Advertisement
E-Paper

গেঞ্জি কারখানা ছাই, আগুন চটকলেও

হাওড়ার গঙ্গাতীর লাগোয়া ফোরশোর রোড। বৃহস্পতিবার মাত্র পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে এই রাস্তার সিকি মাইলের মধ্যে আগুন লাগল চটকল ও গেঞ্জি কারখানায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:২৬
অগ্নি-যুদ্ধ। বৃহস্পতিবার, গেঞ্জি কারখানায়। — দীপঙ্কর মজুমদার

অগ্নি-যুদ্ধ। বৃহস্পতিবার, গেঞ্জি কারখানায়। — দীপঙ্কর মজুমদার

হাওড়ার গঙ্গাতীর লাগোয়া ফোরশোর রোড। বৃহস্পতিবার মাত্র পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে এই রাস্তার সিকি মাইলের মধ্যে আগুন লাগল চটকল ও গেঞ্জি কারখানায়।

প্রথম ঘটনায় আগুনের ব্যাপকতা কম হলেও, দ্বিতীয় ঘটনায় আগুন এমনই বিধ্বংসী রূপ নেয় যে নবান্নের ১৪ তলায় নিজের ঘর থেকে আগুনের শিখা ও ধোঁয়া চোখে পড়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর নির্দেশেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান দমকলমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় ও হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী-সহ পুরসভার পদস্থ কর্তারা। আসেন দমকলের ডিজি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। দমকলের ১৮টি ইঞ্জিন প্রায় ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। দমকলের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই ওই আগুন লাগে।

দমকল সূত্রে খবর, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ প্রথম আগুন লাগে ফোরশোর রোডের ফোর্ট উইলিয়াম চটকলে পাট প্রক্রিয়াকরণ বিভাগের দোতলায় একটি তেলের ট্যাঙ্কারে। ওই সময়ে প্রথম শিফ‌্‌টের কর্মীরা কাজ করছিলেন। দমকলের ৬টি ইঞ্জিন প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। আগুন লাগার কারণ অবশ্য জানা যায়নি।

এর পরেই দুপুর দেড়টা নাগাদ আগুন লাগে গঙ্গাতীর লাগোয়া পোর্ট ট্রাস্টের জমিতে গড়ে ওঠা একটি গেঞ্জি কারখানায়। খবর পেয়ে প্রথমে দমকলের একটি ইঞ্জিন আসে। কিন্তু গোটা কারখানাটি গেঞ্জির কাপড় ও রাসায়নিক তেলে ঠাসা থাকায় আগুন ভয়াবহ আকার নেয়। প্রায় ৮ হাজার বর্গফুটের কারখানা চত্বর দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। কালো ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে যায়। নবান্ন থেকে ধোঁয়া দেখতে পেয়েই উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিন দুপুর পৌনে ২টোয় নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্ধারিত সময়ের কিছু পরে এসে তিনি বলেন, ‘‘ফোরশোর রোডে আগুন লেগেছিল। ১৪ তলা থেকে তা দেখতে পেয়ে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করি। দমকলমন্ত্রীকে খবর দিই। প্রশাসনকেও জানাই। তাই একটু দেরি হল।’’

দুপুরে ওই গেঞ্জি কারখানায় গিয়ে দেখা যায় তখনও আগুন জ্বলছে। আগুনের তাপে বেঁকে গিয়েছে টিন ও লোহার সব কাঠামো। আগুন ছড়ানোর ভয়ে আশপাশের গুদামের মালিকেরা মালপত্র বার করতে শুরু করেছেন। আগুন নেভাতে হাত লাগায় পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও।

স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ কাশিকার বলেন, ‘‘বছরের পর বছর বিনা ভাড়ায় বেআইনি ভাবে বন্দর-কর্তৃপক্ষের এই জমি ও গুদামে হোসিয়ারি জিনিসের ব্যবসা চলছে। দমকলের ছাড়পত্র নেই। নেই উপযুক্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও।’’

ছাড়পত্র বিনা এই ব্যবসা চলছিল, মেনে নিয়েছেন দমকলমন্ত্রীও। তিনি বলেন, ‘‘সঙ্কীর্ণ রাস্তায় যেখানে দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারে না, অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা নেই, সেখানে হোসিয়ারি ব্যবসা চলছিল কী ভাবে, সেটাই প্রশ্ন। এ রকম পরিবেশে ছাড়পত্র না দিতে নির্দেশ দিয়েছি অফিসারদের।’’

এ দিনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জমিটি বন্দর-কর্তৃপক্ষের হলেও জায়গাটি পুরসভা এলাকার মধ্যে। বেআইনি কিছু হলে পুরসভা ব্যবস্থা নেবে। এ দিন দমকল ঠিক সময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আরও ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারতো।’’ আগুন নিয়ে দমকলের রিপোর্ট পেলেই পুরসভা কড়া ব্যবস্থা নেবে বলে জানান মেয়র।

Fire textile factory
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy