এক তরুণীর মৃত্যুর ‘সুবিচার’ দাবি করে মৃতদেহ নিয়ে সোজা নবান্নের সামনে হাজির হলেন তাঁর পরিজনেরা। যদিও রবিবার ওই গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরেই তাঁর স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবু ধৃতদের ফাঁসি দেওয়ার এবং সকল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে সোমবার বিকেলে মর্গ থেকে সোজা রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতরে হাজির হন জনা পঞ্চাশ লোকজন।
তবে খবর পেয়ে নবান্নের মূল দরজার কিছুটা আগেই সেতুর নীচে শববাহী গাড়ি এবং ওই তরুণীর বাড়ির লোকজনদের আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশের এক আধিকারিক এসে কথা বলেন তাঁদের সঙ্গে। তাঁদের জানান, এ দিন ছুটির দিন ও এলাকায় ১৪৪ ধারা থাকায় শবদেহ নিয়ে এ ভাবে ভিতরে যাওয়া যাবে না। বরং মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা করতে বলা হয়। নবান্নের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা হাওড়া সিটি পুলিশের এক আধিকারিকের থেকে এ কথা শোনার পরে সেতুর নীচেই দাঁড়িয়ে যান ওই তরুণীর পরিজনেরা। দাঁড় করিয়ে রাখা হয় শববাহী গাড়িটিও। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে ওই গাড়ি শিবপুর শ্মশানে নিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, রানিহাটি পাঁচলার বাসিন্দা শিপ্রা খাঁ-এর সঙ্গে আড়াই বছর আগে জগদীশপুর করালী পাড়ার বাসিন্দা রাজু কোলের বিয়ে হয়। বড়বাজারে দু’টি সোনার দোকান রয়েছে রাজুদের। বালি আনন্দনগরের একটি বেসরকারি বিএড কলেজে পড়াশোনা করছিলেন ২২ বছরের শিপ্রা। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে মাঝেমধ্যেই টাকার জন্য চাপ দিয়ে তাঁর উপর অত্যাচার চালাতো রাজু। এমনকী ওই পরিবারের অন্যেরাও শিপ্রার উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতেন বলে অভিযোগ।
রবিবার দুপুরে নিজের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় শিপ্রার দেহ মেলে। তাঁর এক আত্মীয় গৌতম হাজরা বলেন, ‘‘শিপ্রার দেহ কালো হয়ে গিয়েছে। ওঁকে মারধর করার পরে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের আসার আগেই দেহ সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। সব দোষীদের শাস্তি চাই।’’ ওই রাতেই লিলুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরে পুলিশ শিপ্রার স্বামী রাজু, শ্বশুর অশোক কোলেকে গ্রেফতার করেছে। তবে শাশুড়ি কাবেরীদেবী পলাতক। সোমবার বিকেলে হাওড়া মর্গ থেকে ওই তরুণীর মৃতদেহ পেয়ে পরিজনেরা সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ‘সুবিচার’ চাইতে নবান্ন যাবেন। শিপ্রার বাবা অষ্ট খাঁ বলেন, ‘‘মেয়ের খুনীদের ফাঁসি চাই। প্রত্যেককে শাস্তি দিতে হবে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এসেছি। উনিই আমার কষ্ট বুঝবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy