বর্ষা আসতেই মশাবাহিত রোগ নিয়ে চিন্তা বাড়ছে কলকাতা পুরসভার। গত বছর রাজ্যের অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি কলকাতায় ডেঙ্গির প্রকোপ ছিল চোখে পড়ার মতো। আক্রান্তের পাশাপাশি মৃতের সংখ্যাও রেকর্ড ছাড়িয়েছিল। এ বছর ডেঙ্গি মোকাবিলায় আগেভাগে সতর্ক হয়ে নগরপাল বিনীত গোয়েলকে চিঠি দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সম্প্রতি ওই চিঠিতে মেয়র জানিয়েছেন, শহরের একাধিক থানার সামনে রাখা পরিত্যক্ত গাড়ি দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। ওই গাড়ির মধ্যে জমা জলে ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশা ডিম পেড়ে বংশবিস্তার করে।
পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কেবল থানাই নয়, শহরের বিভিন্ন এলাকায় পরিত্যক্ত গাড়ি বছরের পর বছর পড়ে থাকায় সেগুলিও মশার বংশবিস্তারের জায়গা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রতিটি ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধিদের এ নিয়ে সচেতন হতে আবেদন জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শহরের অনেক জায়গায় ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ি দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে থাকায় সমস্যা বাড়ছে। থানার সামনে পড়ে থাকা গাড়ি নিয়ে অতীতেও একাধিক বার সমস্যা হয়েছিল। মেয়র আগেও নগরপালকে বিষয়টি নিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। পুলিশের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, থানার সামনে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত বেশির ভাগ গাড়ি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি থানার সামনে পড়ে থাকা গাড়িও দ্রুত সরিয়ে ফেলা হবে।
গত বছর উত্তর কলকাতার তুলনায় দক্ষিণ কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি ছিল। পরিত্যক্ত গাড়ির পাশাপাশি টায়ার, মাটির ভাঁড়, ডাবের খোলা— এই সব বিষয়ের উপরেও নজর দিচ্ছে পুরসভা। এক পুর স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, নাগরিকদের কাছে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে আবেদন জানানো হচ্ছে। কোনও ভাবেই কোথাও জল জমতে না দেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে তাঁদের। পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের কর্মীদেরও সচেতন করা হয়েছে। নিয়মিত আবর্জনা সাফাইয়ের জন্য ১০০ দিনের কাজের কর্মীদের ওয়ার্ডভিত্তিক মোতায়েন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক জানান, শহরে অনেক পরিত্যক্ত বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। ওই সমস্ত বাড়িও মশার বংশবৃদ্ধির জায়গা। সেখানে তাই মশার লার্ভা ধ্বংসকারী স্প্রে দেওয়া হচ্ছে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘গত বছরের কথা মাথায় রেখে এ বার পুরসভা জানুয়ারি থেকেই প্রতিটি ওয়ার্ডে মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে সচেতনতামূলক অভিযানে নেমেছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)