Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সেলিমপুরে বস্তিতে আগুন, ব্যাহত ট্রেন চলাচলও

প্রাথমিক তদন্তের পরেও অবশ্য রাত পর্যন্ত আগুনের কারণ জানাতে পারেনি দমকল।

ধ্বংসস্তূপ: সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে বস্তির ঘর। শনিবার সন্ধ্যায়, সেলিমপুরে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

ধ্বংসস্তূপ: সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে বস্তির ঘর। শনিবার সন্ধ্যায়, সেলিমপুরে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০২:৩১
Share: Save:

আগুনে ঢাকুরিয়ার সেলিমপুরের একটি বস্তির একাংশ ভস্মীভূত হয়ে গেল। শনিবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় প্রাণহানির কোনও ঘটনা ঘটেনি। হাওয়ার কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বস্তির পাশে থাকা একটি বহুতলেও। আগুনে ওই চারতলা বাড়ির বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাটের ভিতরের জিনিসপত্রও পুড়ে যায়। তবে ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা সবাই নিরাপদেই নীচে নেমে আসেন। ওই আগুনের জেরে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ট্রেন চলাচল। রাত পৌনে দশটা নাগাদ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

প্রাথমিক তদন্তের পরেও অবশ্য রাত পর্যন্ত আগুনের কারণ জানাতে পারেনি দমকল। পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত পৌনে আটটার মধ্যে রেললাইনের ধারের ওই বস্তির একটি ঘরে আগুন দেখতে পান স্থানীয়েরা। এ দিন বিকেল থেকে বেশ জোরে হাওয়া বইছিল। তার জেরে আগুন ছড়িয়ে পড়তেও খুব বেশি সময় নেয়নি। কাঠ, বাঁশ, ত্রিপলের মতো দাহ্য জিনিসপত্র দিয়ে তৈরি বস্তির ভিতরের ঝুপড়ি ঘরগুলির বেশ কয়েকটিতে আগুন অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যদিও বস্তিবাসীরা জানিয়েছেন, আরও বহু ঘর পুড়ে যেতে পারত। কিন্তু আগুন যে পথে ছড়াচ্ছিল সে দিকেই একটি সিমেন্টের তৈরি মন্দির রয়েছে। সেই মন্দিরের দেওয়ালে আগুন ধরতে পারেনি। ফলে মন্দিরের পরের ঝুপড়িগুলিতে আগুন লাগেনি। বস্তিবাসীদের হিসেব অনুযায়ী, সাত থেকে আটটি ঝুপড়ি এ দিন পুড়ে যায়।

দমকলকর্মীরা জানান, তাঁদের তরফে সাতটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। দেড় ঘণ্টার চেষ্টার পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে তার মধ্যেও বস্তির বিভিন্ন ঘরে মজুত থাকা তিনটি গ্যাসের সিলিন্ডার আগুনে ফেটে যায়।

রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় বস্তির বাসিন্দাদের মুখে উৎকণ্ঠার ছাপ। একই রকম পরিস্থিতি বস্তির পাশে ১১২সি সেলিমপুর রোডের সেই চারতলা বাড়ির বাসিন্দাদেরও। তাঁরা জানান, হাওয়ার কারণে চারতলা সমান উচ্চতায় আগুন উঠে পড়ে। কয়েকটি ফ্ল্যাটের বিছানা, আলমারি, বিদ্যুতের তার পুড়ে যায়। ওই বহুতলের দোতলার একটি ফ্ল্যাটে একা থাকেন জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায় নামে এক বৃদ্ধা। তাঁকে ওই বাড়ির আবাসিকেরাই উদ্ধার করে নীচে নামিয়ে আনেন।

সেলিমপুরের ওই বস্তিতেই থাকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বিকাশ সর্দার। এ দিন পরীক্ষার পরে সে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যায়। বিকাশের কথায়, ‘‘অ্যাডমিট কার্ডটুকুই শুধু বেঁচে গেছে। পরীক্ষার সময়ে বইখাতা সব পুড়ে গেল। কী ভাবে পরের পরীক্ষাগুলো দেব কিছুই বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Dhakuria Fire Brigade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE