হল।
শুধু তা-ই নয়। পোস্তার ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছিল, ঢালাইয়ের কাজ চলার সময়ে সেখানে কোনও ইঞ্জিনিয়ার উপস্থিত ছিলেন না। দক্ষিণেশ্বরের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে রবিবার সারা রাত উপস্থিত থেকে ঢালাইয়ের কাজে তদারকি করলেন কেএমডিএ এবং রাইট্স-এর ইঞ্জিনিয়ারেরা। রবিবার রাত থেকে শুরু করে সোমবার সকাল পর্যন্ত চলেছে ওই কাজ।
২০১৬ সালে কাজ শুরু হলেও বিভিন্ন কারণে বেশ কয়েক বার পিছিয়ে গিয়েছে স্কাইওয়াক প্রকল্পের সময়সীমা। কয়েক মাস আগেও পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে নির্মাণকারী সংস্থাকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, মার্চের মধ্যে কাজ শেষ করতেই হবে। কারণ, বাংলার নববর্ষের দিন ওই আকাশপথ পরীক্ষামূলক ভাবে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। দফতর সূত্রের খবর, মন্ত্রীর খোঁচা খেয়েই দিনরাত এক করে কাজ শুরু করে নির্মাণকারী সংস্থাটি।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, ৩২০ মিটার লম্বা ওই স্কাইওয়াকের মন্দিরের দিকের অংশে ঢালাই হয়ে গেলেও রানি রাসমণি রোডের মুখ থেকে দক্ষিণেশ্বর স্টেশন পর্যন্ত ৬৭ মিটার অংশের কাজ বাকি ছিল। আর ওই অংশের নীচ দিয়েই দক্ষিণেশ্বর মোড় থেকে রামকৃষ্ণ পরমহংস রোড গিয়েছে আদ্যাপীঠের দিকে। স্কাইওয়াকের কাজের জন্য মন্দিরে আসা সমস্ত যানবাহন এখন ওই রাস্তা দিয়েই পিছনের গেটে পৌঁছয়। এ ছাড়া, অটো, টোটো, রিকশা, বাসও ওই রাস্তা দিয়ে চলে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঢালাই চলার সময়ে যাতে কোনও অঘটন না ঘটে, তার জন্য রবিবার রাত থেকে রামকৃষ্ণ পরমহংস রোডে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার বদলে ডানলপের কাছে সবেদাবাগান দিয়ে সমস্ত গাড়িকে ঘুরিয়ে দক্ষিণেশ্বর কিংবা আদ্যাপীঠের দিকে পাঠানো হচ্ছে। আজ, মঙ্গলবার অবশ্য রাস্তাটি ফের খুলে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এক পুলিশকর্তা। নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন ২৮ দিন ওই ঢালাইয়ের উপরে কেউ হাঁটাচলা করতে পারবেন না। তবে নববর্ষের দিন স্কাইওয়াক আংশিক ভাবে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।’’
দফতর সূত্রের খবর, স্কাইওয়াকের মধ্যে থাকা দোকানগুলি এখন নীল-সাদা প্লাইবোর্ড দিয়ে ঢাকা হচ্ছে। পাশাপাশি, স্কাইওয়াকের উপরে গম্বুজাকৃতির যে কাঠামো লাগানো হয়েছে, সেটিও ত্রিমাত্রিক শিট দিয়ে ঢাকার কাজ শুরু হবে। আটটি চলন্ত সিঁড়ির কাজও অনেকটা এগিয়েছে। লিফটের খাঁচা তৈরিও শেষ। এক কর্তা বলেন, ‘‘পুরো স্কাইওয়াকটি রাতে সুন্দর করে তুলতে এলইডি আলো দিয়ে সাজানো হবে। সামঞ্জস্য রেখে মন্দিরের চারপাশের এলাকাও আলো ঝলমলে করে তোলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy