Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Dumdum

ব্যবসায়ীদের সাহায্যের যুক্তি খাড়া করে মেলা দমদমে

মেলায় যাঁরা আসবেন, থার্মাল গান দিয়ে তাঁদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে। যাতে সকলে দূরত্ব-বিধি মেনে চলেন, সে দিকে নজর রাখা হবে। কিন্তু মেলায় দূরত্ব-বিধি কি আদৌ মেনে চলা সম্ভব?

প্রস্তুতি: দমদম মেলার দিনক্ষণ জানিয়ে যশোর রোডের উপরেই তৈরি হয়েছে গেট।  ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

প্রস্তুতি: দমদম মেলার দিনক্ষণ জানিয়ে যশোর রোডের উপরেই তৈরি হয়েছে গেট। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:২৬
Share: Save:

খাতায়-কলমে দাপট কিছুটা কমেছে বটে। তবে কোভিড এখনও বিদায় নেয়নি। কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনায় এখনও গড়ে দৈনিক ৬০০ জনের বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন। কোভিড সতর্কতার জন্য সরকারি বিধিনিষেধ এখনও বলবৎ আছে। জমায়েতে সরকারি অনুমতি নেই। তা সত্ত্বেও এরই মধ্যে মেলার আয়োজন হচ্ছে দমদমে।

নমো নমো করে মেলার আয়োজন হচ্ছে, তেমনটাও বলা যাচ্ছে না। কারণ, দক্ষিণ দমদমের বেশির ভাগ জায়গায় বড় বড় হোর্ডিং পড়েছে ‘দমদম মেলার’। রাস্তা জুড়ে মেলার নামে বড় বড় গেট তৈরি হয়েছে। আয়োজকেরা জানাচ্ছেন, গত ন’মাসে কোথাও মেলা নেই। তাঁদের দাবি, কার্যত হাঁড়ির হাল ব্যবসায়ীদের অনেকেরই। ভিক্ষার থালা হাতে অনেককে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়েছে। এই অবস্থায় তাঁদের মুখের দিকে চেয়ে এক রকম বাধ্য হয়ে মেলার আয়োজন হচ্ছে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই অবশ্য মেলার পক্ষপাতী নন। মেলার আয়োজনে আতঙ্কিত অনেকেই। কারণ, এক সময়ে কোভিড সংক্রমণে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার শীর্ষে ছিল দক্ষিণ দমদম এলাকা। করোনার দাপট সেখানে এখনও সেই আগের মতোই।

মেলা করতে গেলে পুলিশের অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু এই মেলার জন্য এখনও পর্যন্ত তাঁদের অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে মনে করতে পারলেন না ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। তিনি বলেন, “মেলার জন্য এমনিতেই পুলিশের অনুমতি লাগে। এখন নিয়ম কিছুটা আলাদা। খোলা জায়গায় দর্শক সংখ্যা সীমিত রেখে আয়োজন করা যেতে পারে। দূরত্ব-বিধি মানতেই হবে। খোঁজ নিয়ে দেখব, এই মেলার ক্ষেত্রে কী নিয়ম মানা হচ্ছে।”

২০ জানুয়ারি থেকে দমদম শূরের মাঠে মেলা শুরু হওয়ার কথা। মেলার আয়োজক, দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সঞ্জয় দাস বলেন, “আমরা এ বার মেলা করব না ভেবেছিলাম। কিন্তু মেলায় যাঁরা স্টল দেন, তাঁদের সঙ্গে আমাদের ২৫ বছরের সম্পর্ক। তাঁরা এসে কেঁদে পড়লেন। বললেন, কিছু দিন মেলা চললে কয়েক মাসের খাবার জোগাড় হবে তাঁদের। অনেকেই খেতে পাচ্ছেন না। তাই তাঁদের মুখের দিকে তাকিয়ে ছোট করে মেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ থেকে জিতেন্দ্রকে ফোন দিদির, মাথা ঠান্ডা রাখার পরামর্শ

অন্যান্য বছরে সারা শীতকাল জুড়ে দমদমে বিভিন্ন মেলা চলে। মূলত বিধানসভা ভাগ করে মেলা হয়। দক্ষিণ দমদমের সিংহভাগ এলাকা দমদম বিধানসভার মধ্যে পড়ে। কিছুটা অংশ আবার রাজারহাট বিধানসভার মধ্যে। দমদমের বিধায়ক ব্রাত্য বসুর উদ্যোগে এখানে খাদ্যমেলা, সঙ্গীতমেলা, চলচ্চিত্র উৎসব, যাত্রা উৎসব, দমদম উৎসব-সহ একাধিক মেলা হয়। অধিকাংশ মেলার উদ্যোক্তা, দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য প্রবীর পাল জানান, বিধায়ক ব্রাত্য বসুর নির্দেশে কোভিডের কারণে এ বার কোনও মেলা-উৎসব হচ্ছে না।

আরও পড়ুন: বিধায়ক পদ ত্যাগ করলেও মুখে কুলুপ শুভেন্দুর, দিল্লি যাত্রা কি বৃহস্পতিবারই

দমদমমেলা রাজারহাট বিধানসভা এলাকার অধীনে। এ বারের মেলায় ৭০টি স্টল থাকছে বলে জানালেন সঞ্জয়। ২১ দিন ধরে মেলা চলার কথা। সঞ্জয় জানান, মেলায় যাঁরা আসবেন, থার্মাল গান দিয়ে তাঁদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে। যাতে সকলে দূরত্ব-বিধি মেনে চলেন, সে দিকে নজর রাখা হবে। কিন্তু মেলায় দূরত্ব-বিধি কি আদৌ মেনে চলা সম্ভব? সেই প্রশ্নের উত্তর জানার আপাতত কোনও সুযোগ নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dumdum Fair Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE